ভ্যাকসিনে ভিআইপিরা আগে, পদ হারালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী
কলকাতা টাইমস :
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন নিতে ভিআইপি এবং সরকার-ঘনিষ্ঠরা বিশেষ সুবিধা পাওয়ায় পদত্যাগে বাধ্য হলেন আর্জেন্টিনার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জিনস গঞ্জালেজ গার্সিয়া। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হওয়ায় প্রেসিডেন্টের নির্দেশে গত শুক্রবার পদত্যাগ করেছেন তিনি।
পদত্যাগের পর এক টুইটে গার্সিয়া দাবি করেছেন, তিনি দূরে থাকাকালীন তার কার্যালয়ের ‘অনিচ্ছাকৃত বিভ্রান্তি’র কারণে কিছু লোক সঠিক প্রক্রিয়া পাশ কাটিয়ে ভ্যাকসিন নিতে পেরেছেন।
আর্জেন্টাইন সরকার সংশ্লিষ্ট দু’টি সূত্র এর আগে জানিয়েছিল, দেশে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই অন্তত ১০ জন ভ্যাকসিন পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে একজন দাবি করেছেন, তিনি সরাসরি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেই ভ্যাকসিন পেয়েছেন।
এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয় আর্জেন্টিনায়, যার কারণে আর্জেন্টাইন প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফার্নান্দেজ গার্সিয়াকে পদত্যাগ করতে বলেন বলে জানা গেছে।
লাতিন আমেরিকার এ অঞ্চলটিতে এমনিতেই ভ্যাকসিনের ঘাটতি রয়েছে। তার মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে এ অঞ্চলেরই আরেক দেশ পেরুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভ্যাকসিন কেলেঙ্কারিতে পদত্যাগ করেছেন। সেখানকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন নেওয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে রীতিমতো তদন্ত চলছে।
গত ডিসেম্বর থেকে রাশিয়ার স্পুটনিক ফাইভ ভ্যাকসিন ব্যবহার করছে আর্জেন্টিনা। তবে ভ্যাকসিনের সরবরাহ যেমনটা আশা করা হয়েছিল তার ধারেকাছেও যেতে পারেনি দেশটি। প্রথম ধাপে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের ভ্যাকসিন দিচ্ছে আর্জেন্টিনা। চলতি সপ্তাহ থেকে ৭০ বছরের বেশি বয়সী কিছু ব্যক্তিকেও ভ্যাকসিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
তবে সরকারি নীতি না মেনে অনেকেই ব্যক্তিগত যোগাযোগ ব্যবহার করে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আর্জেন্টিনার সুপরিচিত সাংবাদিক হোরাসিও ভার্বিটস্কি স্থানীয় একটি রেডিওকে বলেছিলেন, ‘আমি আমার পুরোনো বন্ধু জিনস গঞ্জালেস গার্সিয়াকে ফোন করলে তিনি আমাকে পোসাদাস হাসপাতালে যেতে বলেন।’ সেখানেই ভ্যাকসিন নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এ ব্যক্তি।
গত বুধবার পর্যন্ত আর্জেন্টিনার প্রায় আড়াই লাখ মানুষ করোনা ভ্যাকসিনের দু’টি করে ডোজ পেয়েছেন। প্রায় সাড়ে চার কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে এপর্যন্ত ২০ লাখের বেশি মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন ৫১ হাজারের বেশি।