November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

মাত্র চারটে শব্দ ‘কোলাকুলি’, কি করেন জানেন?

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস : 
কোলাকুলি। মাত্র চারটে শব্দ। কিন্তু এর মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে অপরিসীম ক্ষমতা, যে শক্তিবলে শরীরের একাধিক সমস্যার নিরাময় সম্ভব। একেবারেই ঠিক শুনেছেন! মন ভাল করে দেওয়ার পাশাপাশি শরীরের দেখভালে কোলাকুলির গুরুত্বকে উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। কিন্তু কীভাবে এমনটা হয়ে থাকে? সে উত্তর জানতে যে চোখ রাখতে হবে বাকি প্রবন্ধে।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে কোলাকুলি করার সময় আমাদের শরীরের অন্দরে একাধিক পরিবর্তন হতে শুরু করে, যা ধীরে ধীরে একাধিক নানাবিধ রোগের প্রকোপকে কমিয়ে দিতে শুরু করে। তাই তো আজ থেকে শুধুমাত্র আর বিশেষ দিনে নয়, যখনই সুযোগ পাবেন, তখনই প্রিয়জনেদের বুকে টেনে নেবেন। পারলে প্রায় প্রতিদিনই কোলাকুলি করবেন। কারণ বিজ্ঞান বলছে দিনে কম করে ৮ বার কোলাকুলি করলে শরীরের উপকারে লাগে। এক্ষেত্রে যে যে সুফলগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি হল…
১. সম্পর্কের উন্নতি ঘটায়: কোলাকুলি করার সময় আমাদের মস্তিষ্কে অক্সিটসিন নামে এক হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই হরমোনটির মাত্রা যত বৃদ্ধি পেতে থাকে, তত আমাদের মন ভাল হতে শুরু করে। ফলে যার সঙ্গে কোলাকুলি করছেন, তার সঙ্গে আপনার সম্পর্কের উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতাও বৃদ্ধি পায়।
২. ক্লান্তি দূর হয়: একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে কোলাকুলির সময় একাধিক পেশীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেহের সচলতা বৃদ্ধি পায় এবং ক্লান্তি দূরে পালায়। তাই তো দিনের শেষে বাড়ি ফিরে হয় মা, নয়তো যে কোনও প্রিয় জনের সঙ্গে কোলাকুলি করতে ভুলবেন না। এমনটা করলে দেখবেন নিমেষে শরীর এবং মন চাঙ্গা হয়ে উঠবে।
৩. যন্ত্রণা কমে যায়: একেবারেই ঠিক শুনেছেন। কোলাকুলির সঙ্গে যন্ত্রণা উপশমের সরাসরি যোগ রয়েছে। আসলে এই বিশেষ সময়ে মস্তিষ্কে এন্ডোরফিন নামে একটি হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই হরমোনটি টিস্যুদের শক্তি এবং সচলতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে যন্ত্রণা কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ব্যথা সৃষ্টিকারী একাধিক উপাদানকে শরীরে থেকে বের করে দেওয়ার ক্ষেত্রেও এন্ডোরফিন হরমোন বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. মানসিক আবসাদ এবং নিউরোডিজেনারেটিভ ডিজিজের প্রকোপ হ্রাস পায়: গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে যে শরীরে ডোপামাইন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে মানসিক অবসাদ একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। সেই সঙ্গে পার্কিনসন সহ একাধিক ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। আর ডোপামাইন হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায় কোলাকুলি করার সময়। তাই তো যারা ইতিমধ্য়েই এমন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তারা সুযোগ পেলেই কোলাকুলি করা শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।
৫. মন খুশি খুশি হয়ে যাবে: দেহে সেরোটিনিন নামে একটি হরমনের ক্ষরণ যখন ঠিক মতো হতে পারে না, তখন মন মেজাজ খুব খিটখিটে হয়ে যায়। সেই সঙ্গে স্ট্রেস লেভেলও বাড়তে শুরু করে। তাই তো মনের স্বাস্থ্যকে ভাল রাখতে সকাল বিকাল কোলাকুলি করা উচিত। কারণ এমনটা করার সময় এই বিশেষ হরমোনটির ক্ষরণ চোখে পরার মতো বৃদ্ধি পায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মন অনন্দে ভরে ওঠে।
৬. নার্ভাস সিস্টেমের ভারসাম্য ঠিক থাকে: কোলাকুলি করার সময় আমাদের শরীরের একাধিক প্রেসার পয়েন্ট অ্যাকটিভ হয়ে যায়। সেই সময় ভেগাস নার্ভ মারফত এই বার্তা মস্তিষ্কে পৌঁছানো মাত্র ব্রেন সেলগুলির মধ্যে দ্রত গতীতে বার্তার আদান-প্রদান শুরু হয়ে যায়। ফলে একদিকে যেমন মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, তেমনি নার্ভাস সিস্টেমের মধ্যেকার ভারসাম্যও স্বাভাবিক হতে শুরু কর। প্রসঙ্গত, নার্ভাস সিস্টেম যত কর্মক্ষম থাকবে, তত নানাবিধ ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পাবে।
৭. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলিনার একদল গবেষক দীর্ঘ পরীক্ষার পর লক্ষ করেছিলেন যারা নিয়মিত কোলাকুলি করেন, তাদের হার্ট রেট মিনিটে ৫-এর কম থাকে। যেখানে বাকিদের হার্ট রেট থাকে প্রায় ১০ এর কাছাকাছি। আর একথা তো সকলেরই জানা আছে যে হার্ট রেট যত কম থাকবে, তত রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকবে। সেই সঙ্গে নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পাবে। এবার বুঝতে পারছেন তো ঈদ এবং বিজয়া দশমী ছাড়াও কোলাকুলি করা কতটা জরুরি।
৮. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়: প্রায় ৪০০ জনের উপর করা এক গবষণার পর দেখা গেছে যারা নিয়মিত কোলাকুলি করেন, তাদের সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবানা সাধারণ মানুষদের তুলনায় অনেক কমে যায়।
কেন এমনটা হয় জানেন?
কারণ কোলাকুলি করার সময় স্ট্রেস সেভেল কমতে শুরু করে। আর মানসিক চাপ যত কমে, তত শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে, ফলে স্বাভাবিকভাবেই সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।

Related Posts

Leave a Reply