ক্যান্সারযুক্ত মাংস কিনছেন না তো? কি করবেন জানেন
কলকাতা টাইমস :
আমরা যে মাংস খাই তার সঙ্গে ক্যান্সারের সম্পর্কের বিষয়ে সুস্পষ্ট অবস্থানে বিজ্ঞানীরা পৌঁছেছেন আগেই। এ তালিকায় আছে অনেক ধরনের মাংস। তবে বিশেষ করে রেড মিট বা লাল মাংস বাওয়েল ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। হয়তো ভাবছেন রেড মিট এমনিতেই তেমন খাওয়া হয় না। কিন্তু মাঝে মধ্যে হলেও তো খাচ্ছেন? কিংবা বেকন, হ্যাম বা সসেজের মতো প্রক্রিয়াজাত মাংস বেশ প্রিয় আপনার। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আপনি যেটাই খান না কেন, ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, লাল মাংস কিংবা প্রক্রিয়াজাত মাংস উভয়ই ক্যান্সারের নেপথ্যে থাকতে সক্ষম। কারণ এসব গরু, ছাগল বা মুরগির বাণিজ্যিক উৎপাদন ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করেছে। এদের কারণে ক্যান্সারে আক্রান্ত মাংস আপনার দেহে প্রবেশ করছে।
আমাদের বাজারে অহরহ যেসব মাংস বিক্রি হয় তার সম্পর্কে আপনার কোনো ধারণাই নেই। এতেই লুকিয়ে থাকতে পারে ক্যান্সারের বীজ। বিক্রেতারা পর্যাপ্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া কোনভাবেই তাদের মাংস নিরাপদ বলে দাবি করতে পারে না। কিন্তু সাবধান তো থাকতেই হবে। আপনি সচেতন হলে অনেকটা নিরাপদ থাকা সম্ভব। করণীয় সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
নিজেরটা নিজেই করুন
যদি পারেন তো খুবই ভালো। বাড়িতে উঠোন থাকলে তো কথাই নেই। বারান্দাতেও মুরগি পালতে পারেন। ছাদে আরো ভালো। মাংস তো বটেই, ডিমও মিলবে যদি নিজে পালন করতে পারেন। যদিও এমন সুবিধা খুব বেশি মানুষের নেই। তবুও বিশেষজ্ঞরা বলেন, পারলে মুরগি বা গরু বা ছাগল পালন করে মাংসের চাহিদা মেটাতে পারেন। ভালো ব্যবসাও প্রতিষ্ঠিত হতে কতক্ষণ!
পরখ করে নিন
বাজার থেকে যে মাংস কিনছেন তা দুই বার বা তিন বার দেখে নিন। বড় সুপার শপ থেকেই হোক কিংবা স্থানীয় বাজার থেকে, খুঁটিয়ে দেখে নেয়ার বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যকর মাংসের কোনো স্থানে অন্য রং থাকবে না। মানে পুরোটা লাল, কিন্তু কিছু অংশ ফ্যাকাসে হয়ে আছে কিনা তা দেখুন। কোথাও অস্বাভাবিক পিণ্ড গজিয়েছে কিনা তাও দেখে নিন। তবে ভালো দোকান হলে মাংস কোথা থেকে এসেছে, উৎস পরীক্ষিত কিনা ইত্যাদি বিক্রেতা আপনাকে জানাতে বাধ্য। নয়তো নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। লাল মাংসের কোথাও গোলাকার বা অন্য কোনো আকৃতিতে ফ্যাকাশে রং বা বাড়তি গজিয়ে ওঠা পিণ্ড থাকলে তা অবশ্যই ্এড়িয়ে যাবেন।
কম খান
বাধ্য হয়ে মাংস কেনা কমাতে হলেও তা ভালো বুদ্ধি। মাংস খাওয়া কমিয়ে দিন। নিজের এবং পরিবারের স্বাস্থ্যের ওপর আপনি ঝুঁকি নিতে পারেন না। মাসে বা সপ্তাহে যতটুকু মাংস খাচ্ছেন তা পরিমাণে একেবারে কমিয়ে আনুন। এতে ঝুঁকির মাত্রা অবশ্যই অনেকটা কমে আসবে। প্রোটিনের অন্যান্য উৎসের ওপর নির্ভরতা আনুন।
বাদ দিন
খাবারের মেনু থেকে মাংস একেবারে বাদ দিন। তাহলে মাংস থেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আর থাকল না। প্রাণীজ আমিষ ছাড়াই মানুষ অনেক ভালো থাকে তা পরীক্ষিত সত্য। অনেক মানুষই নিরামিষভোজী হয়ে দিব্যি ভালো আছেন। উদ্ভিদ জগতেও প্রোটিনের অনন্য সব উৎস আছে।
শেষবারের মতো…
আমেরিকান ইনস্টিটিউট ফর ক্যান্সার রিসার্চ খাদ্যজনিত ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করার পাশাপাশি ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যতালিকা প্রস্তুতে নানা টিপস দেয়। আধুনিক জীবনে সুপারশপ বা বাড়ির নিচের দোকানে বিক্রি হওয়া রেড মিট কিংবা প্রক্রিয়াজাত মাংস প্রাণীজ আমিষ সংগ্রহের সহজ সমাধান হয়ে উঠেছে। কিন্তু এতে আপনার জীবন রীতিমতো হুমকির মুখে পড়েছে। তাই সচেতন আপনাকেই হতে হবে। এ ধরনের অনেক ঘটনার সাক্ষী হয়তো আপনি যে, অস্বাস্থ্যকর মাংস দেদারসে বিক্রি করতে দেখেছেন বিক্রেতাদের। এমন অনেক খবর হরহামেশাই দেখে থাকেন। কাজেই কিনতে চাইলে নিজের অভিজ্ঞতাকে শানিয়ে নিতে হবে। টাটকা দেখায় এমন মাংস কিনবেন। ভালোমতো এদিক সেদিক উল্টিয়ে দেখুন। বাড়তি অস্বাভাবিক মাংসপিণ্ডের অস্তিত্ব রয়েছে কিংবা ফ্যাকাসে রংয়ের মাংস কোনো অবস্থানেই কিনবেন না। এসব অংশ সাধারণত ক্যান্সারের আক্রান্ত হয় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।