এমন আলু খেলেই মৃত্যু নিশ্চিত!
আলু নিয়ে কতগুলি বিষয় জেনে নেওয়া আমাদের সকলেরই একান্ত প্রয়োজন। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ! আলুর চিপস হোক চাট, অথবা তরকারির অঙ্গ হিসেবে এই সবজটিকে ব্যবহারের আগে ভাল করে পরীক্ষা করে নিতে হবে আলুটা আদৌ খাওয়ার যোগ্য আছে কিনা। কারণ ভেতর থেকে খারাপ হতে থাকা আলু খেলে কিন্তু শরীর খারাপ নিশ্চত! আর অনেক ক্ষেত্রেই বাইরে থেকে আলুর এই নষ্ট হয়ে যাওয়াটা বোঝা সম্ভব হয় না। তাই তো এই প্রবন্ধে এমন কিছু টিপস পরিবেশন করা হল, যা পড়ার পর আপনার আর বুঝতে অসুবিধা হবে না, কোন আলু খেতে হবে, আর কোনটা নয়। তবে তার আগে আলু নিয়ে একটা ভুল ধরণার অবসান ঘটা একান্ত প্রয়োজন। কী ভুল ধারণার কথা বলছেন?
অনেকেই মনে করেন অলু খেলেই ওজন বেড়ে যায়। তাই তো মোটা ছেলে-মেয়েদের অনেকে “আলু” বলে খেপিয়েও থাকে। কিন্তু আপনারা জানলে অবাক হয়ে যাবেন যে, এই সবজিটি কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধি। অর্থাৎ এটি খেলে শরীরের অন্দরে এনার্জির ঘাটতি দূর হয়, মোটা হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই থাকে না। তাই তো ওজন বৃদ্ধির প্রসঙ্গ তুলে আলুকে অপমান করাটা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়।
প্রসঙ্গত, আলুকে দিয়ে বানানো সবজি বা আলুর তরকারি খেলে ওজন বাড়ে না ঠিকই। কিন্তু আলুর চিপস বা জাঙ্ক ফুডের অংশ হিসেবে ভাজা আলু বেশি করে খেলে কিন্তু ওজন বাড়বেই। তাই ওবেসিটি নিয়ে চিন্তায় থাকলে সাবধান! চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে যে খাবার বেশি সংখ্যক মানুষ খেয়ে থাকেন, সেই নিয়ে অতিরিক্ত সাবধান হওয়াটা জরুরি। কারণ একটু অসাবধানতার কারণে বড় কোনও শারীরিক ক্ষতি হয়ে যাওয়া আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই তো সুস্থ থাকতে এই প্রবন্ধে আলোচিত খারাপ আলু চেনার সহজ উপায়গুলি সম্পর্কে জেনে নিন। কেমন আলু খেলেই বিপদ! আলু যখন ধীরে ধীরে খারাপ হতে শুরু করে, তখন তার শরীরে সোলানাইন নামে এক ধরনের নিউরোটক্সিনের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা শরীরে বেশি মাত্রায় প্রবেশ করলে ডায়ারিয়া, বারংবার বমি হওয়া এবং ক্রনিক পেট খারাপের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
আলুর আকার চোট হয়ে গেলে সাবধান: আমরা প্রায় সবাই-ই এক লপ্তে কয়েক কেজি আলু কিনে এনে বাড়িতে স্টোর করে রাখি। বারে বারে বাজার যাওয়ার সময় এখন কার হাতেই বা আছে বলুন! কিন্তু সমস্যাটা হল বহু দিন পর্যন্ত আলু ঠিক মতো থাকতে পারে না। কিছু সময়ের পর থেকেই ধীরে ধীরে খারাপ হতে শুরু। যত দিন যেতে থাকে তত আকারে ছোট হতে শুরু করে খারাপ আলুগুলি। আর এমনটা হতে থাকলেই বুঝতে হবে যে তাতে টক্সিনের পরিমাণ বাড়ছে। আর যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে টক্সিক হয়ে যাওয়া আলু খেলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়। প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকদিন আগে কেনা আলুর উপরে যেন ভুলেও সূর্যের আলো না পরে। এমনটা হলে সোলানাইন-এর উৎপাদন আরও বেশি বেশি করে হবে। ফলে শরীরিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আরও বাড়বে।
আলুর গায়ে গ্যাঁজা উঠলে অথবা ছোপ ছোপ দাগ দেখা গেলে ভুলেও খাবেন না: একাধিক কেস স্টাডি করে জানা গেছে আলুর গায়ে ছোপ ছোপ দাগ বা দানা মতো বেরলে বেশিরভাগই বুঝে উঠতে পারেন না সেই আলু ব্যবহার করবেন, না ফেলে দেবেন। এখানেই শেষ নয়, সব থেকে ভয়ের বিষয় কী জানেন, একাধিক সমীক্ষায় দেখা গেছে বেশিরভাগই এমন আলু ব্যবহার করে থাকেন, যা আদৌ করা উচিত নয়। কারণ এমন ধরনের আলুতে সোলানিন এবং ক্য়াকোনিন নামে গ্লাইকোঅ্যালকেলাড পয়েজেন বা সহজ কথায় বিষ তৈরি হতে শুরু করে। ফলে এমন ধরনের আলু খেলে নার্ভাস সিস্টেম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সেই সঙ্গে আরও নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই এমন আলুগুলিকে চিহ্নিত করে এক্ষুনি ফেলে দিন।
সবুজ হতে শুরু করলে: আলুর শরীরে সোলানিনের মাত্রা বাড়তে থাকলে সেটি ধীরে দীরে সবুজ হতে শুরু করে দেয়। তাই তো আলুর শরীরে এমন পরিবর্তন চোখে পরলে সেটি তৎক্ষণাৎ ফেলে দিন। তবে যদি দেখেন পুরো আলুটা সবজু না হয়ে একটা অংশ হয়েছে, তাহলে সেই অংশটা কেটে ফেলে দিয়ে বাকি আলুটা নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতেই পারেন। তাতে শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না।