১০০ বছরের নিয়ম, এখানে থাকতে হলে গান শিখতেই হবে
কলকাতা টাইমস :
পঞ্জাবের আর পাঁচটা গ্রামের মতই এই গ্রাম। মাঠের পর মাঠ জুড়ে গম ক্ষেত। কেউ চাষ করে, কারও আছে দোকান। কিন্তু ‘ভাইনি সাহিব’ গ্রামের ছবিটা এক জায়গাতেই সবার থেকে আলাদা। এ গ্রামে সবাই গান জানেন।
গ্রামের সব ছেলেমেয়েকে শেখানো হয় ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীত। সে বড় হয়ে যাই হোক, কৃষক, দোকানদার, গৃহবধূ- গান শিখতেই হবে। যেন নাওয়া-খাওয়া, দাঁত মাজার মতই এরা নিজেদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে নিয়েছে গান। গত ১০০ বচর ধরেই এই প্রথা চলে আসছে।
এই গ্রামের মানুষজন প্রায় সব ধরনের ভারতীয় রাগ জানেন। তাঁরা জানেন কৃষ্ণ ভজনা, জানেন বর্ষার রাগ। এমনকি গান কিভাবে শুনতে হয়, সেটাও শেখানো হয় তাঁদের। সারাদিনের পড়াশোনা, খেলাধুলা, কাজকর্ম সারা হলেই তাঁরা ছুটে যান গানের ঘরে। কেউ টেনে বসেন সেতার, কেউ তবলা, কেউ শরোদ। সঙ্গতও দেন একে অপরকে।
গ্রামের এক বাসিন্দা তথা গুণী গায়ক বলবন্ত সিং নামধারী বলেন, ‘আমরা মনে করি শিশুবয়সে গান শিখলে বড় হয়ে ভালো মানুষ হওয়া সম্ভব। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ গানকে পেশা হিসেবে নিয়েছে। কেউ সেটাই একমাত্র লক্ষ্য নয়। এই গ্রামের শিশুরা সবাই সূর্যোদয়ের আগে ঘুম থেকে উঠে পড়ে গান প্র্যাকটিস করতে বসে।
গান শিখদের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের মধ্যে পড়ে। গ্রন্থ সাহিবে রয়েছে ৩১টি রাগ রয়েছে। প্রথমে ‘শ্রী’ দিয়ে শুরু ‘জয়জয়ন্তী’ দিয়ে শেষ। শিখদের একটা অংশ ‘নামধারী’রা বিশ্বাস করে গান আসলে স্বর্গীয়।
আর তাঁরা মনে করেন, গুরু গোবিন্দ সিং- তাঁদের শেষ গুরু নন। এখনও তাঁদের মধ্যে বেঁচে আছেন এই গুরুরা। এই ‘নামধারী’ শিখরা বসবাস করেন এই ভাইনি সাহিব গ্রামে। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় এই গ্রামের বহু বাসিন্দা শহিদ হয়েছিল। বর্তমানে প্রায় ৫০০ পরিবারবাস করে সেখানে।