“এ টি এম” থেকে টাকার সঙ্গে এরা ঢুকছে আপনার সঙ্গে
পরিসংখ্যান বলছে সারা বিশ্বে প্রতিনিয়ত কোটি কোটি মানুষ এটিএম ব্যবহার করে টাকা তুলছেন। সেই সঙ্গে ভয়ঙ্কর মৃত্যুর দিকেও এগিয়ে চলেছেন। মানে! এটিএম থেকে টাকা তোলার সঙ্গে মৃত্যুর কী সম্পর্ক? আছে মশাই আছে! তাই তো এই প্রবন্ধটি লেখা।
আজকাল টাকা তুলোর পরই দেখবেন প্রতিটি এটিএম মেশিনের ডিসপ্লেতেই একটা মেসেজ ভেসে আছে। মেসেজটি হল, “আপনি কি শেষ ট্রানজেকশনের স্লিপ চান?” একটা স্লিপের কারণে বেশ কিছু গাছ মারা মরবে, এই ভেবে অনেকেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে “নো” বাটানটা টিপে থাকেন। তাই তো! কিন্তু আমি যদি বলি গাছ নয়, এবার থেকে নিজের প্রাণ বাঁচাতে নো বাটানটা প্রেস করাটা জরুরি, তাহলে কী বলবেন! আসলে একাধিক কেস স্টডি করে দেখা গেছে টাকার জমা-খরচের হিসেব নিয়ে এটিএম মেশিন থেকে যে স্লিপটি বেরয়, তা শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক। সম্প্রতি ঔরঙ্গবাদের ডাঃ বাবা সাহেব মারাথওয়াডা ইউনিভার্সিটির গবেষকরা একটি পরীক্ষা চলিয়েছিলেন। তাতে দেখা গেছে এটিএম স্লিপে যে কোটিং থাকে তা এমন একটি কেমিকাল দিয়ে বানানো হয়, যা ভয়ঙ্কর রকমের ক্ষতিকারক। প্রসঙ্গত শুধু এটিএম স্লিপ নয়, মল এবং পেট্রল পাম্পে যে স্লিপ দেওয়া হয়, এমনকী বাসের টিকিটেও এই কেমিকাল উপস্থিত থাকে, যা ধীরে ধীরে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে মৃত্যু মুখে ঠেলে দেয় আমাদের জীবনকে। তাই সাবধান হওয়ার সময় এসে গেছে বন্ধুরা। না হলে কিন্তু খুব বিপদ!
বিষের নাম “বি পি এ”:
বি পি এ বা বিসফেনাল হল এমন একটি কেমিকাল যা ১৯৬০ সালের পর থেকে সারা বিশ্বে প্লাস্টিকের জিনিস তৈরিতে কাজে লাগানো হয়ে থাকে। এমনকী প্লাস্টেকর বোতল এবং টিফিন কন্টেনারেও ভেতরের কোটিং তৈরিতেও এই কেমিকালটির ব্য়বহার চোখে পরে। সব থেকে ভয়ের বিষয় হল বি পি এ আমাদের শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। দীর্ঘ সময় ধরে এই উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করলে বন্ধ্যাত্ব, হার্ট ডিজিজ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমে যাওয়া, ক্যান্সার এবং অ্যাস্থেমার মতো রোগের প্রকোপ মারাত্মক বৃদ্ধি পায়। একবার খেয়াল করে দেখুন প্রতিটি রোগই কিন্তু মৃত্যুর আশঙ্কা বাড়ায়, তাই না!
শরীরে এই কেমিকেলের প্রবেশ ঘটে কীভাবে?
টাকা তোলার পর দ্রুত মেশিন থেকে বেরিয়ে আসা স্লিপ যদি ৫ সেকেন্ড হাতে থাকে তাহলেই সব শেষ! কারণ এইটুকু সময়ের মধ্যেই সেই কেমিকাল আমাদের হাতে চলে আসে। আর ভুলবশত সেই হাত মুখে পৌঁছে গেলেই বিপদ! প্রসঙ্গত, কেস স্টিড করে দেখা গেছে পাঁচ সেকেন্ড এই স্লিপ হাতে থাকলে প্রায় ১ মাইক্রোগ্রাম বি পি এ আমাদের আঙুলে লেগে যায়। আর যদি হাত ঘেমে থাকে তাহলে তো প্রায় ১০ মাইক্রোগ্রাম হাতে এসে যায়। এবার বুঝতে পারেছেন তো এটিএম স্লিপ কতটা ভয়ঙ্কর। তাই এবার থেকে ভুলেও টাকা তোলার পর স্লিপ সংগ্রহ করবেন না। একইভাবে বাসে এবং পেট্রল পাম্পে টিকিট অথবা স্লিপ নেওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে তা ফেলে দিয়ে ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নেবেন।
পশ্চিমী দেশে এ টি এম স্লিপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে:
জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখে আমেরিকা, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, সুইডেন এবং কানাডায় এটিএম স্লিপ সংগ্রহ করার উপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে সরকার। আর যদি কেউ ভুলবশত স্লিপ নিয়ে নেয় তাহলে? সেক্ষেত্রে আমেরিকায় যেমন ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩০,০০০ টাকা ফাইন দিতে হয়। এমন ফাইনের ব্য়বস্থা আমাদের দেশে চালু হওয়াটা জরুরি। না হলে যে কী হবে, তা ঈশ্বরই জানেন।