বিপদ নাশ করতেই বিপত্তারিণী…
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
হিন্দুধর্ম অনুযায়ী, বিপদ থেকে মুক্তি পেতে মা বিপত্তারিণীর আরাধনা করার রীতি বহু যুগ ধরে প্রচলিত। গৃহের সবার মঙ্গল কামনার্থে হিন্দু বাড়ির মহিলারা এই পুজো নিষ্ঠাভরে করে থাকেন। আষাঢ় মাসে সাধারণত পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে পালন করা হয় বিপত্তারিণী পুজো। এই পুজোর পরে অনেকেই হাতে তেরোটি লাল সুতো দিয়ে দূর্বাঘাস বেঁধে ধাগা ধারণ করেন। এটি পুরুষদের ডান এবং মহিলাদের বাম হাতে ধারণ করাই নিয়ম। হিন্দু শাস্ত্র মতে, মা বিপত্তারিণী দেবী দুর্গার ১০৮টি অবতারের একটি রুপ। হিন্দুরা মূলত বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য এই দেবীর পূজা করেন। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া থেকে দশমী পর্যন্ত এই দেবীর পুজো করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে যেকোনও শনি বা মঙ্গলবারে এই ব্রত পালন করা হয়।
পূজা বিধি
বিপত্তারিণী ব্রত পালনের আগের দিন বা সেই দিন নিরামিষ আহার গ্রহণ করতে হয়। পুজের দিন তেরো রকম ফুল, তেরো রকম ফল, তেরোটি পান ও তেরোটি সুপারি এবং তেরো গাছা লাল সুতোর মধ্যে তেরো গাছা দূর্বাঘাস সহযোগে তেরোটি গিঁট বেঁধে ডুরি তৈরি করতে হয়। এরপর, আম্রপল্লব দিয়ে ঘট স্থাপন করে ব্রাহ্মণ দ্বারা পূজা করতে হয়। বিশ্বাস অনুযায়ী, বিপত্তারিণী ব্রত পালন করলে সকল মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয় এবং সমস্ত বিপদ, বাধা বিঘ্ন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
বিপত্তারিণী ব্রতর কাহিনী
বিপত্তারিণী ব্রতর কাহিনী অনুযায়ী, বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজবংশের এক রানির একজন নিম্নবর্ণের সখী ছিলেন। তিনি ছিলেন জাতে মুচি এবং প্রায়ই গোমাংস খেতেন। রানি জানতে পেরে কৌতূহলী হয়ে তাঁকে গোমাংস দেখাতে বলেন। সেই মহিলা প্রথমে রানির এই প্রস্তাবে রাজি হননি, তবে পরে রানির আদেশ মেনে গোমাংস আনেন। রাজ অন্তঃপুরে গোমাংস প্রবেশ করার খবর পেয়ে রাজা ক্রুদ্ধ হয়ে রানিকে শাস্তি দিতে চান। তখন রানি গোমাংস তাঁর বস্ত্রের নীচে লুকিয়ে রেখে দেবী দুর্গাকে স্মরণ করতে থাকেন। রাজা রানিকে তল্লাশ করে দেখতে পান, রানির বস্ত্রের নীচে গোমাংস নয়, রয়েছে একটি লাল জবা। সেই থেকেই বিপত্তারিণীর পুজো প্রচলিত হয় এবং চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।