মাটি খুঁড়ে বেরিয়েই ভিমরি খাওয়ালো ২ হাজার বছর পুরোনো ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁ !
কখনো ভেবেছেন ২ হাজার বছরের পুরানো ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁ দেখতে কেমন? গবেষকদের তোলা নতুন ছবি আপনাকে ধারণা দিতে পারে। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা শনিবার জানিয়েছেন যে তারা প্রাচীন শহর পম্পেইয়ের একটি সম্পূর্ণ থার্মোপলিয়াম (একটি রোমান ফুড কাউন্টার) খনন করেছেন।
পম্পেইয়ের একজন ব্যক্তির প্রতিদিনের জীবন এবং ডায়েটের সম্পূর্ণ চিত্র তৈরি করতে গবেষকরা অনুসন্ধানগুলি বিশ্লেষণ করছেন। পম্পেইতে প্রতিদিনের জীবনের আরো ধারণা পাওয়ার পাশাপাশি এই থার্মোপোলিয়ামের গবেষণার সম্ভাবনাগুলি ব্যতিক্রমী, কারণ প্রথমবারের মতো এই ধরণের একটি অঞ্চল পুরোপুরি খনন করা হয়েছে।
গত বছর প্রত্নতাত্ত্বিকরা এর সন্ধান পেলেও সম্প্রতি এটি খুঁড়ে বের করা হয়েছে। ৭৯ খ্রিষ্টাব্দে ভিসুভিয়াস পর্বতের আগ্নেয়গিরির উত্তপ্ত লাভার নিচে চাপা পড়ে এই পম্পেই নগরী। এতে দুই হাজার থেকে ১৫ হাজার মানুষ মারা যায়। স্টলের ভিতরে দুটি মানুষের দেহাবশেষও পাওয়া গেছে। প্রত্নতাত্ত্বিকরা ওই এলাকায় সে সময়ের আরো নিদর্শনের সন্ধানে খননকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
ফাস্টফুডের দোকানগুলোকে বলা হতো ‘থার্মোপোলিয়াম’। গ্রিক শব্দ ‘থার্মো’র অর্থ গরম আর ‘পোলেও’ শব্দের অর্থ বিক্রি। অর্থাৎ গরম খাবার বিক্রির জায়গা থার্মোপোলিয়াম। পম্পেই নগরের ওয়েডিং স্ট্রিট ও অ্যালে অব ব্যালকোনিজের নামের দুই এলাকার মাঝামাঝি ছিল এই গরম খাবারের দোকান। প্রত্নতাত্ত্বিকরা এ দোকানে হাঁস, শূকর ও ছাগলের হাড়ের টুকরো খুঁজে পেয়েছেন। মাটির পাত্রে পেয়েছেন মাছ ও শামুক। একটি জারের তলায় গুঁড়ো করে রাখা ছিল মটরশুঁটি। ওয়াইনের স্বাদ বাড়াতে এসব ব্যবহার করা হতো। প্রত্নতাত্ত্বিকরা বুনোহাঁস ও পোষা মোরগের প্রতিকৃতিও আবিষ্কার করেছেন। ধারণা করা হয়, মদ অথবা গরম পানীয়র সঙ্গে এগুলোর মাংস দিয়ে তৈরি খাবার পরিবেশন করা হতো। এ ছাড়া প্রত্নতাত্ত্বিকেরা সিরামিকের জার, ওয়াইন ফ্লাস্কস, অ্যাম্ফোরা এবং একটি ব্রোঞ্জের পেটারা (জলের জার) খুঁজে পেয়েছেন।
পম্পেইয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক পার্কের ডিরেক্টর মাসিমো ওসানা জানান, দোকানটি খুব তড়িঘড়ি করে বন্ধ করা হয়েছিল। সম্ভবত অগ্ন্যুৎপাতের প্রথম দিকে এটি বন্ধ করা হয়। ফাস্টফুডের দোকানটির সামনের ছোট্ট চত্বরে একটি জলাশয়, ঝর্ণা এবং জলের ফোয়ারা পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আনুমানিক ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তির দেহাবশেষ ও শিশুর বিছানাও পাওয়া গেছে। ওসানা বলেন, সম্ভবত দোকানের পেছনে বয়স্ক কোনো ব্যক্তি বসবাস করতেন। অগ্ন্যুৎপাত শুরুর পর তিনি মারা যান।