যে থানায় ৩৪ বছরেও দায়ের হয়নি কোনো মামলা!
কলকাতা টাইমস :
এ যেন এক স্বপ্নের দেশ, স্বপ্নের কথা। থানায় অভিযোগ আসে না এমন কথা কি বিশ্বাস করার কথা। হ্যাঁ, এমন স্বপ্নময় একটি থানা, যেখানে বিগত ৩৪ বছরে একটি অভিযোগও আসেনি! আশ্চর্যের ব্যাপার, থানাটি যে এলাকায় রয়েছে তা ডাকাতদের মুক্তাঞ্চল হিসেবে সুপ্রসিদ্ধ। তার পরও এমন ঘটনা!
গ্রামটির নাম বেহমি। নামটা শুনে কিছু মনে পড়ছে? অনেকেরই মনে পড়ার কথা নয়। ৩৪ বছর আগে ১৯৮১ সালে ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড এখানেই হয়েছিল। যার হোতা ছিলেন ফুলন দেবী।
১টি-২টি নয় মোট ২০ জনকে ঘর থেকে টেনে বের করে এনে প্রকাশ্যে গুলি করে মারা হয়। এরপর ভারতের মানচিত্রেই শুধু নয়, গোটা বিশ্বে অন্যতম চর্চার বিষয় হয়ে ওঠে উত্তরপ্রদেশের ‘বেহড়’ এলাকার এই ছোট্ট গ্রামটি।
এ হত্যাকাণ্ডের পরেই বেহমি গ্রামে থানা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। প্রধানত ২টি উদ্দেশ্য ছিল এর পেছনে। এক, ডাকাতদের অত্যাচারে জর্জরিত গ্রাবাসীদের একটু সুরক্ষার আশ্বাস দেয়া।
দুই, খুনের বদলে খুনের যে রীতি দীর্ঘদিন ধরে এই গ্রামগুলোতে চলছিল তার অবসান ঘটানো। কিন্তু তাতে কি তা হয়েছে? কানপুরের আইজি আশুতোষ পাণ্ডের দাবি, এই গোটা এলাকায় ডাকাতদের যাবতীয় গতিবিধি শেষ হয়ে গেছে। ফলে সমস্ত অঞ্চলে ‘অখণ্ড শান্তি বিরাজ করছে’।
তবে বাস্তব চিত্রটার দিকে একটু চোখ বোলালে আই সাহেবের কথায় বিশ্বাস করা একটু কঠিন হবে। কারণ বেহমির আশপাশের ২৫টি গ্রামের মধ্যে এই একটি মাত্র থানা রয়েছে। তারপরও গত ৩৪ বছরে একটি অভিযোগও জমা পড়েনি থানায়।
প্রশ্ন ওঠে, আজকের দিনে এমনটা কি সত্যিই সম্ভব? সত্যিই কি পুলিশকর্মীরা নিজেদের পদাধিকার বলে অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত গ্রামবাসীদের অভিযোগ দাবিয়ে রাখেনি? নাকি ডাকাতদের অত্যাচারের ভয়ে গ্রামবাসীরা আদৌ থানামুখী হতে চান না? উত্তর যাই হোক, সবদিক থেকেই বঞ্চিত-নিপীড়িত হচ্ছেন নিরীহ সাধারণ মানুষ।