ভারতীয় খাবারের এই ৭ বিশ্বাস এখনই ভেঙে ফেলুন!
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
আজকাল মানুষ আগের থেকে অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হয়েছে। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এখন হাল ফ্যাশনে ইন। কিন্তু কোনটা স্বাস্থ্যকর খাবার আর কোনটা অস্বাস্থ্যকর খাবার তা নিয়েও কিন্তু বহু মিথ রয়েছে। এই খাবারগুলি স্বাস্থ্যকর মনে হলেও আসলে তা নয়] কেউ বলেন এটা ভাল, কেউ বলেন ওটা খারাপ। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় এই জানাটাই আসলে ভুল হয়ে গিয়েছে। যা আপাত দৃষ্টিতে স্বাস্থ্যকর তা আসলে অস্বাস্থ্যকর। আবার যা অস্বাস্থ্যকর বলে রটনা রয়েছে তা শরীরের ক্ষেত্রে উপকারি।
বিষয়টা কি একটু জটিল হয়ে যাচ্ছে? আচ্ছা তবে উদাহরণ দিয়েই বিষয়টা পরিস্কার করে বোঝানো যাক।
ভুল ধারনা :
সুজি স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে উপকারি ফুচকা খাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকের ধারণা ময়দার দিয়ে তৈরি ফুচকা খাওয়ার চেয়ে সুজির তৈরি ফুচকা খেলে তা শরীরের পক্ষে স্বাস্থ্যকর। কিন্তু আদতে তা মোটেই নয়। কারণ সুজি হল ময়দারই ঝুরো বা কণিকাবিশেষ প্রকার। ময়দার যা পুষ্টিগত গুনমান রয়েছ, সুজির ক্ষেত্রেও একইরকম। এতে শর্করা ও মাড় সম্বৃদ্ধ উপাদান বেশী থাকে। তাই ময়দাও যতটা ক্ষতিকর সুজিও শরীরের ক্ষেত্রে ততটাই অপকারি।
ভুল ধারনা : এক্সট্রা ভার্জিন তেল রান্নার জন্য ব্যবহার করা উচিত নয় অনেকেরই ধারণা আছে একস্ট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল শুধু মাত্র স্যালাড বা পাস্তা পরিবেশনের সময় ব্যবহার করা উচিত। এই তেল গরম করলেই এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। যদিও এটি সম্পর্ণ ভুল ধারনা। এক্সট্রা ভার্জিন তেলের ক্ষেত্রেই একমাত্র গরম করার আগে ও পরে পুষ্টিগত মান একই থাকে। আর এই তেলে অ্যাসিডের পরিমাণ কম থাকে। এর সুগন্ধ ও অলিভের স্বাদের জন্য অল্প তেল ব্যবহারেই খাবারকে সুস্বাদু করা যায়।
ভুল ধারনা :
চিনির চেয়ে স্বাস্থ্যকর মধু অনেকেই স্বাস্থ্যের কথা ভেবে চিনি খাওয়া ছেড়েছেন। কিন্তু মিষ্টির স্বাদ বজায় রাখতে চিনির বদলে মধু খান। আসলে তাদের ধারণা চিনির বিকল্প হিসাবে মধু অনেকবেশী পুষ্টিকর এবং প্রাকৃতিক এই উপদারে শরীরের কোনও ক্ষতি হয় না। এক্ষেত্রে জেনে রাখা ভাল, সাদা রিফাইন্ড চিনির মতোই মধুতে প্রচুর পরিমাণে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকে। এমনকী মধুতে চিনির চেয়ে বেশি ক্যালোরিও রয়েছে। ১ টেবিল চামচ চিনিচে যেখানে ৪৬ ক্যালোরি রয়েছে সেখানে ১ টেবিল চামচ মধুতে ৬৫ ক্যালোরি রয়েছে।
ভুল ধারণা:
দেশি ঘি স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর এই ধারণা তো ৯০ শতাংশ মানুষের মধ্যেই রয়েছে যে দেশি ঘি খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা শরীরে উর্ধ্বগামী হবেই। আসলে দেশি ঘিতে ৩২ শতাংশ মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা কোলেস্টরলের মাত্রা শরীরে নিয়ন্ত্রণ করে। সুর্যমুখীর তেল, বাদাম তেলের চেয়ে অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর দেশি ঘি।
ভুল ধারণা : আপেল ও কলায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে তাই কাটার পর খয়েরি হয়ে যায় ভারতীয় খাবার সম্পর্কে ভুল ধারনা প্রসঙ্গে বলতে গেলে এটিই সবচেয়ে বড় ভুল ধারণা। কারণ আপেল ও কলাতে আয়রন নয়, প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এনজাইমের প্রতিক্রিয়ার জন্য এই খয়েরি রং হয়ে যায়।
ভুল ধারণা :
ডিম শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ডিমে প্রায় ২১৫ এমজি কোলেস্টেরল থাকে। তবে ২০১২ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে দীর্ঘকালের ক্ষেত্রে ডিম খেলে কোলেস্টেরলের প্রভাব শরীরে নেতিবাচক থাকে। অর্থাৎ প্রতিদিন দিনে ১ করে ডিম খেলে তা শরীরে কোনও খারাপ প্রভাব ফেলে না বা কোলেস্টেরলের পরিমাণে কোনও নেতিবাচক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না।
ভুল ধারণা :
মিষ্টি না খেলে ডায়বেটিস হবে না : মিষ্টি থেকে দূরে থাকলে তা আপনার শরীরে কয়েক ক্যালোরি যোগ হওয়া আটকাতে পারে কিন্তু ডায়বেটিস হওয়া আটকাতে পারে না। কার্বোহাইড্রেট বিপাকের সমস্যার জেরে ডায়বেটিস হয়। এছাড়াও জীবনযাত্রার ধরন, বংশগত কারণে, স্থূলত্ব প্রভৃতি কারণে হয়ে থাকে। ফ্যাট, স্টাজ্ঞচ, প্রোটিন বা শর্করা যে কোনও উৎস থেকে অতিরিক্ত ক্যালোরি শরীরে গিয়ে যদি ইনসুলিনের স্বাভাবিকত্বকে বাধাপ্রাপ্ত করে তাহলেই ডায়বেটিস হতে পারে। এক্ষেত্রে শুধু চিনি না খেয়ে ডায়বেটিস আটকানো যাবে না।