ভয়ে জমে যাবেন সিসিলির ভূতুড়ে ক্যাটাকম্ব দেখে

কলকাতা টাইমস :
ক্যাটাকম্বটি মূল শহরের মাটির নিচে একটি টানেল আকারে গড়ে তোলা। অসংখ্য মানবকঙ্কাল দিয়ে এটি গড়ে তোলা হয়েছে। শোনা যায়, মৃতদের আত্মা নাকি এই টানেলে প্রায়ই দৃশ্যমান হয়।
১৯২০ সালের আগে প্রায় তিন শ বছর সিসিলিতে যত অভিজাত মারা যেত তাদের খুব সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে কবর না দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা হতো শব সংরক্ষণাগারে এক ক্যাটাকম্ব বলে। দেয়ালের শেলফে থরে থরে সাজানো থাকে এই সব মৃতদেহ।
কালের ধাক্কায় যদিও এর কোনো লাশের গায়ে মাংস নেই, অনেকের হয়তো গায়ের পোশাকও ধুলো হয়ে গেছে। কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ বসে, বাচ্চারা খেলা করছে। বিভিন্ন ভঙ্গিতে আছে মৃতরা। সিসিলির এই ক্যাটাকম্বে প্রথম সংরক্ষিত হয় ফাদার সিলভেস্ত্রো দ্য গাভিও ১৫৯৯ সালে।
একই সময় সংরক্ষিত হয় ৪০ জন সন্ন্যাসীর মৃতদেহ। বলা হয় ওই সময় প্লেগ আক্রান্তদের সেবা দিতে গিয়ে ওই সন্ন্যাসীরাও আক্রান্ত হন প্লেগে আর মারা যান কাছাকাছি সময়। আর এই সময় থেকেই ক্যাটাকম্ব পরিচিত হয় এক পবিত্র ভাব গম্ভীর্যপূর্ণ এলাকা হিসাবে। তৎকালীন ধনীরাও লালায়িত হয়ে ওঠেন এখানে তাদের মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য। কালক্রমে ক্যাটাকম্ব হয়ে ওঠে বড়লোকদের গোরস্থান।
মৃতদেহগুলো প্রথমে এক বিশেষ সেলারে ভরে রাখা হতো টানা এক বছর। ওই সময়ের মধ্যে লাশ থেকে সব জলীয় বাষ্প ঊড়ে যেত। তারপর রোদে শুকিয়ে মৃতদেহগুলোকে গোসল করানো হতো ভিনেগারে। তারপর সুন্দর করে জামা কাপড় পরিয়ে এই আধুনিক মমিগুলোকে দাঁড় করিয়ে অথবা বসিয়ে দেয়া হতো।
উনিশ শতকে মৃতদেহ সংরক্ষণে এসেছে নতুন পদ্বতি। তখন মৃতদেহগুলোকে গোসল করানো হতো আর্সেনিক বা মিল্ক অভ ম্যাগনেশিয়ায়। যাতে ত্বক আরো সতেজ দেখাত। তবে এসব নিয়ে এখনকার ধর্মযাজকরা আর মুখ খুলতে চায় না।
১৮৮০ সালে এসে মৃতদেহ সংরক্ষণ করা বন্ধ হয়ে যায়। তাই যেসব মৃতদেহ ঠিকমতো সংরক্ষণ করা হয়নি, সেগুলো পচে গলে একাকার। এরপর একমাত্র ব্যতিক্রম রোজেলিয়া লোম্বার্ডো। মাত্র দুই বছর বয়সে ১৯২০ সালে এই ফুটফুটে মেয়েটি মারা যায়। তার উদভ্রান্ত চিকিৎসক বাবা ইঞ্জেকশন দিয়ে রোজেলিয়াকে সংরক্ষণ করেন একটি কাচের কফিনে।
ক্যাটাকম্ব দেহ সংরক্ষণ কিন্তু ভূগর্ভে হতো। ওপরে প্রার্থনাগার। তা ছাড়া সিসিলি ক্যাটাকম্ব এ শুরুর দিকে ৪০০ সন্ন্যসী ছিল থেকে এখন মাত্র ৪০ জন অবশিষ্ট। কালের বিবর্নতায় লাশের জাদুঘর নিজেই লাশ হয়ে যাচ্ছে। শুধু সিসিলিই না পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় এই ক্যাটাকম্ব ছিল।