১ ডলারের সফল ব্যাংক ডাকাতি লক্ষ্য জেলের চিকিৎসা
জেমস ভেরন নামে ওই ব্যক্তি আমেরিকার উত্তর ক্যারোলিনার গ্যাস্টোনিয়ার বাসিন্দা। টানা ১৭ বছর একটি বেসরকারি কোমল পানীয় সংস্থার ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করার পর নিজের কাজ হারান। পাশাপাশি হারান নিজের হেলথ ইন্সুরেন্সও।
দিন দিন জেমসের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে তিনি নিজের হেলথ ইন্সুরেন্স নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন। তাঁর কাছে ইন্সুরেন্স রিনুয়ালের টাকা ছিল না। এ দিকে তাঁর বাতের ব্যথাসহ অন্যান্য অসুখ বাড়ছিল। তাঁর হাঁটতেও সমস্যা দেখা দিয়েছিল। বুকেও ব্যথা শুরু হয়েছিল জেমসের।
এর পর জীবনের চরম সিদ্ধান্ত নেন জেমস। ঠিক করেন ব্যাঙ্ক ডাকাতি করবেন। ২০১১ সালের ৯ জুন নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটি গাড়িতে উঠে নিকটবর্তী একটি ব্যাঙ্কে যান জেমস।
তবে ডাকাতির জন্য গেলেও তাঁর সঙ্গে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ছিল না। ব্যাঙ্কে প্রবেশ করতেই তিনি একটি চিরকুট ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের হাতে ধরিয়ে দেন। তাতে লেখা ছিল, আমি ব্যাঙ্ক ডাকাতি করতে এসেছি। আমাকে শুধু এক ডলার দিন।
ম্যানেজারের কাছে এক ডলার নিয়ে চুপ করে ব্যাঙ্কের এক কোনায় বসেন থাকেন। ব্যাঙ্কের এক কর্মীকে তিনি বলেন, আমি এই এক কোণে চুপ করে বসে থাকব এবং পুলিশ আসা অবধি অপেক্ষা করব।
ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের চিঠি লিখে জানান, আপনারা যখন এই চিঠি পাবেন, ততক্ষণে আমার ব্যাঙ্ক ডাকাতি হয়ে যাবে। তবে আমি মাত্র এক ডলারের জন্য এই ডাকাতি করতে যাচ্ছি। আমার মানসিক পরিস্থিতি একদম ঠিক আছে। কিন্তু আমার শারীরিক অবস্থা ঠিক নেই।
পরে তাঁকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে জেমসকে আদালতে হাজির করানো হলে, বিচারক তাঁর কর্মকাণ্ডকে ডাকাতি বলে মানতে রাজি হননি। অন্য ব্যক্তির কাছে থেকে এক ডলার চুরির অপরাধে তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু মাত্র এক ডলারের জন্য ডাকাতি করতে ওই ব্যক্তি কেন গিয়েছিলেন, তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন ওঠে। ওই সময়ে আমেরিকার এক ডলারে তাঁর কোনো চিকিত্সা হতো না।
তিনি নিজেই স্থানীয় এক সাংবাদিককে বলেছেন, তাঁর প্রধান লক্ষ্য ডাকাতি ছিল না। জেল খাটার জন্যই তিনি এই কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন।
আমেরিকার আইন অনুযায়ী কোনো কয়েদি যদি অসুস্থ হন, তাহলে তাঁর সমস্ত চিকিত্সার খরচ কারাগার কর্তৃপক্ষের। তাই নিজের চিকিত্সার খরচ জোগাতে তিনি নিজেই জেল খাটার সিদ্ধান্ত নেন।
নিজের উদ্দেশে সফলও হন জেমস। জেলে ঢোকার পরে তাঁর জন্য চিকিৎসার যাবতীয় খরচ-সহ নার্স এবং ডাক্তারের ব্যবস্থা করেন কারাগার কর্তৃপক্ষ।