শিশুর কান্নাকে কখনোই অবহেলা নয় – KolkataTimes
May 20, 2025     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

শিশুর কান্নাকে কখনোই অবহেলা নয়

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

শিশুরা প্রয়োজনের কথা বলতে পারে না। বাবা-মায়ের সঙ্গে তাদের প্রয়োজনের ও যোগাযোগের মাধ্যম হলো কান্না। আর তাই শিশুর কান্নাকে কখনোই অবহেলা করা যাবে না। শিশু কেন কাঁদছে তার কারণ নির্ণয় করুন।

শিশুরা কান্নাকাটি করবেই, কান্না করলে ভয় পাবেন না অথবা বিরক্ত হবেন না। কেননা শিশুর কান্না উপেক্ষা করলে তা মারাত্মক সমস্যা তৈরি করতে পারে। এটি পরবর্তী জীবনে তাদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় বিরুপ প্রভাব তৈরি করতে পারে।

শিশুর কান্নার ফলে শুধু বাবা-মা নয়, তার ওপরেও মানসিক চাপ পড়ে। খুব ছোটবেলায় বা জন্মের কয়েক মাসের মধ্যে এ ধরনের মানসিক চাপ শিশুর মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারকে পরিবর্তিত করতে পারে। এতে মস্তিষ্কের গঠনগত ও কার্যগত পরিবর্তন হয়ে যায়। বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে যাদের বিষণ্ণতা রয়েছে তাদের মাঝে মস্তিষ্কের এ ধরনের পরিস্থিতি দেখা যায়।

শিশু কান্নার মাধ্যমে তার খিদে, ভয়, অস্বস্তি অথবা যে কোন  প্রয়োজন প্রকাশ করে। জন্মের পর প্রথম তিন মাস পর্যন্ত একটি শিশু কোনো কারণ ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে  ২৪ ঘন্টায় ৩ থেকে ৪ বার কাঁদে। এটি স্বাভাবিক। তবে তার বেশি যদি কান্নাকাটি করে তাহলে শিশুর অ্যাড্রিনালাইন সিস্টেমে বাড়তি চাপ পড়ে। এতে বড় হয়ে শিশু বড় হয়ে আগ্রাসী মনোভাবাপন্ন, অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ এবং ধ্বংসাত্মক ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হতে পারে।

সব সময় কান্নার সঠিক কারণ বোঝা সম্ভব নয়। কিন্তু আপনার শিশ যদি নির্ধারিত মাত্রার বেশি কান্নাকাটি করে তবে কিছু সাধারণ বিষয়ের উপর লক্ষ রাখুন। শিশুর অতিরিক্ত কান্নার ফলে তাদের মানসিক চাপের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। এমনকি কর্টিসল হরমোনের মাত্রাও বেড়ে যেতে পারে। এতে মস্তিষ্কের পরিবর্তনের ফলে শিশুর বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। এতে মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুর কান্না যদি উপেক্ষা করা হয় তাহলে তা তার বুদ্ধিবৃত্তিক ও সামাজিক দক্ষতা গড়ে ওঠায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। এতে শিশু তার আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতেও ব্যর্থ হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর কান্নাকে যদি উপেক্ষা করা হয় তাহলে তা শিশুকে এ বার্তা জানায় যে, দুঃখ ও রাগ গ্রহণযোগ্য নয়। এতে শিশু হয় তার আবেগ দমন করে অন্যথায় আবেগের আতিশয্যে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশু যদি কাঁদতেই থাকে এবং কোনোভাবে কান্না থামানো না যায় তবে প্রথমে শরীরে কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন বা জ্বর আছে কিনা তা দেখে নিন। হাত পা নড়াচড়া করে দেখুন, যদি শিশু আরো বেশি কাঁদে তবে বুঝতে হবে শরীরে ব্যাথা হচ্ছে। শিশুর পেটে হালকা চাপ দিয়ে দেখে নিন, বাচ্চা পেটের ব্যাথায় কাঁদছে কিনা। শিশুর বিছানার আশে পাশে কোনো পোকামাকড়, পিঁপড়া আছে কিনা তা ভালভাবে দেখে নিন।

শিশুর কান্না থামানোর কিছু উপায়ের কথা বাবা-মা মাত্রই জানেন। এর মধ্যে রয়েছে মায়ের দুধ প্রদান, শিশু জন্মের আগে মায়ের পেট থেকে যেসব শব্দ শুনেছিল সেই পরিবেশে থাকা, শান্ত-শিষ্ট পরিবেশে থাকা ও নিয়মিত ঘুমের রুটিন তৈরি। এছাড়া অভিভাবকের সঙ্গে শারীরিক স্পর্শ শিশুকে অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসরণে সহায়তা করবে। শিশু যদি অস্বাভাবিকভাবে কাঁদতে থাকে এবং তা না থামায় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব নিকটবর্তী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।

Related Posts

Leave a Reply