November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular রোজনামচা শারীরিক

কবে মরবেন আগেই জানাবে চোখের এই পরীক্ষা

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

মৃত্যুর সম্ভাব্য সময়কাল আর কোন কোন রোগে (দুর্ঘটনায় আগেই না মারা গেলে) মৃত্যু ঘটতে পারে তা নাকি বলে দেবে চোখের রেটিনা পরীক্ষা। সাম্প্রতিক একটি ব্যতিক্রমধর্মী গবেষণার ফল সেকথাই বলছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা সাময়িকী ‘ব্রিটিশ জার্নাল অব অপথ্যালমোলজি’তে।

সংশ্লিষ্ট গবেষকরা বলেছেন, সব সমবয়সি মানুষের দেহকোষগুলোর ক্ষয় একই হারে হয় না।

কারও ক্ষেত্রে তা হয় দ্রুত হারে। কারও ক্ষেত্রে তা কম গতিতে। একারণেই বছরের হিসাবে মানুষের বয়সের সঙ্গে তার দেহকোষের আয়ুর (‘জৈবিক বয়স’) তফাত হয়।

নতুন গবেষণাটি বলছে, দেহকোষের ক্ষয়ের ছবিটা নিখুঁতভাবে অনেক আগেই ধরা পড়ে চোখের রেটিনায়। তাতেই আগেভাগে ধারণা করা সম্ভব কার আয়ু আর কত দিন। আর কী কী রোগেই বা মৃত্যু হতে পারে। রেটিনায় লুকিয়ে থাকা তথ্যকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ বা এআই) সাহায্যে বিশ্লেষণ করে মিলবে কোটি টাকা দামের সেই সওয়ালের জবাব।

বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, এই পদ্ধতি আগামী দিনে চিকিৎসকদের হাতে এক কার্যকর কৌশল তুলে দিতে পারে। কারণ, ভবিষ্যত অসুখবিসুখ বা মৃত্যুর পূর্বাভাসের জন্য এখন নিউরোইমেজিং, ডিএনএ মেথিলেশন ক্লক, ট্র্যান্সক্রিপটোম এজিং ক্লকের মতো যেসব পদ্ধতি চালু রয়েছে সেগুলো তত নিখুঁত নয়। অনেক বেশি ব্যয়সাপেক্ষ আর যন্ত্রণাদায়কও। কাজটা যদি রেটিনা পরীক্ষা করেই করা যায় তা হলে খরচ আর কষ্ট দুটোই কমবে। বিশেষ করে জীবনবিমা কম্পানিগুলোর সম্ভাব্য আয়ুর তথ্য জানা খুবই দরকার।

ব্রিটেনের প্রায় ৫০ হাজার মধ্যবয়সী ব্যক্তির ওপর পরীক্ষা চালিয়ে গবেষকরা দেখেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পদ্ধতির মাধ্যমে যদি বোঝা যায় কারও চোখের রেটিনার বয়স তার নিজের বয়সের চেয়ে অন্তত এক বছর বেশি, তা হলে বলে দেওয়া যাবে পরবর্তী ১১ বছরের মধ্যে যে কোনও কারণে তাঁর মৃত্যুর আশঙ্কা দুই শতাংশ বেড়ে গেছে। এরকম হলে ক্যানসার বা হৃদরোগ ছাড়া অন্য কোনও অসুখে পরের ১১ বছরে তাঁর মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়বে অন্তত তিন শতাংশ।

গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যালগরিদম অনুযায়ী এভাবে প্রায় ৫০ হাজার মধ্যবয়সী ব্যক্তির রেটিনা পরীক্ষা করে গবেষকরা যে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, তা মিলে গেছে এক দশকের মধ্যে প্রায় দুই হাজার লোকের মৃত্যুর মাধ্যমে। তাদের রেটিনার বয়স শারীরিক বয়সের চেয়ে এক বছর বেশি ছিল।
নিছক পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই গবেষণা চালানো হয়েছে। ঠিক রেটিনা দেখেই কেন মৃত্যুর পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হচ্ছে তার নিশ্চিত কারণ এখনও জানতে পারেননি গবেষকরা।

তবে গবেষণার ফলাফলে অন্তত এটুকু জানা গেছে যে, দেহের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহকোষের যেসব ক্ষয় হয় তাতে সবচেয়ে বেশি সংবেদনশীল রেটিনাই। রেটিনার কোষেই সেই ক্ষয়ক্ষতির ছাপ পড়ে সবচেয়ে বেশি আর সবার আগে। অর্থাৎ চোখের ভাষাতেই প্রথম ধরা পড়ে বার্ধক্যের আলামত। রেটিনার কলাগুলিতে থাকে স্নায়ুকোষ ও রক্তজালিকা। গবেষকদের ধারণা, রেটিনার কোষ কলাগুলোই সবচেয়ে আগে জানাতে পারে রক্তজালিকা আর মস্তিষ্কের অবস্থার খবর। এর আগের কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, রেটিনার ওপর জরিপ করে নানা ধরনের হৃদরোগ, কিডনির অসুখ ও বুড়িয়ে যাওয়ার কিছু লক্ষণের আভাস মিলতে পারে।

Related Posts

Leave a Reply