বৌদ্ধ দর্শন (ব্রহ্ম বিহার ও সমাধি ) ১০
রজত পাল
হিন্দু পুরাণ ও নানা বৌদ্ধ শাস্ত্রে বুদ্ধ বিষয়ক নানা তথ্য আছে । বর্তমানে গৌতম বুদ্ধের জন্ম 580 BC ধরা হলেও শক-জিছু-রোকু নামক জাপানি গ্রন্থ মতে উনি 1027 BC তে এবং এক চীনা গ্রন্থ মতে উনি 850 BC তে জন্ম গ্রহণ করেন ।
‘বোধ’ অর্থ জ্ঞান । যার বাহ্যিক বোধ জন্মায় তিনি হন বুদ্ধিমান । বোধ যদি আভ্যন্তরীন জ্ঞানের জন্ম দেয় তিনি হন বোধিসত্ত্ব । ইনিই চুড়ান্ত বোধ লাভ করলে হন বুদ্ধ ।
বৌদ্ধ শাস্ত্র মতে অনেক বুদ্ধ জন্মেছেন । ক্রুকছন্দ বুদ্ধ 3901 BC, কনকমুনি বুদ্ধ 2099 BC, কশ্যপ বুদ্ধ 1014 BC তে জন্মেছিলেন। গৌতম বুদ্ধের পরেও বুদ্ধ জন্মাবেন ।
( ব্রহ্ম বিহার ও সমাধি প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে, যোগ শাস্ত্রে ধরা হয় আত্মা বা ব্রহ্ম প্রাণ ও অপান বায়ু দ্বারা জীবদেহে প্রাণের সঞ্চার করেন । যদিও প্রাণ, অপান,উদান,ব্যান ইত্যাদি 5 প্রকার এবং আরো সূক্ষ্ম ভাবে মোট 49 প্রকার বায়ুর ভাগ আছে, তবুও এককথায় বলা যায় সবগুলোই মূল প্রাণ বায়ুরই অংশ। এর দ্বারাই জীবের শ্বাস প্রশ্বাস চলছে । যে শ্বাস প্রশ্বাস বাইরে গতিশীল তাকে বহিঃপ্রাণায়াম এবং যা শরীরের ভেতরে চলে তাকে অন্তঃপ্রাণায়াম বলে । বেদে দু প্রকার প্রাণের কথা আছে । গৌণপ্রাণ ও মুখ্যপ্রাণ । শ্বাস প্রশ্বাস কে গৌণপ্রাণ এবং আত্মা বা চৈতন্যকে মুখ্যপ্রাণ বলে ।
ছান্দোগ্য উপনিষদে প্রাণকে ব্রহ্ম বলে উপাসনার কথা আছে । এক্ষেত্রে মুখ্য ও গৌণ দুই প্রাণই ব্রহ্ম ।
আবার কেনোপনিষদ বলছে ‘স উ প্রাণস্য প্রাণ’, অর্থাৎ ব্রহ্ম প্রাণের প্রাণ। শ্বাস প্রশ্বাস ক্রিয়াকে প্রাণন ক্রিয়া বলে । এই ক্রিয়া আত্মা কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত । আত্মা আবার মূল শক্তি পরমাত্মা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত । এই আত্মা তথা পরমাত্মা তথা ব্রহ্ম তথা বিশ্ব-চেতন শক্তিকে অনুভব করাই ব্রহ্ম বিহার সাধনার অন্তর্গত বিষয় )।