ব্লগে মায়ের স্মৃতিচারণ করলেন অমিতাভ
কলকাতা টাইমসঃ
বলিউডের স্বনামধন্য অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন প্রায়ই বাবা-মার সঙ্গে নিজের সম্পর্কের বিষয়ে খোলামেলা কথা বলে থাকেন। বচ্চন পরিবারের পারিবারিক বন্ধন বলিউডেও প্রশংসিত। গতকাল ১২ আগস্ট ছিল অমিতাভ বচ্চনের মা তেজি বচ্চনের জন্মদিন। এদিন মায়ের বেশ কিছু ছবি শেয়ার করে তাঁর স্মৃতিচারণ করেছেন তিনি।
তিনি লিখছেন…..
আজ, ১২ আগস্ট মায়ের জন্মদিন। যখন আপনি ব্যর্থ হবেন মা আপনাকে সান্ত্বনা দেবেন, আশা জাগাবেন। সফল হলে তিনিই চোখের জল ফেলবেন। জীবনের শেষ দিনগুলো পর্যন্ত আমার মা বারবার জানতে চেয়েছেন আমি খেয়েছি কী না, কখন বাইরে যাচ্ছি… বলতেন ঘরে ফিরতে দেরি করা যাবে না। তত দিনে আমার নাতি-নাতনি পর্যন্ত হয়ে গেছে… কিন্তু মায়েরা তো এমনই!
এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা দিয়ে শুরু হত দিনটা। তার কথা, তার কমনীয় উপস্থিতি এবং তার চলার ধরন, যখন তিনি লাহোরের সেই কলেজের করিডর দিয়ে দ্রুত হেঁটে যেতেন… সেখানে তিনি কিছু সময় শিক্ষকতা করেছিলেন, শিক্ষার্থীরা তার জন্য অপেক্ষা করে থাকতো, দেখার জন্য তিনি কী পরেছেন। কোন সুগন্ধিটা মেখেছেন তা জানতে, যারা তারা সেই ভাবে অনুসরণ করতে পারে। তিনি গাড়ি চালাতে ভালোবাসতেন, প্রথম সুযোগেই তিনি সবাইকে গাড়িতে তুলে নেন, কফি খেতে নিয়ে গিয়েছিলেন সেদিন, গাড়ি করে তার পছন্দের খাবার খাওয়াতে নিয়ে যেতেন, প্রজাতন্ত্র দিবসে রাষ্ট্রপতি ভবনের আলোকসজ্জা দেখতেও গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন, হাসি-গান-সুখ তাকে সর্বদা ঘিরে থাকতো।
এমনকি যখন তিনি হুইল চেয়ারে চলাচল করতেন তখনও, সন্ধ্যায় গাড়ি চালিয়ে স্ন্যাক্স ও কফি পান করাটা নিয়মের মতোই ছিল। রেস্তোরাঁর মালিক তাকে এখনো প্রতিদিন স্মরণ করেন। শুধু মুম্বাই শহরেই নয়, দিল্লির কিছু জায়গাতেও লোকজন এখনো আমার সঙ্গে দেখা করতে আসে এবং খুব আনন্দের সাথে মায়ের সঙ্গে কাটানো সময়গুলোর কথা স্মরণ করে। বাবার জন্য মা নিজের সবকিছু উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন। তিনি জানতেন একজন কবি, চিন্তাবিদ ও দার্শনিকের জন্য এই সব করাটা কতটা জরুরি ছিল। তিনি আমাকে থিয়েটারে নিয়ে গিয়েছিলেন, সিনেমা, সঙ্গীতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন, বলরুম ডান্সিংয়েও… এক সন্ধ্যায় তিনি আমাকে গেলোর্ডসের ফ্লোরে নিয়ে গিয়েছিলেন।
তার ফ্যাশন ও সৌন্দর্যবোধের কোনো তুলনা হয় না। লাল গোলাপ তিনি খুব ভালোবাসতেন, তার সব বাড়িতেই এই ফুলটি থাকতেই হতো। বার্ষিক ফুল প্রদর্শনীতে তার গোলাপ বাগান ও অন্যান্য বাগান পুরস্কারও জিতত। তিনি দানশীল ছিলেন, তার সবকিছুতেই বন্ধু, কর্মচারী ও কাছের লোকজনের ভাগ ছিল। শুধু তার স্মৃতি সাথে আছে, আমার কাছে এসব অন্য যে কোনো বিষয়ের চেয়েও মূল্যবান।