অল্প বয়সেই শিশুকে বাদাম ও ডিম খাওয়ান, পরে এসব খাবারে অ্যালার্জি হয় না
কলকাতা টাইমস :
শিশুদেরকে খুব অল্প বয়সেই বাদাম ও ডিমের মতো খাবার খাওয়ানো শুরু করলে পরবর্তী জীবনে এসব খাবারের কারণে তাদের মধ্যে বিপজ্জনক কোনো অ্যালার্জির সৃষ্টি হয় না। নতুন এক গবেষণায় এমনটিই প্রমাণিত হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, চার থেকে ছয় মাস বয়সেই শিশুদেরকে ডিম, আর চার থেকে ১১ মাসে বয়সেই বাদাম খাওয়ানো শুরু করলে পরবর্তী জীবনে তাদের বাদাম ও ডিম অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ব্যাপকহারে কমে আসে।
ডিম এবং বাদামের প্রতি সংবেদনশীলতা শিশু বয়সের প্রধান অ্যালার্জি সমস্যা।
জার্নাল অফ দ্য অ্যামেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনে (জেএএমএ) গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। জীবনের শুরুতেই বাচ্চাদেরকে অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে এমন খাবার খাওয়ানো শুরু করা সংক্রান্ত কয়েকটি গবেষণার সমন্বিত ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
এতে বলা হয়, বাচ্চাদেরকে একেবারে অল্প বয়সেই ডিম এবং বাদাম খাওয়ানো শুরু করলে এসব খাবারের ফলে তাদের অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে। বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত।
গবেষক দল ‘মোটামুটি নিশ্চিত’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন, কারণ গবেষণা প্রতিবেদনটি বিভিন্ন গবেষণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। আর গবেষণাগুলো একটি আরেকটি থেকে গুণগত মান এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার দিকে থেকেও আলাদা।
গবেষকরা উপসংহারে বলেন, ডিম ও বাদাম খাওয়ানোর অনুকূল সময় খুঁজে বের করার জন্য আরো গবেষণা করা দরকার। ইউরোপ-আমেরিকায় অ্যালার্জির সমস্যা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এবং দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিবছর যুক্তরাজ্যে অ্যালার্জিতে আক্রান্তদের সংখ্যা পাঁচ শতাংশ হারে বাড়ছে। আর অ্যালার্জিতে আক্রান্তদের অর্ধেকই শিশু।
অ্যালার্জি ইউকে এর হিসেব মতে, ১৯৯০ সালের পর থেকে খাদ্যজনিত অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা ৫০০% বেড়েছে। আর বিশ্বের শীর্ষ তিন অ্যালার্জি আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্য একটি।
অ্যালার্জি ইউকে এর ক্লিনিকাল সার্ভিসের প্রধান আমেনা ওয়ার্নার দ্য ইনডিপেনডেন্টকে বলেন, “এখন এ ব্যাপারে যথেষ্ট পরিমাণ বিজ্ঞানসম্মত সাক্ষ্যপ্রমাণই রয়েছে যে, ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ বাচ্চাদেরকে খুব অল্প বয়সেই (৪-১১ মাস) বাদামযুক্ত খাবার যেমন বাদামের মাখন বা হালুয়া খাওয়ানো শুরু করা দরকার (৫ বছরের আগে আস্ত বাদাম খাওয়ানো শুরু করা যাবে না)। বিশেষ করে সেসব দেশে যেসব দেশে বাদাম অ্যালার্জির প্রাদুর্ভাব ঘটেছে (যেমন যুক্তরাজ্য)। কারণ দেরিতে বাদাম জাতীয় খাবার খাওয়ানো শুরু করার ফলে পরবর্তী জীবনে বাদাম অ্যালার্জিতে আক্রান্ত ঝুঁকি কয়েকগুন বেড়ে যাবে।”
উল্লেখ্য, যেসব খাবারে অ্যালার্জি হয় তার মধ্যে সবচেয়ে পরিচিতগুলো হলো: বাদাম, তিল, গরুর দুধ, সয়া, ডিম, গাছ বাদাম, চিনা বাদাম, গম, মাছ এবং খোলাওয়ালা মাছ।
তবে যেসব লোকের ইতিমধ্যেই বিশেষ বিশেষ খাবারের প্রতি অ্যালার্জি তৈরি হয়েছে, তাদের আর এখন খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করেও কোনো লাভ হবে না।