দেরি কেন? সিরাম-এর কাছে জবাব চাইল অ্যাস্ট্রাজেনেকা

কলকাতা টাইমস :
বিদেশে ভ্যাকসিন সরবরাহে দেরি হওয়ায় ভারতের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউটকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ফার্মাসিউটিক্যালস। কোম্পানিটির ভ্যাকসিন সরবরাহের জন্য সিরামের উপর নির্ভর করছে পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশ। এদিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে ভারত সরকার। ভারতকে প্রাধান্য দিয়ে তারপর বিদেশে ভ্যাকসিন পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে সিরাম ইনস্টিটিউট। এ নিয়েই তৈরি হয়েছে সমস্যা।
ভারতের সংবাদমাধ্যমে সিরামের প্রধান আদর পুনাওয়ালা বলেছেন, ‘ভারত সরকার এই আইনি নোটিশের বিষয়ে বিস্তারিত জানে। এটি গোপন একটি নোটিস, এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে পারব না। তবে সরকারের সাহায্যে আইনি জটিলতা কাটানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভারতে সরবরাহের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণেই অন্য দেশে সরবরাহে দেরি হচ্ছে। আশা করি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’
আদর জানিয়েছেন, প্রতি মাসে ছয় কোটি থেকে সড়ে ছয় কোটি ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারে সিরাম। প্রতিষ্ঠানটি এখন পর্যন্ত ১০ কোটি ভ্যাকসিন ভারতে সরবরাহ করেছে আর ছয় কোটি ভ্যাকসিন বিদেশে পাঠিয়েছে।
তিনি বলেন, ভারতকে প্রাধান্য দেয়ার ফলে ভ্যাকসিনে ঘাটতি পড়ার বিষয়টি অন্য দেশগুলোকে বোঝানো সমস্যাজনক। এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যদি উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হয়, তাহলে আরও প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ দরকার। কিন্তু ভারতে সরকারকে ভর্তুকিতে ভ্যাকসিন বিক্রি করতে হচ্ছে, এতে দাম পড়ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা । অন্য দিকে বিদেশে এই ভ্যাকসিন বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকায়।
আদরের বক্তব্য, প্রতি ভ্যাকসিনে সামান্য লাভ করে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এই বিপুল বিনিয়োগ জোগাড় করা সম্ভব নয়। সে কারণে হয় ঋণ করতে হবে অথবা বড় কোনও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই একমাত্র উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
মজুত থাকা করোনা ভ্যাকসিন দ্রুত ফুরিয়ে আসছে বলে ভারতের বেশ কিছু রাজ্য সম্প্রতি অভিযোগ করেছে। ভ্যাকসিন প্রয়োগে ঘাটতি তৈরি হতে পারে বলে বুধবার জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে। বুধবার রাতে রাজ্যের সাতারা জেলায় ভ্যাকসিনের ডোজ শেষ হয়ে যাওয়ায় গত ৩ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে ভ্যাকসিন প্রয়োগ।
তবে মহারাষ্ট্রের টিকার ঘাটতি নিয়ে রাজেশের এই অভিযোগ মানেননি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন। সব রাজ্যে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের ডোজ পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। হর্ষবর্ধন পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেন, ‘কিছু রাজ্য করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে ব্যর্থ হচ্ছে। সেদিক থেকে নজর ঘোরাতে, সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় ছড়াতে ভ্যাকসিনের ঘাটতির কথা বলছে।’