November 25, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

রক্ত প্রবাহের শিরা ব্লক করে দেয় সামান্য কম ঘুমও!

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

ভালো ঘুমের প্রচলিত উপকারী দিকগুলো কম-বেশি আমরা সবাই জানি। এবার ভালো ঘুমের আরেকটি উপকারী দিক উঠে এলো এক গবেষণায়। ওই গবেষণা বলছে, প্রতি রাতে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমালে শুধু আপনার হার্টই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বরং সারা শরীরে সমস্যা দেখা দেবে। তার মানে প্রতিদিন ভালো ঘুম হলে এ ধরনের সমস্যায় পড়তে হবে না।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, রাতে কম ঘুমালে হার্টে যেমন প্লেক হয়, তেমনি এটা সারা শরীরেই হতে পারে। প্লেক হলো ফ্যাট, কোলেস্টেরল, ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি যা ধমনি বা শিরার রক্তপ্রবাহের পথ সরু বা বন্ধ করে দেয়।আগে যত গবেষণা হয়েছে সেগুলোতে দেখানো হয়, কম ঘুমালে হার্ট ব্লক হয়ে যায়। কিন্তু এই প্রথম কোনও গবেষণায় দেখানো হলো, ঘুমের কারণে পুরো শরীরের শিরা বা ধমনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস ইউনিভার্সিটির জিন মেয়ার ইউএসডিএ হিউম্যান নিউট্রিশন রিসার্চ সেন্টারের নিউট্রিশন অ্যান্ড জেনোমিক্সের পরিচালক জোসে ওরদোভাসও এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছেন। এই গবেষণা প্রতিবেদনের অন্যতম একজন লেখক তিনি।

সম্প্রতি আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির জার্নালে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।

যেভাবে গবেষণাটি করা হয়

সব মিলিয়ে ৪ হাজার স্প্যানিশ নারী ও পুরুষ নিয়ে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয় যাদের গড় বয়স ছিল ৪৬। এদের কারোরই আগে কোনও হার্টের অসুখ ছিল না। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের একটি করে ডিভাইস দেয়া হয়। মূলত ওই ডিভাইসের মাধ্যমেই তাদের ঘুম সম্পর্কিত সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করে গবেষকরা। অংশগ্রহণকারীদের রাতে কতবার ঘুম ভেঙেছে কিংবা কতবার নড়াচড়া করেছে তার ভিত্তিতেই ভালো ঘুমের হিসাব করা হয়েছে।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের চারটি গ্রুপে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে একটি গ্রুপ প্রথম গ্রুপ- যারা ৬ ঘণ্টার কম ঘুমিয়েছে, দ্বিতীয় গ্রুপ- যারা ৬-৭ ঘণ্টা ঘুমিয়েছে, তৃতীয় গ্রুপ- যারা ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমিয়েছে এবং চতুর্থ গ্রুপ- যারা ৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ঘুমিয়েছে। এদের প্রত্যেকের গবেষণার শুরুতে একবার পরীক্ষা করা হয় এবং গবেষণা শেষে আরেকবার করা হয়।

দুইবারের এই পরীক্ষার ফলাফল বিশ্লেষণসহ অন্যান্য তথ্য পর্যালোচনা করে গবেষকরা দেখতে পান, যারা প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান তাদের চেয়ে ৬ ঘণ্টারও কম সময় ঘুমানো ব্যক্তিদের হৃদরোগসহ পুরো শরীরের শিরাগুলো সরু হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি ২৭ শতাংশ বেশি। এছাড়া যাদের ভালো ঘুম হয় তাদের চেয়ে যাদের বার বার ঘুম ভাঙে তাদের এ ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৩৪ শতাংশ বেশি।

অপূর্ণ ঘুমের প্রভাব

বার বার ঘুম ভেঙে গেলে এটা আমাদের শরীরের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অপূর্ণ ঘুমের কারণে উচ্চরক্তচাপ, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়া, ওজন বেড়ে যাওয়া, দ্রুত মেজাজ বদলে যাওয়া, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি, স্ট্রোক এবং কয়েক ধরনের ক্যানসার হতে পারে।

কীভাবে ভালো ঘুম হবে?

আপনি কীভাবে ভালো ঘুমাবেন, সেটা সম্পূর্ণ নিজের ওপর নির্ভর করে। ভালো ঘুমের অভ্যাসটি নিজের মস্তিষ্কে গেঁথে ফেলতে হবে। তবেই নিয়মিত ভালো ঘুম সম্ভব।

প্রথমেই ভালো ঘুমের পরিবেশ তৈরি করুন। এরপর প্রতিদিন ঘুমানোর একটি রুটিন তৈরি করে ফেলতে হবে। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে গেলে আপনার মস্তিষ্ক বুঝে যাবে ঠিক কোন সময়টায় আপনি ঘুমান। এতে ওই নির্দিষ্ট সময়েই আপনার ঘুম আসবে।

এছাড়া শোয়ার ঘরের তাপমাত্রা একটু কম রাখা, লাইট বা আলোর পরিমাণ কমিয়ে দেয়া, ঘুমানোর আগে গোসল করে নেওয়া এবং একটু নরম সুরের গান শোনা হয়তো আপনার ভালো ঘুম এনে দিতে পারে। এজন্য এগুলো চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, কখনও ব্যায়াম করতে ভুলবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, দিনে ১০ মিনিটের মতো হাঁটা, সাইকেল চালানো কিংবা অন্য ধরনের ব্যায়ামের কারণে আপনার ঘুমের মান অনেক বেশি ভালো হতে পারে।

Related Posts

Leave a Reply