‘পাকাদুয়া ‘-র জন্য অপহৃত ৩,৪০০ ছেলে!
কলকাতা টাইমস :
প্রেম করে বিয়ে, সম্বন্ধ দেখে বিয়ে, পালিয়ে বিয়ে, অসমবয়সী বিয়ে- এমন নানা বিয়ের কথা শুনে বা দেখে থাকবেন। কিন্তু পাকাদুয়া বিয়ের কথা শুনেছেন? আজ্ঞেঁ হ্যা, বিহারে এ ধরনের বিয়ে কিছু কিছু অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি হয়। মানে, বাকি যত রকম বিয়ের কথা সাধারণত শোনা যায় তার চেয়ে অনেক বেশি।
কেমন এই বিয়ে? বিহারে এখনও পণ প্রথার যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। ভালো পাত্রের সঙ্গে মেয়েকে বিয়ে দিতে গেলে পণের অঙ্ক শুনলে অনেকেই ভিরমি খাবেন। তাই পণ এড়াতে গিয়ে ভালো পাত্রের খোঁজ পেলে মেয়ের অভিভাবকরা তাঁকে বা তাঁর বাবা-মাকে বন্দুক দেখিয়ে বা অপহরণ করে তুলে নিয়ে গিয়ে জোর করে মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেন।
হিসেব বলছে ২০১৭ সালে ৩,৪০৫ জন যুবককে এ ভাবে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করানো হয়েছে। গত কয়েক বছরে সংখ্যাটা ৩ হাজারের আশপাশেই ঘোরাফেরা করেছে। পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী বিয়ের মরশুমে প্রতি দিন গড়ে ৯টি পাকাদুয়া বিয়ে হয় গোটা বিহারে। এ বছর বিয়ের মরশুম শুরু হওয়ার মুখে। তাই আগাম সতর্কতা অবলম্বন করছে প্রশাসন।
সম্প্রতি একটি ঘটনা সামনে এসেছে যেখানে এক ইঞ্জিনিয়ারকে তুলে নিয়ে বন্দুক দেখিয়ে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বউ-সহ বাড়িতে পৌঁছে তিনি স্ত্রীকে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে গোটা দেশে তোলপাড় হয়। এই কু-প্রথার বিরুদ্ধে কাজ করা মহেন্দ্র যাদব বলেন, ‘পাকাদুয়া বিহারে নতুন কিছু নয়। পুলিশ-প্রশাসন সকলেই সব জানে। সবচেয়ে চিন্তার বিষয় হল, সংখ্যাটা ক্রমশ বাড়ছে।’
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর তথ্য বলছে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সি যুবকদের অপহরণের ক্ষেত্রে বিহার ভারতের এক নম্বর প্রদেশ। ২০১৫ সালে প্রায় ১১ জনকে অপহরণ করা হয়। সংখ্যা গোটা দেশের মধ্যে ১৭ শতাংশ। এর মধ্যে বেশিরভাগই বিয়ের জন্য অপহরণ করানো হয়। অনেক সময় দেখা যায়, ভালো পাত্র অপহরণ করানোর জন্য অপরাধীদের মোটা টাকা দিয়ে ভাড়া করা হয়।