তীব্র গতিতে কামড় বসাতে ছুটছে ‘বুলবুল’
কলকাতা টাইমস :
এমনিতে বুলবুল বেশ নিরীহ পাখি রূপেই খ্যাত। বুলবুল কারো কোন ক্ষতি করেছে বলে শোনাও যায়না। কিন্তু এই বুলবুল মোটেই শান্ত নয়। বরঞ্চ তিব্র গতিতে ধেয়ে আসছে। এর কামড়ে তছনছ হয়ে যেতে পারে পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের সুন্দরবনের একাধিক অঞ্চল।আসলে নাম বুল্বুল হলেও ঘূর্ণিঝড়। শনিবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে বলে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে। কলকাতা শহরজুড়ে শনিবার ভোররাত থেকেই বুলবুলের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয়েছে।। আজ শনিবার ভোর থেকেই ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি বিচ্ছিন্নভাবে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে।
আবহাওয়া দপ্তর থেকে সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, গত ৬ ঘন্টায় ১৭কিমি প্রতি ঘন্টার গতিবেগে আরও উত্তরের দিকে এগিয়েছে বুলবুল। আকার নিয়েছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।
এদিকে, দুর্যোগের মোকাবিলায় আগেই থেকেই তৈরি প্রশাসন। চালু হয়েছে কন্ট্রোল রুম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। রাত পর্যন্ত খবর, অতি গভীর ঘূর্ণিঝড় রয়েছে সাগর থেকে আর মাত্র ২৭০ কিলোমিটার দূরে। তার নিজের গতি বেড়ে যাওয়ায় কিছুটা আগেই উপকূলে চলে আসছে। শনিবার সকালের দিকে একটু শক্তি বাড়ালেও স্থলভাগের কাছে এসে একটু দুর্বল হবে। তাতেও তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বুলবুল আছড়ে পড়বে সুন্দরবনে। সুন্দরবনে বাড়তি নজর থাকলেও সতর্কতা বেড়েছে দিঘা থেকে কলকাতা, সর্বত্র।
শনিবার মধ্যরাতেই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের সুন্দরবনে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড়। একদিকে সাগর দ্বীপ, অন্যদিকে বাংলাদেশের খেপুপাড়া। এর মধ্যে দিয়েই বঙ্গোপসাগর থেকে স্থলভাগে ঢুকবে তীব্র ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। দুর্যোগ মোকাবিলায় শুক্রবার থেকেই তুমুল তত্পরতা সাগরদ্বীপ, কাকদ্বীপ, নামখানায়। সতর্ক করা হয়েছে উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের। চলছে মাইকিং। মত্স্যজীবীদের দ্রুত ঘরে ফেরানো হচ্ছে। সমুদ্রে যাওয়ার উপর জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। বহু মানুষকে ইতোমধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা দুই ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, এমনকি কলকাতাতেও। জোয়ারের জলের চেয়ে ১-২ মিটার বেশি উঁচুতে পৌঁছতে পারে অশান্ত সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে আয়লার ভয়াবহতা বাড়িয়ে তুলেছিল ভরা কোটাল। এবার কোটাল গতি পাওয়ার সময়ই ঘূর্ণিঝড়। কয়েকদিন পরই রাসপূর্ণিমা। শনিবার দ্বাদশী, রাত আটটা নাগাদ ভরপুর জোয়ারও থাকবে সুন্দরবনের নদীতে।