মরক্কোর মাটিতে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা দৃষ্টিনন্দন পানিতে ভাসমান এ মসজিদটির নাম গ্র্যান্ড মস্ক হাসান–২ বা দ্বিতীয় হাসান মসজিদ। একে ভাসমান মসজিদ বলার কারণ হচ্ছে, মসজিদটির তিন ভাগের এক ভাগ আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর অবস্থিত। দূরের কোনো জাহাজ থেকে দেখলে মনে হয়, ঢেউয়ের বুকে যেন মসজিদটি দুলছে আর মুসল্লিরা যেন নামাজ পড়ছেন পানির ওপর।
মহাসাগরে ভাসমান এ মসজিদটি মরক্কোসহ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় মসজিদ। ঝড়–বৃষ্টির সময় ছাড়া প্রাকৃতিক আলো ও মুক্তবাতাস প্রবেশ করায় মসজিদটির ছাদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যায় তিন মিনিট পরপর। ৩৩ ফুট উচ্চতার সামুদ্রিক ঢেউ সামলে নেওয়ার ব্যবস্থা আছে মসজিদটিতে। সমুদ্রের কোনো গর্জন শোনা যায় না মসজিদটির ভেতর থেকে।
২২.২৪ একর জায়গার ওপর অবস্থিত এ মসজিদের মূল ভবনের সঙ্গে আছে সভাকক্ষসহ লাইব্রেরি, কোরআন শিক্ষালয়, অজুখানা। আড়াই হাজার পিলারের ওপর স্থাপিত এ মসজিদের ভেতরের পুরোটায়ই টাইলস বসানো। মসজিদ এলাকার আশপাশ সাজানো হয়েছে ১২৪টি ঝরনা ও ৫০টি ক্রিস্টালের ঝাড়বাতি দিয়ে। শুধু তা–ই নয়, কোথাও কোথাও এসব মোড়ানো হয়েছে স্বর্ণের পাত দিয়ে। মসজিদটির মেঝে থেকে ছাদের উচ্চতা ৬৫ মিটার। মেহরাবের উচ্চতা দোতলা ভবনের সমান। আর মিনারের উচ্চতা ২১০ মিটার। ৬০ তলা ভবনের সমান এ মিনারের ওপর রয়েছে লেজার রশ্মি, যা নাবিকদের দেখিয়ে দেয় পবিত্র কাবা শরিফের পথ। ৩০ কিলোমিটার দূর থেকেও স্পষ্ট দেখা যায় এই লেজার রশ্মি। বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মিনার এটি।
মরক্কোর বাদশাহ দ্বিতীয় হাসান মসজিদটি তৈরি করেছেন। এটি নির্মাণে কাজ করেছেন ফরাসি কম্পানি বয়গিসের প্রকৌশলীরা। আর নকশা করেছেন ফরাসি স্থপতি মিশেল পিনচিউ।