শুধুমাত্র e বা i জানিয়ে দেবে ভবিষ্যতে কিসে ভুগবেন !
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
কথাটা শুনে বিশ্বাস করতে একটু কষ্ট হচ্ছে, তাই তো? কিন্তু বাস্তবিকই এমনটা সম্ভব। হাতের লেখা বিশ্লেষণ করে শরীরের অন্দরের নানা রহস্য বলে দেওয়ার এই পদ্ধতির জন্ম হয়েছিল অ্যারিস্টটলের সময়ে। তাহলে ভাবুন সেই কোন কাল থেকে রোগ নির্ণয়ে কাজে লাগানো হচ্ছে হাতের লেখাকে।
আজকাল তো আধুনিক বিজ্ঞানও এই পদ্ধতিটিকে মান্যতা দিয়েছে। তবে সব সময় আমাদের পেক্ষ নিজেদের লেখা বিশ্লেষণ করে রোগের সম্পর্কে জেনে যাওয়া সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে একজন হস্তরেখা বিশারদের সাহায্যের প্রয়োজন পরে। কীভাবে হাতের লেখার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় সম্ভব হয়? আসলে আমরা যখন কিছু লিখি, তখন তা আমাদের ভাবনা বা কনসিয়াস মাইন্ড থেকে জন্ম নেয়। কিন্তু হাতের লেখা কেমন হবে, তা অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রিত হয় আনকনসিয়াস মাইন্ড বা অবচেতন মন দ্বারা। তাই তো একথা বলতেই হয় যে হতের লেখার জন্ম হয় মস্তিষ্কের অন্দরে, আর হাত সেই সৃষ্টিকে কাগজে তুলে ধরে। আসলে মস্তিষ্ক থেকে তৈরি নার্ভ ইম্পালস সারা শরীর ঘুরে হাত এসে পৌঁছানো মাত্র আমরা লেখা শুরু করি।
অর্থাৎ ব্রেনই আমাদের হাতের লেখাকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। প্রসঙ্গত, একথা তো কারও অজানা নেই যে আমাদের শরীরের সব কিছুই মস্তিষ্কের নির্দেশে ঘটছে। আর মস্তিষ্ক তার অন্দরে স্টোর করে রাখা সব তথ্যই শরীরের প্রতিটি অংশে, প্রতিনিয়ত ছড়িয়ে দিচ্ছে। যার প্রভাব পরছে আমাদের লেখার উপরেও। তাই তো শরীরের অন্দরে কোনও অসুখ বাসা বাঁধা মাত্র সেই খবর মস্তিষ্কের কাছে পৌঁছে যায়, আর মস্তিষ্ক সেই মতো হাতের লেখাকে প্রভাবিত করে থাকে।
হাতের লেখা বিশ্লেষণ করার সময় কী কী লক্ষ করা হয়: এক্ষেত্রে প্রথমেই অক্ষরের বিন্যাসের উপর নজর দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে কতটা চেপে লেখা হয়েছে, বাক্য়টা সোজা আছে না নিচের দিকে নেমে গেছে, অক্ষরের মাপ, অক্ষরগুলি গোটা গোটা করে লেখা হয়েছে না পেঁচিয়ে, যুক্তাক্ষরগুলি কেমনভাবে লেখা হয়েছে এমন অনেক বিষয বিশ্লেষণ করার পরেই একজন গ্রাফোলজিস্ট নিজের মতামত দেন। এবার এই প্রবন্ধে হাতের লেখার মাধ্যমে কীভাবে রোগ নির্ণয় করা যায়, সে সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
১. ট্রেমর: এক সময় অপনার হাতে লেখা খুব ভাল ছিল। কিন্তু আজকাল লিখতে গেলেই হাত কাঁপে। সেই সঙ্গে অক্ষরগুলি কেমন যেন বেঁকে যায়। বাক্য়গুলিও সোজা লাইনে থাকে না। এমন ঘটনা যদি আপনার সাথেও ঘটে থাকে তাহলে বুঝতে হবে আপনি মাত্রতিরিক্ত স্ট্রেস বা এসেনশিয়াল ট্রেমরের মতো রোগে ভুগছেন। কারণ এমন ক্ষেত্রেই হাতের লেখার ধরণ এইভাবে বদলে যায়। প্রসঙ্গত, লেখার অভ্যাস ছেড়ে দিলে বা কম্পিউটারে লেখালেখি করলেও হাতের লেখায় এমন পরির্বতন দেখা দিতে পারে। তাই এমনটা হলে একজন দক্ষ গ্রাফোলজিস্টের পরামর্শ নিয়ে জেনে নেবেন বাস্তবিকই আপনি এই সব রোগে ভুগছেন কিনা।
২. উচ্চ রক্তচাপ: একেবারেই ঠিক শুনেছেন। রক্তচাপ স্বাভাবিক রয়েছে কীনা তা হাতের লেখা বিশ্লেষণ করে বলে দেওয়া সম্ভব। কীভাবে? একটা বাক্য় লেখার পর যদি দেখেন প্রথমের দিকে যে চাপ প্রয়োগ করে লেখা হয়েছে, সেই একই চাপ দিয়ে বাক্য়ের শেষাংশটি লেখা হয় হয়নি। শেষের দিকে আরও বেশি চাপ প্রয়োগ করা হয়েছে, তাহলে বুঝবেন আপনার রক্তচাপ স্বাভাবিক নেই।
৩. অ্যালঝাইমারস: এই রোগে আক্রান্ত হলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যেতে শুরু করে। এক্ষেত্রে ব্রেন নার্ভ যত শুকতে থাকে, তত হাতের লেখা অবিন্যস্ত এবং খারাপ হয়ে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে লিখতেও সময় লেগে যায়া। নিশ্চয় ভাবছেন, এমনটা আবার হয় নাকি! মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগনের হাতের লেখা অ্যালঝাইমার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে যেমন ছিল, তা এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে একেবারে বদলে গিয়েছিল। তাই রোগের সঙ্গে সঙ্গে হাতের লেখা যে বদলে যায় না, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
৪. ডিপ্রেশন: এমন ধরনের মানসিক রোগ হলে হাতের লেখায় মারাত্মক পরিবর্তন চোখে পারে। এক্ষেত্রে অক্ষরের ঢাল একই লেখার মধ্যে ক্রমাগত বদলে যেতে শুরু করে। ধরা যাক এক জায়গায় “ক” অক্ষরটা যকটা বাঁদিকে হেলিয়ে লেখা হয়েছে, পরে সেই ঢাল আরও বেড়ে যায়। প্রসঙ্গত, যারা সাইন করার সময় খুব পেঁচিয়ে নিজের নাম লেখেন, তারা একেবারেই আত্মবিশ্বাসী হন না, এমনটাই মনে করেন গ্রাফোলজিস্টরা।
৫. একাকিত্বে ভুগলে: লিখতে লিখতে যদি শেষের অক্ষরটি বেঁকে যেতে হতে শুরু করে তাহলে বুঝবেন আপনি সবার খেয়াল রাখতে রাখতে ক্লান্ত হয়ে পরেছেন, এবার চাইছেন কেউ আপনার খেয়াল রাখুক। অনেক সময় একাকিত্বে ভুগলেও হাতের লেখার ধরণ এমন হয়ে যায়।
৬. শরীর ভিতর থেকে ভাঙতে শুরু করলে: ছোট হাতের ইংরেজির “ডি” লেখার সময় কি উপরের ফাঁকটা বেশি হয়ে যায়। তাহলে এখনই নিজের শরীর নিয়ে সাবধান হন। কারণ লেখার ধরণ এমন হয়ে গেলে বুঝতে হবে আপনি ভেতর থেকে অসুস্থ হয়ে পরছেন। প্রসঙ্গত, যারা নিজেদের সব সময় কঠিন নিয়মের মধ্যে বেঁধে রাখেন বা নিজের সঙ্গে কখনও ভাল ব্যবহার করেন না, তাদের হাতের লেখাও অনেক সময় এমন হয়ে যায়।
হাতের লেখার মাধ্যমে কারও চরিত্র সম্পর্কে যে যে তথ্য পাওয়া যায়:
১. যারা ছুব ছোট ছোট করে লেখেন, তারা সাধারণ খুব লাজুক এবং শিক্ষিত হন। অন্যদিকে যারা বড় করে অক্ষর লেখেন তারা সাধারণত খুব মিশুকে হয়ে থাকেন।
২. যারা দুটি শব্দের মধ্য়ে খুব ফাঁক রাখেন তারা মূলত স্বাধীনচেতা হন।
৩. ধরুন কেউ “e” শব্দটা লিখেছে। যদি দেখা যায় e-এর মাথায় যে ফাঁক রয়েছে তা খুব বেশি, তাহলে বুঝতে হবে ওই ব্যক্তি মানসিকভাবে খুব চাঙ্গা রয়েছে। অন্যদিকে যদি দেখেন এই ফাঁক খুব কম, তাহলে জানবেন, যে এই ভাবে অক্ষরটি লিখেছেন তিনি মারাত্মক মানসিক চাপে রয়েছেন।
৪. “i” লেখার সময় উপরের পুটকিটা কি অনেক উপরে লেখেন, তাহলে বলতে হয় আপনি খুব ভাবুক। শুধু তাই অপনি খোলা চোখে স্বপ্ন দেখতে খুব ভালবাসেন। অপরদিকে যারা পুটকিটা খুব কাছাকাছি দেন তারা প্ল্যানার হন। অর্থাৎ এমন মানুষেরা তাদের জীবনের সব সিদ্ধান্ত খুব ভেবে চিন্তে নিয়ে থাকেন। এমন হাজারো বিষয় সম্পর্কে আপনি জানতে পরাবেন নিজের হাতের লেখা বিশ্লেষণ করে। তাহলে আর অপেক্ষা কেন আজই একজল দক্ষ গ্রাফোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করে জেনে নিন নিজের শরীর এবং মন সম্পর্কিত নানা অজানা বিষয় সম্পর্কে।