করোনাকালে পাকিস্তানে আকাশছোয়া ‘নিষিদ্ধ’ মদের বাজার
কলকাতা টাইমস :
পাকিস্তানে মদ কেনা নিষিদ্ধ হলেও দাম কিন্তু আকাশছোয়া। শুধু তাই নয় নিষিদ্ধ মদ কিনতেই পাকিস্তানিদের হুড়োহুড়ি চোখে পড়ার মত। করোনাকালে মানুষের মধ্যে মদ কেনার প্রবণতা বাড়ছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মদের দাম। করোনাকালে মদের সরবরাহ কমায় দাম বেড়েছে। আইনি বা কালোবাজারে মদের জোগান কম এজন্য দাম বেড়েছে বেশি।
পাকিস্তান মদ পান নিষেধ থাকলেও বিষয়টি সকলে মানেন না। যাদের কাছে অর্থ আছে, তারা চড়া দামে কালোবাজার থেকে মদ কেনেন। যাদের আয় কম, তারা কম দামের মদ কেনার দিকে ঝোঁকেন।
পাকিস্তানে ১৯৭৭ থেকে অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রিত। তখন জুলফিকার আলি ভুট্টোর সরকার মদ নিষিদ্ধ করে আইন পাস করে। শুধু কিছু বার ও ক্লাবে মদ পাওয়া যেত। পরে ১৯৭৯ সালে জেনারেল জিয়া উল হকের শাসনে ঘোষণা করা হয়, মদ খাওয়া ইসলাম-বিরোধী। মুসলিমদের কাছে মদ বিক্রি করা হলে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করেন তিনি। তবে কিছু অঞ্চলে অ-মুসলিমদের জন্য মদের দোকান খোলা রাখার অনুমতি দেয়া হয়। প্রচুর কর দিয়ে কয়েকটি অঞ্চলে অমুসলিমরা এই দোকান চালাতে পারে।
পাকিস্তানের সব চেয়ে জনবহুল শহর হলো করাচি। সেখানে একটি মদের দোকানে কাজ করেন হিন্দু যুবক রাহুল। সেখানে যারা মুসলিম নন, তাদের কাছে মদ বিক্রি করা যেতে পারে। তবে রাহুল জানিয়েছেন, তাকে অর্থ দিলেই তিনি মদ দেন।
রাহুল জানিয়েছেন, ”হিন্দু, মুসলিম, ক্রিশ্চানদের অনেকেই মদ খান। কার ধর্ম কী তা দেখা আমার কাজ নয়। তবে আমাকে সতর্ক থাকতে হয়।” তার মতে, ”এই ব্যবসায় সতর্ক না হলে যে কেউ বিপদে ফেলে দিতে পারে।”
রাহুল জানিয়েছেন, তিনি মদ বিক্রি করে মাসে ২৫ হাজার টাকার মতো রোজগার করেন। বড়লোক ক্রেতারা তাকে টিপসও দেন। আগে তিনি তুলা-শ্রমিক ছিলেন। তার থেকে এখন অনেক বেশি রোজগার করছেন।
করাচিতে রাহুলের মদের দোকান হলো অদ্বিতীয়। বাকি পাকিস্তানে এমন দোকান দেখতে পাওয়া যায় না। মুসলিম ক্রেতারা কালোবাজার থেকেই মদ কেনেন। অনুমোদিত মদের দোকানে তাও দাম নিয়ন্ত্রিত থাকে। বাকি পাকিস্তানে কালোবাজারে করোনার সময় মদের দাম অনেক বেড়ে গেছে।
ওমর হলেন পাকিস্তানের ৩৭ বছর বয়সী গায়ক। তিনি জানিয়েছেন, মদের দাম বেড়ে গেলেও আরো বেশি মানুষ তা কিনে খাচ্ছেন। তিনি বলেন, ”গত বছর পর্যন্ত আমি অন্যদের সঙ্গে বসে মদ খেতাম। এখন রোজ একা খাই।” তবে তিনি জানিয়েছেন, ”পাকিস্তানে যারা মদ খান, সামাজিক কারণে তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন বোধ করেন।”