যত চা তত দৃষ্টি !
কলকাতা টাইমস :
সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে দিনে অন্তত একবার চা পান করলে গ্লুকোমার মতো চোখের রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৭৪% কমে যায়। গ্লকোমা রোগে আক্রান্ত হলে চোখের ভেতরে চাপ বাড়তে শুরু করে। ফলে অপটিক নার্ভ এত মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্থ হয় যে দৃষ্টিশক্তি কমতে শুরু করে। লাল চায়ের সঙ্গে দৃষ্টিশক্তির ভাল-মন্দের সরাসরি যোগ রয়েছে। চা পানের সঙ্গে দৃষ্টিশক্তির উন্নতির সম্পর্কটা ঠিক কোথায়? আসলে চায়ের মধ্যে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রপাটিজ এংব নিউরো প্রোটেকটিভ কেমিকাল এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে এই উপাদানগুলি যে শুধু চোখেরই খেয়াল রাখে, এমন নয়। সেই সঙ্গে আরও নানাভাবে শরীরের উপকারে লেগে থাকে। যেমন…
১. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়
প্রতিদিন লাল চা খেলে হজম ক্ষমতা ভাল হতে শুরু করে। আসলে এতে রয়েছে টেনিস নামে একটি উপাদান, যা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটানোর পাশপাশি গ্যাস্ট্রিক এবং নানা ধরনের ইন্টেস্টিনাল রোগ সরাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. ক্যান্সার রোগকে প্রতিরোধ করে
একদম ঠিক শুনেছেন। প্রতিদিন কয়েক কাপ লাল চা আপনাকে এই মারণ রোগের হাত থেকে বাঁচাতে পারে। আসলে এই পানীয়তে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রপার্টিজ সহ এমন কিছু উপাদান, যা লাং, প্রস্টেট, কলোরেকটাল, ব্লাডার, ওরাল এবং ওভারিয়ান ক্যান্সারকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, লাল চা শরীরের যে কোনও অংশে ম্যালিগনেন্ট টিউমারের বৃদ্ধি আটকাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৩. হার্ট চাঙ্গা হয়ে ওঠে
হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে লাল চায়ের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই পানীয়তে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট প্রপার্টিজ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা একেবারে কমিয়ে দেয়। প্রসঙ্গত, স্ট্রোকের সম্ভাবনা কমাতেও লাল চা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৪. মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
লাল চায়ে ক্যাফেইনের পরিমাণ কম থাকায় এই পানীয়টি মস্তিষ্কে রক্তচলাচলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে ব্রেনের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে স্ট্রেস কমে। প্রসঙ্গত, একটি গবেষণায় দেখা গেছে এক মাস টানা যদি লাল চা খাওয়া যায়, তাহলে পারকিনসন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
নানাবিধ অসুস্থতার প্রকোপ থেকে বাঁচতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটা একান্ত প্রয়োজন। আর এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে লাল চা। এখানেই শেষ নয়, এই পানীয়তে টেনিস নামে একটি উপাদান রয়েছে, যা নানা ধরনের ক্ষতিকর ভাইরাসের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ফলে সহজে কোনও রোগ ছুঁতে পারে না।
৬. ওজন হ্রাস করে
লাল চা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। ফলে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমার সুযোগই পায় না। তাই আপনি যদি ওজন কমাতে বদ্ধপরিকর হন, তাহলে আজ থেকেই খাওয়া শুরু করুন এই পানীয়।
৭. হাড়কে শক্তপোক্ত করে
লাল চায়ে উপস্থিত ফাইটোকেমিকালস হাড়কে শক্ত করে। ফলে আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
৮. মুখ গহ্বরের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
লাল চায়ে উপস্থিত একাধিক উপাকারি উপাদান মুখের ভেতরে বাসা বেঁধে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াদের মেরে ফেলে। ফলে মুখের দুর্গন্ধ যেমন দূর হয়, তেমনি ক্যাভিটির মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কাও কমে। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ওরাল ক্যান্সার প্রতিরোধে লাল চায়ে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই পরিবারে যদি এমন মারণ রোগের ইতিহাস থাকে, তাহলে নিয়মিত লাল চা পান করতে ভুলবেন না যেন!
৯. স্ট্রেস কমায়
লাল চায়ে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড, স্ট্রেস কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেই সঙ্গে মনকে চনমনে করে তুলতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। তাই তো এবার থেকে যখনই মনে হবে মন একেবারে দুখি দুখি হয়ে পড়েছে, তখনই এক কাপ গরম গরম লাল চা খেয়ে ফেলবেন। দেখবেন নিমেষে মন ভাল হয়ে যাবে।
১০. ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়
নিয়মিত লাল চা পানের অভ্যাস করলে স্কিন টোনের উন্নতি ঘটে, সেই সঙ্গে সার্বিকভাবে সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায়। আসলে এই পানীয়টিতে উপস্থিত ভিটামিন বি২, সি, ই, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং জিঙ্ক এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে স্কিন ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, লাল চা পান করলে ত্বকের বয়সও নাকি কমতে শুরু করে, এমনটাই দাবি করা হয়েছে বেশ কিছু স্টাডিতে।