চেখে দেখবেন নাকি ১৪ হাজার বছর আগের রুটির টুকরো !
কলকাতা টাইমস :
এতদিন ধারণা ছিল যে, মানুষ যখন থেকে কৃষিকাজ শুরু করে, মোটামুটি তখন থেকেই রুটি বানানে শেখে তারা। সেইও হিসেবে আনুমানিক সাড়ে ১০ হাজার বছর ধরে মানুষ রুটি খেয়ে আসছে।
সম্প্রতি, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডানের একটি পাথরের বাড়িতে পাওয়া গেছে পাউরুটির পুড়ে যাওয়া টুকরো। বাড়িটির রান্নাঘরের উনানের চারপাশের পুড়ে যাওয়া কিছু গাছের রেডিও-কার্বন পরীক্ষা করে দেখা গেছে, রুটির টুকরোগুলো প্রায় ১৪ হাজার চারশ বছরের পুরনো।
ফলে, গবেষণারত বিজ্ঞানিরা মনে করছেন, কৃষিকাজ শুরু হওয়ার প্রায় চার হাজার বছর আগে থেকেই মানুষ রুটি জাতীয় খাবার খেত।
ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের সব থেকে প্রাচীন এই রুটি তৈরির তথ্য প্রকাশিত হয়েছে মার্কিন সায়েন্স জার্নাল ‘প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’-এ।
কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক আমাইয়া আরাঞ্জ ওতাগুই জানান, রুটি-পাউরুটি কোনো থিতু হওয়া জনগোষ্ঠীর খাবার ছিল না। বরং এই খাবার খেত প্যালিওলিথিক যুগের শিকারিরা। যারা শিকারের পাশাপাশি, ফল-মূল জমিয়ে রাখত দৈনন্দিন জীবন যাপনের জন্য। এদের পরিচয় ‘হান্টার গ্যাদারার’ হিসেবেই।
আটা, জল, আর তাপ (ড্রাই হিট) দিয়ে সহজেই তৈরি করা যায় রুটি বা পাউরুটি। এতে যথেষ্ট পুষ্টিও পায় মানবদেহ।
ইসরায়েলের বার-ইলান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ইহুদ ওয়েইস জানান, প্যালিওলিথিক যুগের যে মানব সম্প্রদায় রুটি বানানোর ওই পাথরের জায়গাটি তৈরি করেছিল, তারা ছিল ‘নাতুফিয়ান’। প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে নিজেদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য তাদের কাছে রুটি ছিল সহজলভ্য খাবার।
তবে, গবেষকরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত নন যে, এই জাতীয় রুটি বা পাউরুটি প্রতিদিনের খাবার ছিল কি না। অনেক গবেষক আবার এমনও মনে করছেন যে, নাতুফিয়ানরা আমোদ-উল্লাসের সময় এমন রুটি খেত। তাও আবার ‘বিয়ার’ জাতীয় পানীয়ের সঙ্গে।