৩৭ বছর পরও বিচার পেলো না রূপ, জ্যান্ত স্বামীর চিতায় পোড়ানোর পরও বেকসুর ৮
রূপ কানোয়ারকে সতী করার পর তাঁর চিতাকে মন্দির করে পুজোপাঠ শুরু হয়। গ্রাম-গ্রামান্তর থেকে, ভিনরাজ্য থেকেও পুণ্যার্জনের টোপে পা দিয়ে গ্রামে ভিড় জমাতে শুরু করেন মানুষজন। সেদিন এই সতীদাহকে মহিমান্বিত করেছিল যারা সেই ৮ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তারপর দীর্ঘ ৩৭ বছর কেটে গেলেও তাদের অপরাধ প্রমাণ করতে পারেনি পুলিশ। তাই এই মামলায় গঠিত বিশেষ আদালত প্রমাণাভাবে বেনিফিট অফ ডাইটের ভিত্তিতে বেকসুর মুক্তি দিয়েছে বুধবার।
সতী নিবারণ আদালতের বিশেষ বিচারক অক্ষি কানসাল বুধবার মহেন্দ্র সিং, শ্রাবণ সিং, নিহাল সিং, জিতেন্দ্র সিং, উদয় সিং, দশরথ সিং, লক্ষ্মণ সিং ও ভাঁওয়ার সিংকে খালাস করে দেন। এই ৮ জনই জামিনে মুক্ত ছিলেন। আসামি পক্ষের আইনজীবী জানান, আদালতের চূড়ান্ত রায় হাতে আসেনি। তবে আদালত রায় দিয়ে দিয়েছে। বিচারক জানিয়েছেন, সরকারপক্ষ এদের বিরুদ্ধে বিশেষ কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি, যাতে তাঁদের বিরুদ্ধে অপরাধ সাব্যস্ত হতে পারে। তাই তাঁদের বেনিফিট অফ ডাউটে মুক্তি দেওয়া হল।
উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালের জানুয়ারিতে রাজস্থানের সিকরে রূপ কানোয়ারের সঙ্গে বিয়ে হয় মাল সিং দেওরালার এক যুবকের। বাড়ির ৬ ভাইবোনের মধ্যে অষ্টাদশী রূপ কানোয়ার ছিলেন সকলের ছোট। কিন্তু বিয়ের মাত্র ৮ মাসের মাথায় এক অসুখে সিকর হাসপাতালে মৃত্যু হয় মাল সিংয়ের। ১৯৮৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর স্বামীর চিতার উপর বসে রূপ কানোয়ারকে সতী করা হয়। তারপর থেকে সতী মাহাত্ম্য প্রচারের জন্য এই খুনকে ব্যবসায় পরিণত হয়। সতীদাহ বিরোধী আইনে ৪৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেইবার নতুন একটি আইনও আলাদা করে পাশ হয়। যাতে ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ৩০ হাজার টাকা জরিমানার শাস্তি আনা হয়।