৬০ কিংবা ৮০, তবুও হবেন না বুড়ো , শুধু করতে হবে …
কলকাতা টাইমস :
৬০ হোক কিংবা ৮০, ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখতে বয়স এখন কোনও ব্যাপারই নয়। ত্বকের যৌবন ধরে রাখার উপায় যখন রয়েছে তখন কেন মুখে স্পষ্ট হবে প্রৌঢ়ত্বের ছাপ? মধ্যবয়স্কা থেকে বৃদ্ধা, বলিরেখার কারনে সৌন্দর্যের দফারফা হলে হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না। প্লাস্টিক সার্জারির দরকার নেই। সামান্য কিছু ট্রিটমেন্ট করেই বলিরেখা দুর করা সম্ভব।
তবে ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে চাইলে ৩৫ হলেই সাবধান। সাধারণত এই বয়সেই মেয়েদের মুখে বলিরেখার ছাপ পড়তে শুরু করে। প্রথমে চোখের পাশে হালকা কুঞ্চন। তারপর ধীরে ধীরে ঠোঁটের দু’পাশে দেখা দেয় বয়স বাড়ার সংকেত। এই সময় থেকে যত্ন করা শুরু না করলে অকালে বুড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
যেভাবে যত্ন নেবেন-
দিনে দু’-তিনবার ফেস ওয়াশ করতে হবে। স্নানের পর ও রাতে শুতে যাওয়ার আগে ভাল মানের ময়েশ্চারাইজার মাখা উচিত। যেসব ময়েশ্চারাইজার বেশ ক্রিমি হয় সেগুলিই লাগানো ভাল। রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। প্রয়োজনে সান স্ক্রিন লাগিয়ে বেরোতে হবে। দিনে একবার অন্তত মুখে ভাল করে ম্যাসাজ জরুরি। ম্যাসাজের সময় এমনভাবে হাত ঘোরাতে হবে তা যেন মুখের ত্বককে উপরের দিকে তোলে, নিচের দিকে না নামায়। মাঝে মাঝে পার্লারে গিয়ে ফেসিয়াল ম্যাসাজ করা যায়।
কেন পড়ে বলিরেখা : ৩৫ পেরনোর পর মুখের ত্বক শুষ্ক হতে শুরু হয়। তাই ত্বক আর্দ্র রাখতে নিয়মিত ভাল ময়েশ্চারাইজার লাগানো জরুরি। ত্বকের নিচে থাকা কোলাজোনের মান ভাল থাকলে চামড়া মোটা থাকে। কিন্তু কোলাজোনের মান এই বয়সের পর থেকে খারাপ হতে শুরু করে। আর এই কারণেই মহিলাদের মুখে বলিরেখা পড়তে শুরু করে।
তাই এমন ক্রিম মাখতে হবে যা ত্বকে কোলাজোনের পরিমাণ বজায় রাখতে সাহায্য করে। এদিকে, রোদ আবার কোলাজোন নষ্ট করে। তাই কোলাজোন ভাল রাখতে অবশ্যই রোদে বেরনোর আগে সান স্ক্রিন লোশন মাখতে হবে। কোনও পাউডারজাতীয় সান স্ক্রিন ব্যবহার করা চলবে না। বলিরেখা এড়াতে ঘরোয়া যত্ন নিতে হবে। কিন্তু বলিরেখা যদি পড়ে যায় তাহলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে গিয়ে ট্রিটমেন্ট করতে হবে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক একটু পিলিং করে দিতে পারেন কিংবা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি মেশিন দিয়ে মুখের স্কিন মসৃণ-টাইট করতে পারেন।
আইপিএল-এর মাধ্যমে ট্রিটমেন্ট : ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে ক্রমশ পাতলা হয়ে যায়। এর ফলে সহজেই তা কুঁচকে যায়। যাঁদের এমন হয়েছে তাঁরা ইনটেন্স পালসড লাইট (আইপিএল) ট্রিটমেন্ট করতে পারেন। এই প্রযুক্তির সাহায্যে ত্বকের বিভিন্ন দাগ, বলিরেখা, কুঁচকে যাওয়া অংশ ঠিক করা যায়। রোদে চামড়া পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তা ঠিক করা যায়। অনেকে অতিরিক্ত ডায়েট করে বা অন্য কারণে হঠাৎ অনেকটা মেদ ঝরিয়ে ফেলেন। তাতে তাঁদের মুখের চামড়া ঝুলে যায়। পুনরায় সেই স্কিন মসৃণ, টানটান করতে আইপিএল লেজার মেশিনের সাহায্যে ট্রিটমেন্ট করা হয়।
ফ্যাট গ্রাফটিং : বলিরেখার দাগ মুছতে এই পদ্ধতি কিন্তু বেশ ভাল। সাধারণত পেট থেকে মেদ নিয়ে তা প্রসেস করে মুখে ইনজেক্ট করতে হয়। ফ্যাট কোলোজেনকে উদ্দীপিত করে। এই ট্রিটমেন্টের পর একদম ইয়ং দেখতে লাগে। পরে পুনরায় বলিরেখা ফিরে আসার সম্ভাবনাও প্রায় নেই বললেই চলে।
বোটক্স : সাধারণত যেসব জায়গায় ভাঁজ পড়েছে সেইসব জায়গায় ইনজেকশন দিয়ে বোটক্স ট্রিটমেন্ট করা হয়। এই ট্রিটমেন্ট মুখের কুঁচকে যাওয়া পেশিকে রিল্যাক্স করে দেয়। তবে বোটক্সের পর ছ’মাস স্কিন একদম টানটান থাকে। তারপর পুনরায় না করালে ফের বলিরেখা বা ভাঁজের দাগ স্পষ্ট হয়।
ষাটে সার্জারি : ৬০ বছর মানেই বলিরেখায় চুরমার মুখ নয়। টানটান ত্বক নিয়ে মুখের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলছেন বহু প্রৌঢ়াই। এই বয়সিদের ফেস লিফট সার্জারি করে বলিরেখা সম্পূর্ণ মুছে দেওয়া সম্ভব। এছাড়াও ওষুধ, কেমিক্যালের মিশ্রণ মুখে মাখিয়ে রেখে পিলিং করা যায়। মাস্ক-এর মতো একটি স্তর মুখের সঙ্গে লেগে থাকে। কয়েক ঘণ্টা পর তা তুলে দেওয়া হয়।
রেডিওফ্রিকোয়েন্সি-রে দিয়েও ত্বক মসৃণ করা যায়। এছাড়া বলিরেখার কাছে বিভিন্ন ওষুধ ইনজেকশন দিয়েও ট্রিটমেন্ট করা হয়। তবে যেসব চিকিৎসায় লেজার রে দিতে হয় সেগুলি দক্ষ চিকিৎসকের কাছেই করা উচিত। একটু এদিক-ওদিক হলেই স্কিন পুড়ে যেতে পারে। সার্জারির পর রোদ লাগানো একদম চলবে না। কোলোজেন নতুন করে উৎপাদন করতে পারে এমন ক্রিম লাগাতে হবে।