দীর্ঘায়ু হতে চাইলে প্রতিদিন এই শাকটি খান, সুফল চমকে দেবে
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
কোন শাকের কথা বলছি বুঝতে পারছেন না নিশ্চয়? আসলে এই প্রবন্ধে আজ ব্রাহ্মী শাক সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। কেন হঠাৎ ব্রাহ্মী শাক, তাই ভাবছেন তো? আসলে একাধিক প্রচীন পুঁথি ঘেঁটে এই শাকটি সম্পর্কে যা জানতে পারা যায়, তা বাস্তবিকই আশ্চর্যের। আয়ুর্বেদ চিকিৎসা শাস্ত্রের সেই জন্ম লগ্ন থেকেই এই শাকটির ব্যবহার হয়ে আসছে। কারণ ব্রাহ্মী শাক খেলে নাকি ব্রেন পাওয়ার মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকার। সত্যিই কি তাই?
একেবারেই! কারণ এই শাকটির গুণাগুণকে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানও মান্যতা দিয়েছে। তাই রোগমুক্ত জীবনের পথের সন্ধান পেতে এই প্রবন্ধটি একবার চোখ রাখাটা জরুরি। প্রসঙ্গত, রোজের ডায়েটে ব্রাহ্মী শাকের অন্তর্ভুক্তি ঘটালে সাধারণত যে যে উপকতারিতাগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি হল…
১. ফুসফুসের ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত কয়েকটা করে ব্রাহ্মী শাখের পাতা মুখে নিয়ে চেবালে ধীরে ধীরে ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। তাই তো ব্রঙ্কাইটিস, বুকে কফ জমা এবং সাইনাসের মতো সমস্যা কমাতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি দারুন কাজে আসে। এবার বুঝেছেন তো নিয়মিত এই শাকটি খাওয়ার প্রয়োজন কতটা!
২. বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়: বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত বেশ কিছু কার্যকরি উপাদান শরীরে প্রবেশ করা মাত্র ব্রেনের হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে বুদ্ধি এবং স্মৃতিশক্তি চোখে পারার মতো বাড়তে শুরু করে। প্রসঙ্গত, মনোযোগ বাড়াতেও এই শাকটি বিশেষ ভূমিকা নেয়। কারণ ব্রেনের হিপোকম্পাস অংশটির ক্ষমতা বাড়াছে না কমছে, তার উপর মনোযোগের বাড়া-কমা অনেকাংশেই বৃদ্ধি পায়। তাই তো আলেকজান্ডার দি গ্রেটের মতো যদি বুদ্ধিমান হয়ে উঠতে চান, তাহলে নিয়মিত ব্রাহ্মী শাক খাওয়া মাস্ট!
৩. রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে: অতিরিক্ত টেনশনের কারণে কি ব্লাড প্রেসার ওঠা-নামা করছে? তাহলে আজ থেকেই ব্রাহ্মী শাক খাওয়া শুরু করুন। কারণ এই শকটি রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে ব্লাড প্রেসার হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার কারণে যাতে কোনও ধরনের ক্ষতি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখে।
৪. ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে: এই শকটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদানটি শরীর থেকে নানাবিধ ক্ষতিকর উপাদানদের বার করে দিয়ে একদিকে যেমন ক্যান্সার সেলের জন্ম আটকায়, তেমনি সার্বিকভাবে শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই কারণেই তো সুস্থ জীবন পাওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে ব্রাহ্মী শাকের সঙ্গে বন্ধুত্ব করাটা জরুরি।
৫. দেহের অন্দরে প্রদাহ কমায়: বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে শরীরের কোনও জায়গায় কেটে যাওয়ার পর ক্ষতস্থানে ব্রাহ্মী শাখ বেঁটে লাগালে জ্বাল-যন্ত্রণা একেবারে কমে যায়। শুধু তাই নয়, নিয়মিত এই শাকটি খেলে শরীরের অন্দরে তৈরি হওয়া ইনফ্লেমেশনও কমে যেতে শুরু করে। ফলে কমে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা।
৬. স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটির মাত্রা কমায়: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত ব্রাহ্মী শাক খেলে মস্তিষ্কের অন্দরে স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটির জন্ম দেওয়া কর্টিজল হরমোনের ক্ষরণ কমতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মানসিক চাপ যেমন কমে, তেমনি মনের হারিয়ে যাওয়া অনন্দও ফিরে আসে। প্রসঙ্গত, আজকের দিনে ছাত্র-ছাত্রী হোক কি চাকরিজীবী, সকলেই নানা কারণে বেজায় মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন। ফলে ডিপ্রেশনের মতো মানসিক রোগের খপ্পরে পরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এমন পরিস্থিতিতে ব্রাহ্মী শাক খেলে কতটা উপকার মিলতে পারে, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না।
৭. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: নিয়মিত এই শাকটি খাওয়া শুরু করলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি-এর মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জোরদার করে তুলতে সাহায্য করে। আর একবার ইমিউনিটি বেড়ে গেলে কোনও ধরনের সংক্রমণ তো ধারে কাছে ঘেঁষতে পারেই না, সেই সঙ্গে আরও নানাসব রোগ দূরে পালাতেও বাধ্য হয়।
৮. অ্যালঝাইমার রোগকে দূর রাখে: ব্রাহ্মী শাকে উপস্থিত ব্যাকোসাইড নামক এক ধরনের বায়ো-কেমিকাল ব্রেন টিস্যুর ক্ষত সারিয়ে তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বয়সের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্রেন পাওয়ার কমে যাওয়ার আশঙ্কা যেমন হ্রাস পায়, তেমনি কগনিটিভ ফাংশন কমে যাওয়ার সম্ভাবনাও কমে।