November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

দিনে মাত্র ১-২ ঘন্টায় স্ক্রিনে দেখা উচিত শিশুদের, নচেৎ …

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস : 

জকাল নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির বেশির ভাগ পরিবারে শিশুদের হাতে এই যন্ত্র দিয়ে অভিভাবকরা নিজেদের কর্ম সম্পাদন করে থাকেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, শিশুকে খাওয়ানোর সময় ডিভাইসটি ব্যবহার করা হয়। এতে একসময় তাদের মধ্যে এমন অভ্যাসে পরিণত হয়, যেন এই যন্ত্র ছাড়া শিশুকে খাওয়ানো সম্ভবই না। এ ছাড়া অনেক দিন ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে তাদের কারো কারো মধ্যে স্ক্রিন ডিপেনডেন্সি ডিস-অর্ডারস (এসডিডি) হতে পারে।

স্ক্রিন ডিপেনডেন্সি ডিস-অর্ডারসে শিশুদের মধ্যে কিছু শারীরিক ও মানসিক সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। শারীরিক সমস্যাগুলো হলো—ঘুমের অসুবিধা, পিঠ বা কোমরে ব্যথা, মাথা ব্যথা, চোখের জ্যোতি কমে যাওয়া, ওজন বেড়ে যাওয়া, পুষ্টিহীনতা ইত্যাদি। শারীরিক অসুবিধা ছাড়াও কারো কারো মধ্যে ইমোশনাল উপসর্গ, যেমন—উদ্বিগ্নতা, অসততা, একাকিত্বতা, দোষী বোধ ইত্যাদি হতে পারে। তাদের মধ্যে বাইরে যাওয়ার প্রবণতা কমে যায় এবং দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে তাদের মধ্যে বিভিন্ন রকম মানসিক সমস্যা দেখা দেয়।

অধ্যাপক ডা. এরিখ সিগম্যান তাঁর গবেষণায় বলেছেন যে অনেক সময় হঠাৎ করে এই মোবাইল ডিভাইস তুলে নিলে তাদের মধ্যে উইথড্রয়াল সিম্পটমস আসতে পারে। ফলে তারা মোবাইল থেকে সহজেই বিরত থাকতে পারে না বা মোবাইল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে পারে না।

মোবাইল ফোন সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে দুই থেকে পাঁচ বছরের শিশুরা। একটি শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের উপযুক্ত সময় প্রথম পাঁচ বছর। মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশ হলো শিশুর ক্রমে ক্রমে এক থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে শিশুর কথা বলতে শেখা, হাঁটাচলা শেখা এবং স্বাভাবিক বুদ্ধির বিকাশ হওয়া। আর এই সময় শিশুর একদিকে দীর্ঘ সময়ে মোবাইল গেম খেলা, ইউটিউব দেখা; অন্যদিকে স্বাভাবিক উদ্দীপনামূলক খেলাধুলা না করায় শিশুর স্নায়বিক বিকাশ ভীষণভাবে ব্যাহত হয়। শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ নির্ভর করে পরিবেশ ও অন্য শিশুদের সঙ্গে শিশুর ভাবের আদান-প্রদানের ওপর। বলা হয়, শিশু শেখে দেখতে দেখতে এবং অন্যদের সঙ্গে খেলতে খেলতে।

অধিক সময় শিশু মোবাইল ডিভাইসের সংস্পর্শে থাকায় মা-বাবার সঙ্গে শিশুর সামাজিক যোগাযোগ এবং সমবয়সী শিশুর সঙ্গে খেলাধুলা-মেলামেশা একেবারেই কমে যায়। এ ক্ষেত্রে গবেষকরা শিশুর বিকাশের প্রারম্ভে অত্যধিক মোবাইল ব্যবহার শিশুর মস্তিষ্কের গঠনপ্রকৃতির ভিন্নতার কথাও উল্লেখ করেছেন।

বিজ্ঞানী ডি এস্কিসটাকিস বলেছেন, শিশু অবস্থায় অতিমাত্রায় মোবাইল ফোন এবং টিভি দেখা শিশুদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে অতিমাত্রায় চঞ্চলতা দেখা দিতে পারে। বিজ্ঞানী ডি এ থমসন বলেছেন, অতিমাত্রায় মোবাইল, টেলিভিশনে আসক্তি এবং ঘুমের সময় কমে যাওয়া শিশুদের বিকাশের বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস ও টেলিভিশন কমিটি শিশুদের ইলেকট্রনিক মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্বসম্মতিক্রমে নিম্নরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

♦ দুই থেকে পাঁচ বছর বয়সের শিশুরা সারা দিনে এক-দুই ঘণ্টা স্ক্রিন দেখতে পারবে, কিন্তু সেটি অবশ্যই মানসম্মত অনুষ্ঠান হতে হবে।

♦  দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের হাতে মোবাইল দেওয়া অনুৎসাহিত করা হয়েছে।

♦  শিশুদের বেডরুম থেকে টেলিভিশন সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।

তারা শিশু বিকাশের ক্ষেত্রে কিছু উদ্দীপনাকে উৎসাহ প্রদান করছেন, যেমন—শিশুর সঙ্গে কথা বলা, গল্প করা, ছড়া বলা, গান করা ইত্যাদি।

Related Posts

Leave a Reply