November 22, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

চাকরি ছাড়ার এই ১০ কাজ করেছেন কি …

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

মাদের প্রায় সকলেই জানি, কোনো চাকরি ছেড়ে দিতে চাইলে তা ভালোয় ভালোয় করাটাই উত্তম কাজ। কিন্তু কীভাবে ভালোয় ভালোয় একটি চাকরি ছাড়তে হয় তা আমরা হয়ত সহজেই ভুলে যেতে পারি।

আপনি যখন আরো ভালো কোনো চাকরি পাওয়ার ফলে বর্তমান চাকরিটি ছেড়ে দিতে চাইছেন তখন হয়তো আপনি একটু অসতর্ক হয়ে পড়তে পারেন। এটি একটি উত্তেজনাকর মুহূর্ত। আর নতুন একটি ভালো সুযোগ পেয়ে আপনার বিচার-বিবেচনার শক্তি বা বুদ্ধিও লোপ পেতে পারে। আপনি হয়তো ভুলে যেতে পারেন যাদের সঙ্গে আপনি কাজ করেছেন তারা গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আপনি যেসব বলেছেন বা করেছেন সে সবই বেশি মনে রাখবেন। এর বেশি আগে বা বছরখানেক আগে আপনি কী করেছেন বা বলেছেন সে সবের তুলনায় চাকরি ছাড়ার কয়েক সপ্তাহ আগের কথা এবং কাজই সহকর্মীরা বেশি মনে রাখেন।

কোনো চাকরি ছাড়ার আগে কখনোই এই ১০ কাজ করবেন না :
১. অসুন্দর এবং অপেশাদার উপায়ে চাকরি ছাড়ার নোটিশ দেবেন না
আপনি চাকরি ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বর্তমান কর্মস্থলের প্রায় সকলেই আপনার প্রতি মনোযোগী হয়ে উঠবেন। অনেক সহকর্মীই আপনার উন্নতিতে খুশি হবেন। আবার অনেকে আপনার ব্যাপারে খুশি হলেও নিজেদের ব্যাপারে অখুশি হবেন। কারণ তারা এখনো একটি অসুখী কর্মপরিবেশে আটকে আছেন। অনেকে আবার আপনাকে জিজ্ঞেস করবেন, আপনার নতুন কর্মস্থলে আরো লোক নিয়োগ দেওয়া হবে কিনা?
কিন্তু বর্তমান কর্মস্থল ছাড়ার আগে সেখানকার কাউকে আপনার নতুন কর্মস্থলে নিয়োগের ব্যাপারে আশ্বাস দিতে পারবেন না। কারণ আপনি এখনো বর্তমান নিয়োগদাতার কাছ থেকে বেতন নিচ্ছেন। পুরনো কর্মস্থলে থাকা অবস্থাতেই সেখান থেকে নতুন কর্মস্থলের জন্য কর্মী সরবরাহে লিপ্ত হওয়া অনৈতিক কাজ।

২. নিজের ডেস্কটি অগোছালো অবস্থায় ফেলে যাবেন না
চাকরি ছাড়ার নোটিশ দেওয়ার পর আপনার প্রধান কাজে হবে, আপনার ডেস্ক এবং দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে গুছিয়ে রেখে যাওয়া। যদি সম্ভব হয় তাহলে তাহলে আপনি যেসব প্রকল্পে কাজ করছিলেন সে সবের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে একটি গুছানো প্রতিবেদন তৈরি করে রেখে যান। এতে আপনার জায়গায় নতুন যিনি কাজ করতে আসবেন তার পথচলা আরো সহজ হবে।
৩. চাকরি ছেড়ে দিয়ে আপনি সুখী তা বলবেন না
বর্তমান চাকরি ছেড়ে দিয়ে আপনি সুখী হলেও তা কারো সঙ্গে বলতে যাবেন না। যদিও বিষয়টি আপনার চোখে-মুখে ফুটে উঠবে। কারণ আপনার যে সহকর্মীরা বর্তমান চাকরিতে আটকে থেকে সুখী নন তারা বিষয়টি ভালোভাবে নেবেন না। তারচেয়ে বরং তাদেরকে বলুন, আপনি তাদের সহায়তা এবং সমর্থনের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ এবং তাদের কথা আপনার মনে থাকবে। লিঙ্কডইনেও তাদের কারো কারো সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন।
৪. কোনো প্রকল্প অসমাপ্ত অবস্থায় রেখে যাবেন না
আপনার হাতে থাকা কোনো প্রকল্পের কাজ যদি অসম্পূর্ণ থাকে তাহলে সে ব্যাপারে যথাযথভাবে সকল তথ্য জানিয়ে যাবেন। প্রকল্পটির বর্তমান অবস্থা এবং সেটি শেষ করতে হলে আরো কী কী করতে হবে সেসব তথ্য লিখিতভাবে আপনার বসকে জানিয়ে যাবেন।

৫. কম্পানি বা বসের ব্যাপারে বাজে কথা বলবেন না
যে কম্পানি ছেড়ে যাচ্ছেন সে কম্পানি বা আপনার সেখানকার বস সম্পর্কে কোনো বাজে কথা বলবেন না। এমনকি আপনার সহকর্মীরা যদি আপনাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেসও করে তাহলেও কিছু বলবেন না। কেউ হয়ত জিজ্ঞেস করতে পারে কম্পানি বা বসের সঙ্গে কোনো ঝগড়া বা দ্বিমতের কারণেই কি আপনি চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন? এ ধরনের প্রশ্নের উত্তরে শুধু বলুন, “আমি বর্তমান চাকরির চেয়ে ভালো একটি সুযোগ পেয়েছি যা আমি কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে চাই না।”

৬. আপনার নিজের নয় এমন কিছু নেবেন না
আপনার কম্পিউটারের কোন ফাইলটি আপনার আর কোনটি কম্পানির তা নিশ্চয় আপনার জানা আছে। কোনো খদ্দের, বিক্রেতা বা কম্পানির আভ্যন্তরীণ কোনো তথ্য আপনার সঙ্গে নেবেন না। তবে কম্পানির মেশিন থেকে আপনার ব্যক্তিগত ফাইল এবং ছবি সরিয়ে ফেলুন। বসের অনুমতি ছাড়া কম্পানির খদ্দেরদেরকেও আপনার চাকরি ছাড়ার বিষয়টি জানাতে যাবেন না। কারণ তারা মূলত কম্পানিরই খদ্দের; আপনার ব্যক্তিগত সম্পর্ক নয়। তবে কম্পানি ছাড়ার পর আপনি চাইলে সেখানকার কোনো খদ্দেরের সঙ্গে অবশ্যই যোগাযোগ রাখতে পারেন।
৭. চাকরি ছাড়ার খবরটি বিশৃঙ্খলভাবে জানাবেন না
আপনার বস হয়ত আপনার চাকরি ছাড়ার বিষয়টি নির্দিষ্ট নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে সকলকে জানাতে চাইতে পারেন। বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানেই কারো চাকরি ছাড়ার বিষয়টি যেভাবে সকলকে জানানো হয়:
১. প্রথমত, আপনি আপনার বসকে নোটিশ দিলেন।
২. এরপর আপনার বস বিষয়টি কম্পানির মানবসম্পদ বিভাগ এবং তার বসদের জানাবেন।
২. তৃতীয়ত, আপনার বস আপনি যে বিভাগে কাজ করতেন সে বিভাগের স্টাফদেরকে মিটিংয়ে ডেকে বিষয়টি জানাবেন। অথবা গ্রুপ ই-মেইলে সকলকে মেইল করে জানাবেন। আপনি নিজে থেকে কখনও তা বলতে যাবেন না।
৪. এরপর আপনার বস হয়ত কম্পানির খদ্দেরদেরকে এবং সংশ্লিষ্ট অন্যদেরকেও বিষয়টি ই-মেইল করে বা অন্য কোনো উপায়ে জানাবেন। তবে আপনার বস যদি আপনার নিজেকেই আপনার চাকরি ছাড়ার বিষয়টি জানাতে বলেন তাহলেই শুধু তা করুন; অন্যথায় নয়।

৮. সহকর্মীদেরকে আপনার নতুন কম্পানিতে নিয়োগের জন্য আপনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কোনো ইঙ্গিত দেবেন না
আপনার নতুন কর্মস্থলে চাকরির সুযোগের ব্যাপারে পুরোনো কর্মস্থলের সহকর্মীদের কিছুই বলতে যাবেন না। যদিও আপনার নতুন কর্মস্থলের বস আপনাকে ইতিমধ্যেই সেখানকার লোভনীয় বেতন-বোনাস সম্পর্কে কিছু বলে থাকেন বা আপনার বন্ধুদেরকেও সেখানে নিয়োগের ব্যাপারে উৎসাহিত করে থাকেন! এ ধরনের কাজ একটু ধৈর্য ধরেই করুন এবং এখনই নতুন কর্মস্থলের জন্য কর্মী নিয়োগের তৎপরতা শুরু করবেন না।

৯. চাকরি ছেড়ে দেওয়ার আগে দেরি করে অফিসে আসা, তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বা বেশি সময় নিয়ে দুপুরের খাবার খাওয়ার মতো কাজ করবেন না নতুন কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার আগের দিনও বর্তমান কর্মস্থলের দায়িত্বে অবহেলা করবেন না। আর মাত্র হয়ত দুটি সপ্তাহ বাকি আছে! আরেকটু ধৈর্য ধরুন!

১০. কর্মসংশ্লিষ্টতা ছাড়া কোনো তৎপরতায় জড়াবেন না
যদি এমন হয়, আপনি চাকরি ছাড়ার নোটিশ দেওয়ার চেষ্টা করার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার বস আপনাকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসেন? এমন সম্ভাবনা থাকলে ভবিষ্যৎ বসকে তার কম্পানিতে আপনার কাজে যোগদানের দিনটি আরো এগিয়ে আনার দরকার হতে পারে সে ব্যাপারে আগেভাগেই ইঙ্গিত দিয়ে রাখুন। অনেক কম্পানিই চাকরি ছাড়ার ব্যাপারে দুই সপ্তাহের নোটিশ নয় বরং যখন-তখন নিয়ম মেনে চলে।

আপনার বেলায়ও যদি তেমনটা ঘটার সম্ভাবনা থাকে তাহলে চাকরি ছাড়ার নোটিশ দেওয়ার আগেই আপনার নিজের জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন। যাতে কম্পানির চাহিদা মতো চাকরি ছাড়ার নোটিশ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আপনি হারিয়ে যেতে পারেন।

তবে খুব বাজে বা অপেশাদার কোনো কম্পানি ছাড়া কেউই তাদের কর্মীদেরকে এভাবে তাৎক্ষণিকভাবে তাড়িয়ে দেন না। তবে অনেক সময়ই এমনটি ঘটতে পারে। আর আপনাকে আগেভাগেই তার জন্য মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে।

মাথা উঁচু করে এবং নিখাদভাবেই আপনাকে পুরনো চাকরি ছেড়ে নতুন চাকরিতে যোগ দিতে হবে। পুরনো চাকরিতে আপনার সঙ্গে কতটা ভালো বা বাজেভাবে আচরণ করা হয়েছে তাতে কিছুই যায় আসে না। বিষয়টি ইতিমধ্যেই আপনার রিয়ারভিউ মিররে ভেসে উঠেছে। আপনি উঠছেন এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন!

Related Posts

Leave a Reply