November 23, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

নৃশংস : এক হাতেই ৭ হাজার মানুষ মারেন তিনি

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

পৃথিবীতে এমন কিছু ঘটনা আছে যা শুনলে আপনার গায়ে কাঁটা দিতে বাধ্য। তেমনি এক হাড়কাঁপানো ঘটনা ঘটিয়েছেন একজন রাশিয়ান অফিসার। ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ভ্যাসিলি ব্লকিন নামের ওই রাশিয়ান অফিসার একাই হত্যা করেন ৭ হাজার মানুষ। তবে এ হত্যাযজ্ঞ অবশ্য একদিনে করেননি, তার সময় লেগেছিল ২৮ দিন। এটিই একক কোনো মানুষের পক্ষে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক হত্যার রেকর্ড।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, ১৮৮৫ সালে এক রাশিয়ান সম্ভ্রান্ত পরিবারে ব্লকিনের জন্ম। তার শৈশবের তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ভ্যাসিলি ব্লকিন নামের এ অফিসার মূলত ১৯১২ সালের প্রথম বিশ্বযুদ্ধ থেকেই এমন কর্মে লিপ্ত হন। এরপর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে এসে মানুষ হত্যার সেই ঘৃণ্য নেশা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

জানা গেছে, ভ্যাসিলি ব্লকিন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগেই তার নরপিশাচ রূপ দেখাতে শুরু করেন। তখনই তিনি ‘জারিস্ট আর্মিতে’ যোগ দেন। তার এ খুনে মেজাজের জন্য তার নাম হয়ে যায় ‘ব্ল্যাক ওয়ার্ক’। লৌহমানবখ্যাত নিষ্ঠুর শাসক জোসেফ স্টালিনই মূলত তাকে দিয়ে এসব নৃশংসতা করাত।

ভ্যাসিলি ব্লকিন একে একে রাশিয়ান সিক্রেট পুলিশ এনকেভিডির সব উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের হত্যা করে নিজেই ওই বাহিনীর প্রধান হন। পরে স্টালিনের নেতৃত্বে তিনি বেশ কিছু রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডেও অংশ নেন।

১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে জার্মানি রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশ পোল্যান্ড দখল করে। তখন রাশিয়া যুদ্ধে যোগ না দিলেও পিশাচ ভ্যাসিলি ব্লকিনের নেতৃত্বে রুশ সৈন্যরা পোল্যান্ড বর্ডারে প্রবেশ করে। এরপর সেখানে দেশটির ২০ হাজার সৈন্য গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারের পরই ভ্যাসিলি ব্লকিন তার আসল রূপ দেখাতে শুরু করেন। শুরু হয় ইতিহাসের অন্যতম ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞ; যার নাম দেয়া হয় ‘ক্যাটিন ম্যাসাকার’। জোসেফ স্টালিন ১৯৩৯ সালের ৫ মার্চ, গ্রেফতারকৃত পোলিশ সৈন্যদের মধ্যে শুধুমাত্র অফিসারদের হত্যার নির্দেশ দেয় ব্লকিনকে।

স্টালিনের নির্দেশের পর ১৯৩৯ সালের ৫ মার্চ থেকে পরের ২৮ দিনে ভ্যাসিলি ব্লকিন নিজেই হত্যা করে বন্দি থাকা ৭ হাজার পোলিশ অফিসারকে। এ হত্যাকাণ্ড চালাতে ব্লকিন একটি সাউন্ডপ্রুফ রুম তৈরি করেন। এরপর সেখানে প্রত্যেক রাতেই প্রায় ৩ শতাধিক পোলিশ অফিসারকে ডেকে নিয়ে হত্যা করতেন। হত্যার পর সেই মরদেহগুলো কোনো কিছু ছাড়াই গর্তে ফেলে দেওয়া হয়।

হত্যাযজ্ঞে ব্লকিন সবসময় ৭ দশমিক ৬৫ এমএম-এর ওয়াল্টার পিপিকে পিস্তল ব্যবহার করতেন। কেননা এ পিস্তলে ঝাঁকি হতো অনেক কম আর মিসফায়ার হওয়ার চান্সও ছিল কম। ১৯৪৩ সালে রুশ জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দিলে পোলিশ সৈন্যদের মুক্তি দেয়া হয়। তবে পোলিশ অফিসারদের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। যুদ্ধ শেষে স্টালিন ভ্যাসিলি ব্লকিনকে রুশ সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদক ভ্যালর অব অনার প্রদান করেন। নিষ্ঠুর শাসক স্টালিনের মৃত্যুর পর ১৯৫৫ সালে রহস্যজনকভাবে ইতিহাসের ঘৃণ্যতম হত্যাকারী ভ্যাসিলি ব্লকিনের মৃত্যু হয়।

Related Posts

Leave a Reply