ধনী হলেও অরে সুযোগ নেই এই দেশে থাকার ইনভেস্টর ভিসা স্থগিত করল ব্রিটেন
কলকাতা টাইমস :
ধনীদের ব্রিটেনে আবাস গড়ার সহজ পথ হিসেবে বিবেচিত ইনভেস্টর ভিসা স্থগিত করল ব্রিটিশ সরকার। অর্থ পাচার এবং আর্থিক অপরাধ প্রতিরোধের অংশ হিসেবে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের অভিবাসন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যারোলাইন নোকস বলেছেন, শুক্রবার স্থানীয় সময় মধ্যরাত থেকে স্থগিতাদেশ কার্যকর হবে। তিনি জানান, এ ভিসা আবেদনকারীদের আর্থিক বিষয়াদি যাচাইয়ে একটি নিরীক্ষা প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বহির্ভূত দেশ থেকে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ আকর্ষণে স্থায়ী বসবাস সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০০৮ সালে বিনিয়োগ ভিসা চালু করে ব্রিটেন । ‘টিয়ার ১ ইনভেস্টর ভিসা’ নামে এটি পরিচিত।
নিয়ম অনুযায়ী ২০ লাখ পাউন্ড বিনিয়োগ করে ব্রিটেনে বসবাসের অনুমতি পাওয়া যেত। প্রথমে তিন বছর চার মাসের ভিসা দেওয়া হতো। তারপর আরও দুই বছরের জন্য মেয়াদ বৃদ্ধির সুবিধা ছিল এতে। আর ৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর পাওয়া যেত স্থায়ী বসবাসের সুযোগ।
অতি ধনীদের জন্য বাড়তি সুবিধা হিসেবে ২০১১ সালে সরকার নতুন ঘোষণা করা হয় । তখন এক কোটি পাউন্ড বিনিয়োগ করলে মাত্র দুই বছর পর স্থায়ী বসবাসের সুযোগ ঘোষণা দেওয়া হয়।২০১৪ সালে এই ভিসা আবেদনকারীর সংখ্যা সর্বোচ্চে পৌঁছে। ওই বছর মোট ১ হাজার ১৭২ জনকে বিনিয়োগ ভিসা প্রদান করা হয়। আর গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৩৫০ জন। এসব আবেদনকারীদের শীর্ষে আছে চীন ও রাশিয়ার নাগরিকেরা।
গত বছর ব্রিটেনের মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজরি কমিটি জানায়, বিনিয়োগ ভিসা ব্রিটেনের অর্থনীতির জন্য খুব একটা উপকারে আসছে না। বেশিরভাগ আবেদনকারী সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ করছেন। এটি প্রকৃতপক্ষে কোনো বিনিয়োগ নয়; বরং সরকারকে ঋণ দেওয়ার শামিল।
এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের অসাধু ব্যক্তিরা কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের হাতিয়ার হিসেবে এ সুযোগ ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যুক্তরাজ্যসহ এর সদস্যভুক্ত ২৮টি দেশের কথিত ‘সিটিজেনশিপ অন সেইল’ প্রকল্প নিয়ে তদন্ত (রিভিউ) শুরু করেছে। ইইউভুক্ত বিভিন্ন দেশে অর্থের বিনিময়ে নাগরিকত্ব দেওয়ার সুবিধা চালু রয়েছে।
যেমন দ্বীপরাষ্ট্র মাল্টাতে ৬ লাখ ৫০ হাজার ইউরো সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার পাশাপাশি আরও ৮ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করে দেশটির নাগরিকত্ব পাওয়া যায়।