যত মাখন তত ডায়াবেটিসের গ্রাস
কলকাতা টাইমস :
একবার চোখ বন্ধ করে ভাবুন তো, গরম গরম ভাতে অল্প করে মাখন মিশিয়ে বেগুন ভাজার সঙ্গে খাচ্ছেন, অথবা রবিবাসরীয় ব্রেকফাস্টের মেনু আছে মাখন মাখানো আলুর পরটা আর ঠান্ডা ঠক দই। উফফ স্বাদে-আল্লাদে একেবারে টগমগে অবস্থা, কি তাই তো! এমন খাবার যে কোনও ভজনরসিক বাঙালির সামনে পরবেশন করলে জিভে জল আসছে তো বাধ্য়! কিন্তু আপনাদের কি জানা আছে, একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে মাত্রাতিরিক্ত মাখন খেলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
আর গত কয়েক বছরে আমাদের দেশে যে হারে ডায়াবেটিকদের সংখ্যা বাড়ছে তাতে এখন থেকেই সাবধনা না হলে কিন্তু বিপদ! বিশেষত বাচ্চাদের তো একেবারেই মাখন খাওয়ানো চলবে না। প্রয়োজনে এই বিষয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরমার্শ করে নিতে পারেন। সম্প্রতি হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্য়ালয়ের একদল গবেষক একটি রিসার্চ পেপার পাবলিশ করেছেন। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিদিন যদি কেউ ১২ গ্রাম করে মাখন খান, তাহলে তার ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায়। প্রসঙ্গত, প্রায় ৩৩৪৯ জনের উপর, চার বছর ধরে চালানো হয়েছিল এই গবেষণাটি।
আসলে মাখন তৈরিতে স্যাচুরেটেড এবং অ্যানিমেল ফ্যাট ব্য়বহার করা হয়, যাতে স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা খুব বেশি থাকে। আর এই দুটি উপাদানই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায়। শুধু তাই নয়, শরীরে স্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ এবং হার্ট ডিজিজের মতো মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পথও প্রশস্ত করে।
মাখন ছেড়ে ঘি খান। ঘি শরীরের গঠনে নানা ভাবে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে প্রতিদিনের ডায়াটে রাখুন সবুজ শাক-সবজি এবং ফলকে। যত বেশি করে প্রাকৃতিক জিনিস খাবেন, তত রোগ দূরে থাকবে। কিন্তু শরীরের গঠনে প্রোটিন তো দরকার? একদম ঠিক বলেছিল। কিন্তু তাই বলে রেড মিট খাওয়া একেবারেই চলবে না। পরিবর্তে, চিকেন, মাছ, দুধ, ডিম খেতে পারেন। এক কথায় মাছে-ভাতে বাঙালি যদি মাছ আর সবজিতে ফিরে আসেন, তাহলে কোনও রোগই যে এই ভজনরসিক জাতিটিকে ছুতে পারবে না, সে কথা হলফ করে বলতে পারি। তাই এখনই সিদ্ধান্ত নিন, জিভের কথা শুনবেন না শরীরের?