আর ৯ বছর, ধেয়ে আসছে পৃথিবীতে মহাতাণ্ডব!
কলকাতা টাইমস :
২০৩০ সালের মধ্যেই পৃথিবীতে শুরু হবে মহাতাণ্ডব! জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দ্রুত গরম হচ্ছে বিশ্বের মহাসাগরগুলি। ধে’য়ে আসছে প্রাকৃতিক বিপ’র্যয়। জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করেন এমন বিজ্ঞানীরা বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি নিয়ে আশং’কা প্রকাশ করেছেন। অবিলম্বে পদক্ষেপ না নিলে ভ’য়াব’হ পরিণতির ব্যাপারেও সত’র্ক করে দিয়েছেন তারা।
মহাসাগরগুলি গরম হবার ফলে আটলান্টিক মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগর সংলগ্ন অঞ্চলে ঘূ’র্ণিঝ’ড় বাড়বে বলে জানাচ্ছে নাসা।
বর্তমানে যে হারে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ হচ্ছে, তাতে ২০৩০ সালের মধ্যে গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয়ে যাবে। এমনটাই জানিয়েছে, ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ বা আইপিসিসি। ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রার ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি সমুদ্রে পানির উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট এবং তার ফলে বিশ্বজুড়ে ভ’য়াব’হ ঝ’ড়, বন্যা এবং খ’রা দেখা দিতে পারে।
সাগর উষ্ণ হলে সেখানে বাস করা প্রাণীদের জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। মাছসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণীর জলের তাপমাত্রা বাড়ার ফলে নিজেদের বাসস্থান বদলাতে বাধ্য হচ্ছে। তাপমাত্রা বাড়ার ফলে পানিতে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়ে। এর ফলে, সাগরের পানিতে অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এই বাড়ন্ত অ্যাসিডের জন্য মারা যাচ্ছে বেশ কিছু দুর্লভ প্রাণী, নানা প্রজাতির শ্যাওলা।
পানি গরম হলে সেখানকার অক্সিজেনের মাত্রা কমতে থাকে। উষ্ণায়নের ফলে বাড়ন্ত তাপমাত্রা বিশ্বজুড়ে সাগর, নদী ও হ্রদকে করে তুলছে বিষা’ক্ত, অ্যাসিডযুক্ত। সাথে অক্সিজেনের মাত্রা কমায় প্রাণীরা নিঃশ্বাস নেবার জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না। গরম, অক্সিজেনহীন জলে বিষাক্ত শ্যাওলা জন্ম নেয়। এর আগে চিলির উপকূলে লাল রঙের বিষা’ক্ত শ্যাওলা বাড়ার ফলে হাজার হাজার মাছ মা’রা যায়। এমন জিনিস ভবিষ্যতে অন্যান্য জায়গাতেও দেখা যেতে পারে বলে আশ’ঙ্কা করছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
জলের তাপমাত্রা বদলের ফলে বদলে যায় ঢেউয়ের চলন পথ। এর ফলে কিছু কিছু প্রাণী সাগর থেকে অন্যত্র গিয়ে পড়ছে। একদিকে কিছু কিছু অঞ্চল আগের থেকে বেশি ঠান্ডা হচ্ছে, আরেকদিকে অন্যান্য অঞ্চলে তাপমাত্রার পারদ ভা’ঙছে সমস্ত রেকর্ড। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে এমন ব্যাপক বদল পৃথিবীর প্রাণীবৈচিত্র্য বদলে দিচ্ছে। বিপদের সম্মুখীন অসংখ্য প্রাণীদের জীবন।
অ্যান্টার্কটিকার তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে অ্যামেরিকার গ্রীষ্মপ্রধান শহর লস এঞ্জেলেসের কাছাকাছি হয়েছে ফেব্রুয়ারি মাসে। উত্তর অ্যান্টার্কটিকার আর্জেন্টিনিয়ান গবেষণা স্থল এসপেরেনজা বেসের তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অ্যান্টার্কটিকায় গবেষকরা তাপমাত্রা মাপা শুরু করার পর থেকে আজ পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা। নাসা বলছে, তাপমাত্রা বাড়ার ফলে বরফ গলে পুকুর সৃষ্টি হয়েছে।
উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরুতে বরফ গলার কারণে বাড়ছে সমুদ্র স্তরের উচ্চতা। সমুদ্রতটবর্তী অঞ্চলে যেসব মানুষের বসবাস, বিপদগ্র’স্ত হচ্ছে তাদের জীবন। শুধু তাই নয়, পৃথিবীর সার্বিক তাপমাত্রা বাড়ার ফলে এমন সব জায়গায় ঝ’ড়ের প্রবণতা বাড়ছে, যা আগে হয়তো সেভাবে ক্ষ’তিগ্র’স্ত হতো না।
চ’র’ম আবহাওয়ার ফলে শুধু সমুদ্রস্তরই বাড়ছে না, কিছু কিছু অঞ্চলে বাড়ছে শু’ষ্কতাও। নাসা জানাচ্ছে, খরা বাড়ার ফলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি সময় ধ’রে চলবে দা’বান’ল।