September 24, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular ব্যবসা ও প্রযুক্তি

তার কাছে বিল গেটসও কিছু নন, তবু ‘শীর্ষ’ তালিকায় নেই তিনি, কেন জানেন ?

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস : 

প্রতিবছর বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের যে তালিকা করে ফোর্বস, সেখানকার বেশ কয়েকটি নাম অনেকের মুখস্ত হয়ে গেছে। যেমন- বিল গেটস বা ওয়ারেন বাফেট। বেশ কয়েকবার ৮৬.০ বিলিয়ন মূল্যের সম্পদ নিয়ে তালিকার শীর্ষে ছিলেন বিল গেটস। আর ৭৫.৬ বিলিয়ন নিয়ে দ্বিতীয়তে অবস্থান করেছেন বাফেট। তাদের পরে আছেন জাকারবার্গ কিংবা জেফ বেজোসসহ অনেকে।

কিন্তু জানলে অবাক হবেন যে, আরো কিছু মাল্টিন্যাশনাল কম্পানি রয়েছে তারা তালিকার শীর্ষে থাকা ধনীদের চেয়েও বেশি অর্থ কামাচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে ভারতের টাটা গ্রুপের কথা বলতেই হয়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, রতন টাটা কিন্তু বিল গেটসের চেয়েও বেশি ধনী। তবুও তার নাম তালিকায় আসে না, কেন?

১৮৮৬ সালে জামসেতজি টাটার হাত ধরে প্রতিষ্ঠা পায় টাটা গ্রুপ। বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে পরিচিতি পায় প্রতিষ্ঠানটি। আজ টাটা চালাচ্ছে ৯৬টি কম্পানি। সেখানে ৩০টি প্রতিষ্ঠান ‘পাবলিকলি লিস্টেড’ হিসেবে অবস্থান করছে। এ তালিকায় আছে টাটা স্টিল, টাটা মটরস, টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস। টাটা পাওয়ারসহ বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান। এগুলো সব মিলিয়ে ১৩০ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা পরিচালনা করছে। ভারতে ‘রেসপন্সেবল বিজনেস’ গ্রুপের প্রতি ৫টির মধ্যে ৪টিই টাটার অধীনে। তবুও টাটার কর্ণধার রতন টাটার নাম শীর্ষ ধনীর তালিকায় নেই।

এর কারণ হলো, টাটা পরিবার এবং কম্পানিগুলোর ৬৫ শতাংশই চ্যারিটিতে দিয়ে দেওয়া হয়। তার বিভিন্ন কম্পানির লভ্যাংশ চ্যারিটিতে যোগ হয়, তার ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে নয়। টাটার ব্যক্তিগত সম্পদের মূল্য কখনও ১ বিলিয়ন ডলারের সীমারেখা ছাড়ায় না।

টাটা গ্রুপের মানবকল্যাণে অনুদান কেবল ভারতেই সীমাবদ্ধ নয়, তার আন্তর্জাতিক সংস্থাতেও যায়। টাটা গ্রুপ হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে ৫০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে। এটাই কোনো আন্তর্জাতিক ডোনারের কাছ থেকে পাওয়া সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্থ। বোস্টনের ক্যাম্পাসে অ্যাকাডেমিক এবং বসবাসের ভবন নির্মাণে ওই অর্থ প্রদান করা হয়েছে।

বাড়িতে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে টাটা বানিয়েছে হোম পিউরিফিকেশন সিস্টেম। এটা নামমাত্র মূল্যে (মাত্র ১০০০ রুপি) বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা হয়। তাদের কনসালটেন্সি সার্ভিসেস লিমিটেড এমন একটি সফটওয়্যার বানিয়েছে যার কোনো নিরক্ষর মানুষকে মাত্র ৪০ ঘণ্টার মধ্যে পড়তে শেখায়।

টাটা গ্রুপ তার কর্মীদের আধুনিক পেনশন সিস্টেম, চিকিৎসা সেবা, মাতৃত্বকালীন ছুটি আর আরো অনেক সুবিধা প্রদান করে।

বিখ্যাত তাজ হোটেলে হামলার ঘটনায় টাটা গ্রুপ সেখানকার কর্মীদের হতাশার মধ্যে ফেলেনি। ওই উত্তপ্ত সময়জুড়ে কর্মীরা নিয়মিতভাবে তাদের বেতন-ভাতা পেয়েছেন।

সমাজের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, টাটার এমনই কিছু প্রতিষ্ঠান হলো- 
১. দ্য এনার্জি অ্যান্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান,
২. দ্য জেআরডি টাটা ইকোটেকনলজি সিন্টার,
৩. ন্যাশনাল সেন্টার ফর পারফর্মিং আর্টস,
৪. টাটা সেন্টার ফর টেকনলজি অ্যান্ড ডিজাইন অ্যাট ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনলজি,
৫. টাটা সেন্টার ফর টেকনলজি অ্যান্ড ডিজাইন অ্যাড আইআইটি বম্বে,
৬. টাটা ক্রিকেট একাডেমি,
৭. টাটা ফুটবল একাডেমি,
৮. টাটা ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনিং সেন্টার,
৯. টাটা মেডিক্যাল সেন্টার,
১০. টাটা মেমোরিয়াল হসপিটাল ইত্যাদি।

সম্প্রতি টাটা ঘোষণা করেছে যে, তারা ভারত থেকে পুরোপুরি মেলেরিয়া হটাতে বেঙ্গালুরুতে গড়ে তুলবে টাটা ইনস্টিউট অব জেনেটিক্স অ্যান্ড সোসাইটি। এতে ব্যয় করা হবে ৭০ মিলিয়ন ডলার।

মানবকল্যাণে টাটার এমন দানবীয় পরিমাণে বিনিয়োগের উদাহরণ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করতে পারেনি। এ কারণেই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সেরা ধনীতে তার নাম আশা করতে পারেন না। রতন টাটার নাম সেই তালিকাতে তাই ওঠে না।

Related Posts

Leave a Reply