November 22, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

সুন্দর দাঁত ছিল আত্মারও জানালা!

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
০ হাজার বছর আগে আমাদের আধুনিক প্রজাতির মানুষের পূর্বসুরীরা (হোমো স্যাপিয়েন্স নামেই আদি আধুনিক প্রজাতি) আফ্রিকা ছেড়ে আরব উপদ্বীপ হয়ে ইউরেশিয়ান ভূখণ্ডে এবং পর্যায়ক্রমে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।
তাদের সঙ্গে দেখা হয় সমসাময়িক মানব প্রজাতি হোমো নিয়ান্ডারথ্যালেনসিস বা নিয়ান্ডারথাল, হোমো ইরেক্টাস,  হোমো সোলোয়েনসিস, হোমো ফ্লোরেসিয়েনসিস ও হোমো ডেনিসোভানদের। আফ্রিকায়ও রয়ে যাওয়ারা পরবর্তীতে মুখোমুখি হয় হোমো রুডোলফেনসিস ও হোমো ইরগেস্টারদের।
বিলুপ্ত এসব প্রজাতিকে ছাপিয়ে আমাদের প্রজাতি সারা পৃথিবীর কর্তৃত্ব নেয় মোটামুটিভাবে ১০ থেকে ১২ হাজার বছর আগে। তবে স্যাপিয়েন্সদের সঙ্গে মূল লড়াই হয় ৩০ হাজার বছর আগে বিদায় নেওয়া নিয়ান্ডারথালদের, যারা কথা বলা ছাড়া সব ধরনের বৈশিষ্ট্যে প্রায় হুবহু আমাদের মতোই ছিল। এমনকি বিবর্তন, শঙ্করায়ন ও মিলন-মিশ্রণও তাদের সঙ্গেই বেশি ঘটেছে আমাদের।
সমবৈশিষ্ট্যপূর্ণ হয়েও, এমনকি আমাদের আগে পৃথিবীতে এসেও নিয়ান্ডারথালরা কেন হেরে গেল, হারিয়ে গেল- এ নিয়ে গবেষণা এখনও চলছে। পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে তাদের সঙ্গে স্যাপিয়েন্সের মিল-অমিলের নতুন নতুন তথ্য-প্রমাণ। বেশ কিছু বিষয়ে এই সহোদর প্রজাতি আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল, তা জেনেও অবাক হচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
যেমন, আশ্চর্যজনকভাবে নিয়ান্ডারথালদের আমাদের চেয়ে ভালো দাঁত ছিল, যা তাদের চিন্তার গতি-প্রকৃতি প্রকাশ করতো! এমনকি দাঁত সুস্থ-সুন্দর ও নিরোগ রাখতে কিছু নিজস্ব উদ্ভাবিত পদ্ধতি-চিকিৎসা জানতো বলেও জানাচ্ছেন গবেষকরা।
উত্তর স্পেনের এল সিডরন গুহায় পাওয়া ১২/১৩ জন নিয়ান্ডারথালের প্রাগৈতিহাসিক দাঁত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জানান, একটি মুখে কোনো পচা দাঁতই ছিল না। তাই বোঝা যাচ্ছে যে, দাঁত পরিষ্কার রাখা ও ক্ষয় মোকাবেলায় টুথপিকও ব্যবহার করতো তারা।
একটি সাম্প্রতিক গবেষণা আরও ইঙ্গিত দেয় যে, নিয়ান্ডারথালদের সমতুল্য খাদ্যাভ্যাস থাকলেও আমাদের চেয়ে কম দাঁত হারাতো তারা। স্পেনের বার্সেলোনার ইনডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক কারেন হার্ডি বলেন, ‘মাঝে মাঝে মাংসাশী হলেও মূলত তৃণভোজী নিয়ান্ডারথালদের মাঝে স্বচিকিৎসার বিষয়টিও ছিল। তারা ঔষধি উদ্ভিদ দিয়ে বা খেয়ে দাঁত সুন্দর রাখতো’।
তিনি জানান, ঘাস, বাদাম ও শিম ছিল নিয়ান্ডারথালদের মূল ভোজ্য। আর তাদের দাঁতের ওপরের রাসায়নিক প্রলেপের দিকে তাকিয়ে দেখা গেছে, তারা শুষ্ক ফুল ইয়ারো ব্যবহার করেও দাঁতের চিকিৎসা করতো, ব্যথা কমাতো। প্রাগৈতিহাসিক এ ঔষধি পুষ্টি মানসম্মত ছাড়াও এমনকি পেট খারাপ দূর করতো, রক্তপ্রবাহ ঠিক রাখতো এবং সীমাবদ্ধ ঘাম উৎপাদনে সহায়তা করতো।‘সেইসঙ্গে তাদের বুদ্ধি ও জ্ঞানভাণ্ডার এটাও ইঙ্গিত দেয় যে, নিয়ান্ডারথালদের দাঁত একে অপরের প্রতি তাদের মনোভাবও প্রকাশ করতো। তাই চোখ নয়, দাঁতই ছিল তাদের আত্মার জানালা’- বলেন কারেন হার্ডি।

Related Posts

Leave a Reply