এরা পারলেও আপনি পারবেন কি সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় ১৭ দিন শ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়াই বাঁচতে ? – KolkataTimes
February 26, 2025     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

এরা পারলেও আপনি পারবেন কি সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় ১৭ দিন শ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়াই বাঁচতে ?

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

কানাডার ইউকোনসহ আলাস্কা ও সাইবেরিয়া অঞ্চলের কাকড়া বিছা’র একটি প্রজাতি বিস্ময়করভাবে চরম ঠাণ্ডা মোকাবেলার পাশাপাশি টানা ১৭ দিন বা ৪০৮ ঘণ্টা বাঁচতে পারে শ্বাস-প্রশ্বাস ছাড়াই। সিউডোস্কোরপিয়ন নামক সর্বংসহা প্রাণীটিকে নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। চরম পরিবেশে প্রাণীটির টিকে থাকার কৌশল মানব অঙ্গ প্রতিস্থাপন, সংরক্ষণ ও মহাশূন্যে যাত্রাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর স্বপ্ন দেখছেন তারা।

এদের প্রাকৃতিক ইতিহাস নিয়ে প্রথম গবেষণা করেন কানাডার ম্যাগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাচারাল রিসোর্স সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খ্রিস্ট্রোফার এম. বাডল।

একবার প্রফেসর বাডল তার সহকর্মীদের নিয়ে কানাডার ইউকোন অঞ্চলে অন্য একটি গবেষণা প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে যান। ঘটনাক্রমে বহু বছর আগে কাগজে পড়া সুমেরু অঞ্চলের সিউডোস্কোরপিয়নদের কথা মনে পড়ে যায় তার।

বাডল টিম ২০০টির মতো নমুনা সংগ্রহ করলেন এবং কিভাবে এরা তীব্র ঠাণ্ডা ও জলের নিচে ডুবে থাকে, তা নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন। তারা প্রথমে খুঁজে পেলেন আর্থপোডা পর্বের অন্য অনেক প্রাণীর মতো সুমেরু অঞ্চলের সিউডোস্কোরপিয়ন্‌সরাও তাদের শরীর সংকোচন করে ঠাণ্ডা থেকে বাঁচে। এ প্রক্রিয়াকে বলা হয় সুপার কুলিং। এ প্রক্রিয়ায় তারা মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও জমে যাওয়া ঠেকাতে পারে।

এ তথ্যটি চিত্তাকর্ষক, কিন্তু দুনিয়া কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো ছিল না। কারণ, আন্টার্টিক স্প্রিঙ্গটেইলের মতো ঠাণ্ডা সহিষ্ণু অন্য কিছু প্রজাতি মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায়ও টিকে থাকতে পারে। তীব্র শীতে তাপমাত্রা যখন মাইনাস ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়েও কমে যায় তখন মেরু অঞ্চলের সিউডোক্সোরপিয়নরা স্নো লেয়ারে লুকিয়ে পড়াসহ ‍অন্য কৌশলগুলো কাজে লাগায়।

জলের নিচে কিভাবে এই ক্ষুদ্র প্রাণীগুলো টিকে থাকে এর রহস্য বের করতে গিয়ে বের হয়ে আসে দুনিয়াকে তাক লাগানো খবর।

গবেষক দল তখন নর্দান সিউডোস্কোরপিয়নদের জলের ডুবিয়ে দেখতে চান, তারা কতোটা সময় ধরে টিকে থাকতে পারে? ১৭ দিন পর দেখা গেলো, অর্ধেকের মতো সিউডোস্কোরপিয়ন্সই জীবিত। এটি একটি অসাধারণ ও অনেক বড় আশ্চর্যের বিষয়, অলৌকিক।

জলের নিচ থেকে যখন বিষ্ময়কর ক্ষুদ্র প্রাণীগুলোকে জলের ওপরে আনা হয়, তখন তাদের সিলভার বা রূপালি রঙের দেখায়। তারা তাদের শরীরের চারপাশে একটি বায়ুর স্তর আটকে রাখে। কিন্তু এটিই জলের নিচে এতো সময় বেঁচে থাকার আসল রহস্য নয়।

কারণ, আর্থপোডা পর্বের অনেক প্রাণীই এটা করে। তবে বেশিরভাগ আর্থপোডা তাদের বিশেষ অঙ্গ ব্যবহার করে পানি থেকে অক্সিজেন নিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে পারে। এটিকে প্লাসট্রন্স বলে। এ প্রক্রিয়ায় আর্থপোডা পর্বের কিছু প্রাণী কয়েক ঘণ্টা থেকে একাধিক দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।

কিন্তু উত্তর মেরুর সিউডোস্কোরপিয়নরা প্লাসট্রন প্রক্রিয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাস চালায় না। তাহলে কি সেই সুপার পাওয়ার, যেটি এদের এতোটা সময় বাঁচিয়ে রাখে?

গবেষকরা জল থেকে সব অক্সিজেন সরিয়ে আরেকটি পরীক্ষা করলেন। কিন্তু সিউডোস্কোরপিয়নদের ওপর সেটি কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।

জলের নিচে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ করে প্রাণীটির দীর্ঘ সময় টিকে থাকার বিষয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি পরিষ্কার নয় যে, কিভাবে তারা এটি করে। কিন্তু সম্ভবত কোনো না কোনো উপায়ে তাদের শারিরীক ক্রিয়া বন্ধ করে দেয়। তারা জলের নিচে মেটাবলিকেলি সাট ডাউন করতে সক্ষম। যার ‍কারণে তারা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে।

Related Posts

Leave a Reply