অ্যাজমাই মুটিয়ে দিচ্ছে ৮০ শতাংশ
কলকাতা টাইমস :
অ্যাজমা এমন এক রোগ যাকে একবার হাতের নাগালে পায়, তাকে আর কখনো ছাড়ে না। আজ পর্যন্ত এ রোগ নিরাময়ে বিশেষ কোনো ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। আবার গত কয়েক বছর ধরে অ্যাজমা ও দৈহিক স্থূলতার সংখ্যা বেড়েই চলছে। উচ্চবর্গের মানুষের মধ্যে এ রোগের প্রবণতা বেশি। তাই গবেষকেরা এ দুটির মধ্যে কোনো সর্ম্পক আছে কিনা, তা খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। যেসব মানুষ কায়িক শ্রমের চেয়ে মানসিক শ্রম বেশি করেন, তাদের ক্ষেত্রে দৈহিক স্থূলতা বৃদ্ধির প্রবণতা বেশি।
এছাড়াও রয়েছে নিয়ন্ত্রণহীন খাদ্যাভ্যাস। অন্যদিকে অ্যাজমা রোগীদের নিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, যারা বেশিরভাগ সময় ঘরের ভেতরে কাটান এবং এ কারণে ঘরের জীবাণু, পোষা প্রাণীর জীবাণু এবং ছত্রাকের সম্মুখীন হচ্ছেন বেশি। একই সঙ্গে আবার শারীরিক পরিশ্রমের অভাব। তবু এমন কিছু ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় পাওয়া গেছে, যেগুলো অ্যাজমা ও স্থূলতার আন্তঃসম্পর্কের দিকে ইঙ্গিত করে। তবে সবচেয়ে বেশি গবেষণা চলছে অ্যাজমা ও স্থূলতার মধ্যে কোনো জেনেটিক কারণ বা সংযোগ আছে কিনা। এক গবেষণায় জার্মান বিশেষজ্ঞরা
এ দুটির মধ্যে সম্পর্ক আছে বলে দাবি করেন। কিন্তু তারা এর মধ্যে কোনো সম্পর্ক খুঁজে পায়নি। তাদের মতে, অ্যাজমা ও স্থূলতার সম্পর্ক কোনো জেনেটিক নয় বরং শারীরিক। তারা আরো বলেন, স্থূল ব্যক্তির শারীরিক চাহিদা পূরণের জন্য ফুসফুসের অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। ফলে অ্যাজমার সূত্রপাত ঘটে। এ দুই বিষয়ের মধ্যে প্রধান সূত্র এটাই বলে মন্তব্য করেন তারা। স্থূলতার আরেকটি কারণ শারীরিক ব্যায়ামের অভাব।
অ্যাজমার উৎপত্তিতে এটিরও সংশ্রব রয়েছে। ব্যায়ামের সময় গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হয়। এতে শ্বাসতন্ত্রের গভীরতম অঙ্গগুলো প্রসারণ ও সঙ্কোচন হতে থাকে। ফলে অঙ্গগুলো শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং অ্যাজমা প্রতিরোধে সক্ষম হয়। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, যেগুলো স্থূলতা অ্যাজমা তৈরিতে ভূমিকা রাখে, সেগুলো পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। কখনো কখনো একটি ওপরটির প্রকোপ বাড়িয়ে দেয়।
শ্বাসকষ্টের কারণে শিশুরা বেশিরভাগ সময় ঘরে থাকে। তাদের শারীরিক ক্যালরি ঠিক পরিমাণের চেয়ে কম হয়। ফলে তাদের স্থূলতায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেসব কিশোর-কিশোরী স্থূল হয়, তারা হীনমন্যতায় বেশি ভোগে। তাদের আত্মবিশ্বাস কমে যায়। এসব হতাশার কারণে অ্যাজমার রোগী ওষুধ ব্যবহারে অনীহা প্রকাশ করে। ফলে অ্যাজমার প্রকোপ আরও বেড়ে যায়। অ্যাজমার জন্য রোগী ঘরে বন্দি হয়।
অর্থাৎ হাঁটাচলা ব্যায়াম ত্যাগ করতে হয়। এতে রোগী আরো মোটা হয়ে যায়। তবে এ সত্যটি মানতেই হবে যে, টেলিভিশন ও ভিডিও গেমস দেখার প্রবণতা স্থূলতা ও অ্যাজমা উভয় রোগের প্রকোপ বাড়িয়ে দেয়।