মায়ের জন্মস্থানের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে শিশুর ক্যান্সারের
শিশুর ক্যান্সারের সঙ্গে মায়ের জন্মস্থানের কী কোনো সম্পর্ক রয়েছে? গবেষকরা তেমন প্রমাণই পেয়েছেন মার্কিন গবেষকরা। তারা জানিয়েছেন, মায়ের জন্মস্থানের ওপর নির্ভর করে শিশুর ক্যান্সারের আশঙ্কা হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটতে পারে।
মার্কিন গবেষকরা বলছেন, তারা বেশ কিছু ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর ওপর জরিপ চালিয়ে দেখেছেন, তাদের মায়ের জন্মস্থানের সঙ্গে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে শিশু যদি হিস্প্যানিক মায়ের গর্ভজাত হয়ে থাকে এবং মা যদি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে জন্মগ্রহণ করেন তাহলে তাদের মস্তিষ্ক ও কিডনিতে ক্যান্সার আক্রমণের হার কম হয়। তবে মস্তিষ্ক ও কিডনির ক্যান্সার কম হলেও কিছু ধরনের ব্লাড ক্যান্সার আক্রমণের হার তাদের মাঝে বেশি হয়।
এ গবেষণার জন্য ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের চার মিলিয়নেরও বেশি হিসপানিক ন ও অন্যান্য মায়েদের তথ্য যাচাই করা হয়। এ গবেষণায় তাদের তথ্য যাচাই করা হয় ১৯৮৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। ক্যালিফোর্নিয়া ক্যান্সার রেজিস্ট্রি রেকর্ড অনুযায়ী তাদের মধ্যে ১৩,৯৯৯ জন শিশুর ছয়টি গ্রুপে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে গবেষকদের অন্যতম সদস্য ও গবেষণাপত্রটির লেখক জুলিয়া ই. হেক। তিনি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া- লস অ্যাঞ্জেলস-এর ফিল্ডিং স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষক। তিনি বলেন, তারা বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির মানুষের মাঝে শিশুদের ক্যান্সার আক্রমণের হার পর্যালোচনা করতে গিয়ে দেখেন যে, তাদের মায়েদের তথ্য থাকলেও পিতার তথ্য সেভাবে নেই। তবে যেটুকু তথ্য পাওয়া গেছে, তাতেই দেখা গেছে হিস্প্যানিক মায়েদের সন্তানদের মস্তিষ্কের ও কিডনির ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার কম।
গবেষকরা মনে করছেন, শিশুদের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার এ হারের পার্থক্যের কারণ হতে পারে তাদের জীবনযাত্রায় পার্থক্য।
এর আগের গবেষণাতে দেখা গিয়েছিল হিস্প্যানিক মায়েদের মধ্যে যারা বাইরে থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছে তাদের মাঝে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারীদের তুলনায় গর্ভধারণ সহজ হয়। যেমন মেক্সিকোতে সাধারণত নারীদের গর্ভধারণের সময় আত্মীয়-স্বজন ও অন্যদের সহায়তার পরিমাণ বেশি হয়। এতে মায়ের মানসিক চাপ কম হয় এবং গর্ভধারণের জটিলতা কমে যায়।
এ বিষয়ে গবেষক জুলিয়া ই. হেক বলেন, ‘বিদেশি নারীদের মাঝে ধূমপানের হার খুবই কম। এছাড়া তাদের মদ্যপান ও ড্রাগ গ্রহণের হারও কম।’
তবে গবেষকরা বলছেন, হিস্প্যানিক মায়েদের সন্তানদের ক্যান্সারের হার কতখানি কম, তা নির্ণয়ের জন্য আরও গবেষণা করা প্রয়োজন। বিস্তারিত গবেষণায় ঠিক কোন কারণে তাদের ক্যান্সারের হার কম হয় তাও জানা সম্ভব। গবেষণাটির ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে জেএএমএ পেডিয়াট্রিকস জার্নালে।