পেনিসিলিন খেয়ে পুড়ে গেলো গোটা শরীর!

কলকাতা টাইমসঃ
তরুণীর আপাদমস্তক ব্যান্ডেজে মোড়ানো। তার দেহের ৯০ শতাংশ ত্বক পুড়ে গেছে। বিস্ময়কর হলেও এটা কিন্তু আগুনে পোড়েনি। জীবন বাঁচানো পেনিসিলিনের প্রাণঘাতী প্রতিক্রিয়ায় এই বেহাল অবস্থা তার। যখন বুঝলেন এই অতি সাধারণ পেনিসিলিন তার জন্যে অ্যালার্জি, ততক্ষণে তীব্র দহন তার দেহজুড়ে। ফ্রান্সের দক্ষিণের অ্যাভিগননের এই তরুণীর প্রাণ এখন যায় যায় অবস্থা।
জানা যাচ্ছে, টনসিল হয়েছিল ২৯ বছর বয়সী ক্যামিলা ল্যাগিয়ারের। যে কারণে পেনিসিলিন দেওয়া হয় তাকে। এর পরই মারাত্মক পার্শ প্রতিক্রিয়া শুরু হয় তার। গোটা দেহের ত্বক পুড়তে শুরু করে তার। এই অবস্থায় টানা তিন সপ্তাহ হাসপাতালে থাকতে হয় তাকে। তার মুখ, জিহ্বা, যৌনাঙ্গ এবং শ্বাসনালী ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চিকিৎসা শেষেও তার দেহের সর্বত্র বিদঘুটে পোড়া দাগ রয়ে গেছে।
তার এই বিরল অবস্থার নাম টক্সিক এপিডার্মাল নেক্রোলাইসিস (টিইএন-টেন)। প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে এক কি দু’জনের এমনটা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। ল্যাগিয়ারের ত্বক আর কখনোই আগের মতো হবে না। তিনি বলেন, পেনিসিলিন খাওয়ার পর প্রথম লক্ষণ হিসেবে চোখে চুলকানি এবং দেহের পেছনে দাগ দেখা যেতে থাকে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই অবস্থার অবনতি ঘটে। তিনি বলেন ছোটবেলাতেও আমি পেনিসিলিন খেয়েছি তখন কিছু হয়নি। ডাক্তাররা জানান, অ্যালার্জি যে কোনো বয়সে দেখা দিতে পারে। এই ঘটনার পরই বাবা-মা তাকে অ্যাভিগনন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। তাকে মার্সেইলির বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে পাঠানো হয়।
ল্যাগিয়ারকে অ্যামোক্সিসিলিন দেওয়া হয়েছিল। এটা পেনিসিলিন পরিবারেরই একটি অ্যান্টিবায়োটিক। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পরই বিশেষজ্ঞরা দ্রুত বুঝতে পারে তার টক্সিক এপিডার্মাল নেক্রোলাইসিস রয়েছে। এই অবস্থারই কিছু সহনীয় মাত্রা রয়েছে যাকে বলা হয় স্টিভেন্স-জনসন সিনড্রোম। তবে এটা দশ লাখের মধ্যে এক কি দু’জনের মধ্যে দেখা দিতে পারে। এমনটাই জানায় আমেরিকার ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর রেয়ার ডিসঅর্ডার্স।
হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে আপাতত বাড়ি ফিরেছেন তিনি। কিন্তু দেহে রয়েছে গেছে পোড়া দাগ। এই নিয়ে মন খারাপ তো ছিলোই। কিন্তু ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেন তিনি। ভালোবাসতে থাকেন নিজেকে। তিনি ব্লগে নিজের এই অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন। অন্যদেরকে তিনি বলতে চান, নরক থেকে ফিরে এসেও জীবনটা সুন্দরভাবে সাজানো যায়।