ভুঁড়ি শেষ হলে তবেই চাকরি, হুইপ জারি এই রাজ্যের কর্মচারীদের
কলকাতা টাইমস :
শারীরিক কসরত তাদের নিত্য ব্যাপার। শুধু কি চোর-ডাকাত, সঙ্গে রয়েছে জঙ্গিদের সঙ্গে মুখোমুখি বন্দুকের লড়াই, আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, বিশেষ করে রাজনৈতিক দলের আইন অমান্য আন্দোলনের মোকাবিলা পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ কাজের একটি । সেই পুলিশ যদি হয় শারীরিক ভাবে দুর্বল সরি বলা ভালো অতি ওজনে ভারাক্রান্ত তাহলে?
পুলিশের কাজের জন্যই চাই সুস্থ শরীর। এই বিষয়ে অর্থাৎ শারীরিক সক্ষমতার কোনও আন্তর্জাতিক ইনডেক্স তৈরি করলে ভারতীয় পুলিশের স্থান খুব আশাব্যঞ্জক হবে না, বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত রিপোর্টেই তা স্পষ্ট হয়েছে। আর এই বিষয়ে যাবতীয় পরামর্শের মূল কথা, পুলিশের ভুঁড়ি ও ওজন কমানোর অভিযান দরকার।
দেশের একটি রাজ্য অন্তত সেই পরামর্শ কার্যকর করতে চলেছে। অসম পুলিশের ডিজি জেপি সিং মঙ্গলবার গুয়াহাটিতে ঘোষণা করছেন, তিন মাসের মধ্যে রাজ্যের পুলিশ বাহিনীকে ভুঁড়ি ও ওজন কমাতে হবে। তিন মাস পর শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা নেওয়া হবে। তাতে উত্তীর্ণ না হলে চাকরি যাবে। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মীকে আগাম অবসর দিয়ে বসিয়ে দেবে সরকার ।
ডিজি এই অপ্রিয় ঘোষণাটির সময় বারে বারে জানিয়েছেন, সিদ্ধান্তটি স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নিয়েছেন। বারে বারে মুখ্যমন্ত্রীর নাম স্মরণ করার উদ্দেশ্য দুটি। এক, সহকর্মীদের বার্তা দেওয়া এমন অপ্রিয় সিদ্ধান্তের দায় তাঁর নয়। দুই, পুলিশ বাহিনীকে বুঝিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তটি হালকা ভাবে না নিতে। কারণ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন তাঁরা।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত অসমের স্বরাষ্ট্র তথা পুলিশ দফতরেরও মন্ত্রী। তিনি রাজ্যের পুলিশ বাহিনীকে দেশের সেরা করে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছেন।
গত মাসে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ঘোষণা করেন, অসম পুলিশের তিনশো কর্মীকে সরকার চাকরি থেকে বসিয়ে দেবে। তাদের জায়গায় নতুন পুলিশ কর্মী নিয়োগ করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ওই তিনশো পুলিশ কর্মী মদ্যপ। তারা কাজ করে না। কাজের পরিবেশ নষ্ট করে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, অত্যন্ত গোপনে ওই পুলিশ কর্মীদের আচার আচরণ নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেছে স্বরাষ্ট্র দফতর। বারে বারে বলা সত্ত্বেও মদ্যপ পুলিশ কর্মীদের নেশা ছাড়ানো যায়নি। তাই এই কঠোর সিদ্ধান্ত।
এবার সব পুলিশের শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিজি জানিয়েছেন আইপিএস এবং অসম ক্যাডারের অফিসাররাও এই নির্দেশিকার আওতায় পড়বেন। অর্থাৎ ডিজি নিজেও এই সিদ্ধান্তের বাইরে নন।
যদিও পুলিশ কর্মীদের বক্তব্য, কাজের চাপেই তাদের শারীরিক সক্ষমতার অভাব হচ্ছে। ব্রিটিশ আমলে নিয়ম ছিল প্রতিদিন সকালে পুলিশ কর্মীরা থানার উঠোনে পিটি করবেন।
সেই নিয়ম বহুকাল উঠে গেছে কাজের চাপে। তাছাড়া কোয়ার্টার না থাকায় অধিকাংশ পুলিশ কর্মী বাড়ি থেকে যাতায়াত করেন। ফলে শরীরের যত্ন নেওয়ার সুযোগ মেলে না। কাজের চরিত্রের কারণেই খাওয়াদাওয়ারও অনিয়ম হয়।
কিন্তু অসম সরকার এসব কথা কানে তুলতে নারাজ। মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, পুলিশকে ভুঁড়ি এবং ওজন কমাতেই হবে, নইলে চাকরি ছাড়তে হবে।