ধারে কাছেও নেই বঙ্গশিক্ষা
কলকাতা টাইমস :
কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউশন থেকে শুরু করে আইআইটি, কোনও ক্ষেত্রেই বাংলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির অবস্থান খুব একটা উজ্জ্বল নয় ভারত সরকারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন্যাল র্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক ২০২৩ এর তালিকায়। বিগত কয়েক বছর প্রথম দশে থাকা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবার ছিটকে গিয়েছে তালিকা থেকে। বাংলার মুখ রক্ষা করেছে শুধু যাদবপুর। বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, দুই ক্ষেত্রেই এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাল র্যাঙ্ক করেছে। প্রথম দশে চতুর্থ স্থানে আছে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স। রাজনৈতিক বিবাদে বারে বারে খবরের শিরোনাম হওয়া জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর প্রথম দশে থাকে। এবার তারা দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। বাংলার কোনও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েরও স্থান হয়নি প্রথম দশে। মাত্র বছর কয়েক আগে যাত্রা শুরু করা কোয়েম্বাটুরের অমৃতা বিশ্ববিদ্যাপীঠম এবার সপ্তম স্থান অধিকার করেছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ২০২১-এ এনআইআরএফ র্যাঙ্কিংয়ে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছিল। পরের বছরই নেমে গিয়েছিল অষ্টম স্থানে। এ বছর প্রথম দশেই থাকতে পারল না।
কলেজের র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম দশে নেই বাংলার কোনও সরকারি কলেজ। রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করেছে সেন্ট জেভিয়ার্স এবং রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ শতবার্ষিকী কলেজ। দুটিই বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সেন্ট জেভিয়ার্স আছে পঞ্চম স্থানে। গতবার এই কলেজ ছিল অষ্টম স্থানে। তিন ধাপ এগিয়ে যাওয়া বড় সাফল্য সন্দেহ নেই। অন্যদিকে, এবার অষ্টম স্থান দখল করে প্রথম দশে ঢুকে পড়েছে রামকৃষ্ণ মিশনের কলেজটি। দেশের মধ্যে সেরা কলেজ হয়েছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালের অধীনস্ত মিরিন্ডা হাউস কলেজ। দ্বিতীয় স্থানও দখল করেছে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত হিন্দু কলেজ। চেন্নাইয়ের প্রেসিডেন্সি কলেজ দখল করেছে তৃতীয় স্থান।
আইআইটিগুলির মধ্যে খড়্গপুর আছে সপ্তম স্থানে। প্রথম স্থান দখল করেছে মাদ্রাজ আইআইটি। আইআইটির সংখ্যার নিরিখে প্রথম দশে সপ্তম স্থানকে খুব একটা উজ্জ্বল অবস্থান বলে বিবেচনা করা হয় না।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দশে না থাকা শিক্ষা মহলের কাছে বড় ধাক্কা। দীর্ঘ খরা কাটিয়ে বিগত কয়েক বছর দেশের প্রাচীন এই বিশ্ববিদ্যালয় রীতিমতো টক্কর দিয়েছে বাকিদের। থেকেছে প্রথম দশে। এবার সেই র্যাঙ্কিংয়ে স্থান হয়নি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের।
অনেকেই মনে করছেন বিগত এক দেড় বছরের অচলাবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই পরিণতির কারণ হতে পারে। দীর্ঘ সময় উপাচার্য না থাকার ফলে গবেষণা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাডেমিক কাজ থমকে গিয়েছে। প্রথমে আদালতের রায়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দোপাধ্যায়কে সরে যেতে হয়। পরে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়েই উপাচার্যদের নিয়োগ বাতিল করে আদালত। তারপর শুরু হয় শূন্য পদ পূরণ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাত, যা এখনও চলছে।
মেডিক্যাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলার স্থান কখনও আশাপ্রদ ছিল না। এবারও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। প্রথম দশে নেই রাজ্যের সরকারি-বেসরকারি কোনও মেডিক্যাল কলেজ কিংবা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।