ভাবা যায়, ২৫ বছর ধরে এই নকলের খোঁজ!
“সার লা ডি লা চোয়েতে বি’অর (দ্য হান্ট ফর দ্য গোল্ডেন আউল)” বইটি লিখেছিলেন ম্যাক্স ভ্যালেন্টিন। ১৯৯৩ সালে বইটি প্রকাশের আগেই এই স্বর্ণ ও রূপা দিয়ে বানানো পেঁচাটিকে লুকিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। ফ্রান্সের মেইনল্যান্ডের কোনো এক স্থানে অতি গোপনে লুকিয়ে রাখা হয় এটা। তিনি ছাড়া আর কেউ জানতেন না এর খবর।এমন গুপ্তধন সন্ধানকে ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করে ব্রিটেনের বেস্ট সেলিং ‘মাস্কুয়েরেড’। সেখানে শিল্পী কিট উইলিয়ামস এক সিরিজ জটিল ছবি প্রকাশ করেন। সেখানে এই উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া স্বর্ণের সম্পদ খুঁজে বের করার সূত্র প্রকাশ করা হয়। আরো অনেক রহস্যময় সূত্রের সন্ধান থাকলেও মাস্কুয়েরেড একটি বিষয় নিশ্চিত করতে পারে যে, পেঁচাটি ফ্রান্সেই আছে। এরপরেই অনেক সন্ধানকারী এটি খুঁজতে থাকেন।
এক শতাব্দির সিকিভাগ পেরিয়ে যায়। বইয়ের ১১টি ধাঁধাঁকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার নকল স্বর্ণ পেঁচার সন্ধান মেলে। একে নিয়ে ইন্টারনেটে বিভিন্ন চ্যাট ফোরাম গড়ে ওঠে। বিভিন্ন দল বছর শেষে একসঙ্গে আলোচনাতেও বসতো। কিন্তু আসল পেঁচাটি রয়ে যায় আধারেই।
এটুসিও অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য পেয়েরে ব্লউচ বলেন, আমি এটা ১৯৯৩ সালের আগস্ট থেকে খুঁজে বেড়াচ্ছি। একে নিয়ে বহু পরিকল্পনা করেছি। বইটি প্রকাশের তিন মাস পর আমরা সন্ধানের কাজটি শুরু করেছিলাম। কিন্তু বইয়ের দেওয়া সূত্রের খুব কমই বুঝতে পেরেছিলাম। যেসব সূত্র দেওয়া হয়েছে তার সমাধানে দরকার বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, কল্পনাশক্তি এবং কোড ভাঙার অভিজ্ঞতা।
যারা একে নিয়ে গবেষণা করছেন তারা বলছেন, ১১টি সূত্র ফ্রান্সের একটা শহরকেই নির্দেশ করছে বলে মনে হচ্ছে। আর সেখানে পৌঁছতে পারলেই ১২তম লুকানো সূত্রের সন্ধান মিলবে। এগুলোর সমাধান মিললেই পেঁচাটি খুঁজে পাওয়া যাবে। কিন্তু কোনভাবেই কোনো কিছু বের করে আনা যাচ্ছে না। পিয়েরে বলেন, পাজলগুলো বানানোর সময় ভ্যালেন্টাইন কেবল রেফারেন্স বই ব্যবহার করেছেন। কিন্তু ইন্টারনেটে এসব বিষয়ে এতটাই তথ্য ছড়ায় যে অনেক ক্ষেত্রে ভ্যালেন্টিন নিজেই এসব তথ্যে ঢুঁ মারতে পারতেন না।
ভ্যালেন্টিনের সহায়তা আশা করে লাভ নেই। তিনি আর বেঁচে নেই। তবে একটি গোপন খামে ভরে রেখেছেন যাবতীয় সূত্র। কিন্তু সেটাও এখন তার পরিবারের সম্পত্তি। আরেকটা সূত্র হলেন মিচেল বেকার। তিনি ওই বইয়ের ছবিগুলো এঁকেছিলেন। পেঁচার ছবিটিও এঁকেছেন তিনি। তবে যেটাকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে তা একটি নকল পেঁচা। আসলটি বানানো হয়েছে সোনা এবং রূপা দিয়ে। আসলটি ছিল বেকারের অধীনে। যিনি নকলটিকে খুঁজে পাবেন তিনিই আসলটির মালিক বনে যাবেন। কিন্তু বছর চারেক আগে সমালোচনা শুরু হয় যখন তিনি এটি বিক্রির পাঁয়তারা করেন। আদালত তার এই আপচেষ্টা রোধ করেন এবং ঘোষণা করে যে নকলটির সন্ধানকারীকেও আসলটি পুরস্কার হিসেবে দেয়া হবে। অনেকের ধারণা, নকলটিকে কখনোই পাওয়া যাবে না। হয়তো প্রথম থেকেই বিষয়টি গুজব