September 29, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

জানেন কি হাই তোলায় বিঘ্ন ঘটালে মস্তিষ্কের কি হাল হয় ?

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

যেই না উঠল, অমনি বাকিরা ভেবে ফেলল এ ব্যটা ক্লান্ত, নয়তো সারা রাত জেগে গার্ল ফ্রেন্ডের সঙ্গে গপ্পো মেরে এখন কাজ করতে এসেছে, তাই এমন ঘন ঘন হলুম হালুম শব্দে হাই তুলছে। কিন্তু মজার বিষয় কি জানেন হাই তোলার সঙ্গে ক্লান্তি বা শরীরের খারাপের কোনও সম্পর্কই নেই।

এমনকী হাই তোলা শরীরের পক্ষে খারাপ- এই ধরণার মধ্যেও কোনও সত্যতা নেই। তাহলে এখন প্রশ্ন, “আমরা হাই কেন তুলি?” এই উত্তরটা জানার পর হাই তোলা নিয়ে আপনার ধারণাটাই বদলে যাবে।

হাই ওঠা মানে ঘুম পাওয়া নয়: সেই আদি কাল থেকে একথা আমার বিশ্বাস করে আসছি যে হাই ওঠা মানেই শরীর আমাদের সিগনাল দিচ্ছে যে ঘুমানোর সময় চলে এসেছে। কিন্তু এই ধরণা একেবারেই ঠিক নয়। কারণ চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে যখন আমরা হাই তুলি তখন মস্তিষ্ক একবার রিস্টার্ট করে নেয় নিজের সার্বিক প্রক্রিয়াকে। ফলে ব্রেনের কাজ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই সহজভাবে বললে হাই ওঠা মানে ক্লান্তি নয়, বরং উল্টোটা। হাই তোলার পর মস্তিষ্ক এতটাই কর্মক্ষম হয়ে যায় যে দ্বিগুন কাজ করার ক্ষমতা চলে আসে তার।

শরীর বিজ্ঞান ও হাই তোলা: হাই তোলাকে আমরা হালকা চালে নিলেও আদতে কিন্তু বিষয়টা অতটা সহজ নয়। যখনই আমরা হাই তুলি তখন বিপুল পরিমাণ অক্সিজেন আমাদের মুখ গহ্বরের মধ্যে দিয়ে প্রবেশ করে ইয়ারড্রামসকে প্রসারিত করে। তারপর হাওয়টা বেরিয়ে যায়। প্রসঙ্গত, কিছু কিছু সময় কাউকে হাই তুলতে দেখে রিফ্লেক্সে আমাদেরও হাই উঠে যায়। তবে বেশিরভাগ সময়ই শরীর তার প্রয়োজন অনুসারে বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

হাই তুললে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: খুব মন দিয়ে কাজ করতে করতে মাঝে মাঝে আমাদের হাই উঠতে শুরু করে। এমনটা কেন হয় জানেন? কারণ আপনি মন দিয়ে কাজ করলেও আপনার মস্তিষ্ক অল্পতেই হাঁপিয়ে যায়। তখন সে কাজ ছেড়ে এদিক ওদিকের ভাবনাকে গুরুত্ব দিতে শুরু করে। সেই সময় মস্তিষ্ককে পুনরায় মূল কাজে ফিরিয়ে আনতে শরীর একবার ব্রেনকে রিস্টার্ট করে। আর তখনই আমাদের হাই ওঠে। প্রসঙ্গত, একাধিক গবেষণায় একথাও প্রমাণিত হয়েছে যে আমাদের স্মৃতিশক্তির উন্নতিতেও হাই-এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাই এবার থেকে কাজ করতে করতে যখনই ক্লান্ত লাগবে তখনই নিজের থেকে কয়েকবার হাই তোলার চেষ্টা করবেন। এমনটা করলেই দেখবেন মনোযোগ ফিরে আসবে।

মস্তিষ্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে: কাজ করতে করতে যখন ব্রেন গরম হয়ে যায়, তখন তাকে ঠান্ডা করতে হাই উঠতে শুরু করে। সেই কারণেই তো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার সময় বেশি করে হাই ওঠে। তাই এবার থেকে কাজের ফাঁকে হাই উঠলে বসকে বোঝাবেন যে আপনি ভাল করে কাজ করছেন বলেই হাই উঠছে, ফাঁকি মারছেন বলে নয়! প্রসঙ্গত, হাই ওঠার সময় আমাদের মুখের পেশিগুলি সংকুচিত এবং প্রসারিত হতে থাকে। ফলে ব্রেনে রক্ত সরবরাহ বেড়ে গিয়ে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে।

শরীর পুনরায় চাঙ্গা হয়ে ওঠে: কম্পিউটার হ্যাং হয়ে গেলে কী করেন? “রিস্টার্ট” বাটানটা প্রেস করেন। তার পরই কম্পিউটার পুনরায় কাজ করা শুরু করে দেয়। একই রকম ভাবে হাই ওটার সময় আমাদের শরীরের কার্কেডিয়াম রিদম পুনরায় অ্যাকটিভেড হয়ে যায়। অর্থাৎ শরীর পুনরায় সচল হয়ে যায়।

হাই উঠলে মুডও ভাল হয়ে যায়: বিজ্ঞান বলে হাই ওঠার সময় আমাদের মস্তিষ্কে ডোপামাইন লেভেল বেড়ে যায়। ফলে অক্সিটোসিন নামে এক ধরনের কেমিক্যালের ক্ষরণ বেড়ে গিয়ে আমাদের মন-মেজাজ একেবারে চাঙ্গা হয়ে ওঠে। এবার বুঝতে পারছেন তো আপাত সামান্য় হাই তোলার সঙ্গে শরীরের কত রকমের কাজের যোগ রয়েছে। হাই কিন্তু বেজায় ছোঁয়াছে: লক্ষ করে দেখবেন কাউকে হাই তুলতে দেখলে পরক্ষণেই আমাদেরও হাই ঠতে শুরু করে দেয়। কেন এমনটা হয় জানেন? কাউকে হাই তুলতে দেখলেই আমাদের মস্তিষ্কে মিরার নিউরন কাজ করতে শুরু করে দেয়। অর্থাৎ আমার সামনের লোকটা যা করছে ঠিক হুবাহু তাই করতে ইচ্ছা করে। সেই কারণেই তো একজনের হাই উঠলে সামনে থাকা বাকি সবাই একে একে হাই তুলতে শুরু করে দেন।

Related Posts

Leave a Reply