পরিজনদের খোঁজে দিনভর ছাই-মাটি খুঁড়ে চলেছেন এক মহিলা !
কলকাতা টাইমসঃ
এগারো-বারো দিন পেরিয়েছে, গুয়াতেমালার সান মিগুয়েল লস সোটস গ্রামটিকে গাঢ় কালো ছাই দিয়ে ঢেকে দিয়েছে এক রাক্ষসী আগ্নেয়গিরি। সেখানকার ফুয়েগো আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত গ্রাস করেছে গোটা গ্রামটিকেই। সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে একাকী এক মহিলা এখনও ছাই-মাটি ভেতরে খুঁজে চলেছেন স্বজনদের।
৪৮ বছর বয়সী উফেমিয়া গার্সিয়ার সব কেড়ে নিয়েছে ফুয়েগোর অগ্ন্যুৎপাত। তার পরিবারের সব মিলিয়ে ৫০ জন সদস্যকে হারিয়েছেন তিনি। চার্চে গিয়ে প্রার্থণা সেরে তিনি ফিরে আসেন বাড়ির কাছে। পুড়ে ধসে পড়া বাড়ি আর ছাইয়ের গভীরে চাপা পড়েছে তার কাছের মানুষগুলো। পেশায় ফল ব্যবসায়ী এইমহিলা ।
বাড়ি-স্বজন সব হারিয়েছেন তিনি। অন্যান্য বেঁচে যাওয়াদের সঙ্গে একটি স্কুলে থাকছেন। প্রতিদিন ভোর ৫টায় উঠে পড়েন তিনি। মাত্র দুটো কাপড় রয়েছে সঙ্গে। আগের দিনেরটা ধুয়ে অন্যটা পরে নেন। তারপর ছোটেন বাড়ির দিকে। ওখানেই জীবন্ত কবর হয়েছে তার পরিবারের বাকি সদস্যদের। সেখানেই দিনভর খুঁজতে থাকেন পরিজনদের। মা যে ঘরটাতে থাকতেন সেখানে একটি দাঁত আর দুটো হাড় পেয়েছেন শুধু। প্রতিদিন তিনি পাহাড়ের ঢালে কিছু সময় বসে থাকেন। একটি বুলডোজার ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করার কাজ করছে। ওটার অপেক্ষায় থাকেন তিনি।
ফুয়েগো গত ৪০ বছর ঘুমিয়ে ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই জুনের ৩ তারিখে জেগে ওঠে। ভেতর থেকে বের করে দেয় টন টন মাটি, ছাই আর বিশাল সব পাথরখণ্ড। গ্রামের শত শত বাড়ি এসবের নিচে চাপা পড়েছে। এখন পর্যন্ত ১১২ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ঘটনার পর গার্সিয়া ভেবেছিলেন তার সব সন্তান মারা গেছে। কিন্তু ছয় সন্তানের মধ্যে তিনজনকে ভিন্ন ভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে খুঁজে পেয়েছেন। তার নয় ভাইয়ের মধ্যে চারজন বেঁচে গেছেন। বাকিদের কোনো খবর নেই। খবর পেতে তিনি একাই মাটি খুঁড়ে যাচ্ছেন।