November 12, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular রোজনামচা

সাবধান : করোনাভাইরাসই শেষ নয়, এক ঝাঁপে রূপ বদলে আসবে আরো  

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

গে থেকেই বলা হচ্ছিল বাদুড় ও সাপের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। তবে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের অভিযোগ, চীনে জীবাণু অস্ত্র তৈরির সময় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।

এই ভাইরাস ফ্লুর চেয়ে অনেক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এরই মধ্যে ১৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে চীনের করোনাভাইরাস। এক-একটা লাফে বহু গুণ শক্তি বাড়িয়ে নব কলেবরে হাজির হচ্ছে। সারস (সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম) এবং মার্স (মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম)- এই দুটোই করোনা ভাইরাস প্রকাশের পরিচিত রূপ। 

মূলত নিঃশ্বাসের কষ্ট দিয়ে শুরু করে ঘাতক হয়ে ওঠা এই ভাইরাসের বর্তমানে কোনো প্রতিষেধক নেই। ১৯ জন আক্রান্তের দেহ থেকে ভাইরাস পরীক্ষা করে ওয়াশিংটনের বিজ্ঞানী ট্রেভর বেডফোর্ড দেখিয়েছেন, নিতান্ত বৈচিত্রহীনতায় ভুগছে ভাইরাসগুলো। সম্ভবত ২০১৯ সালের শেষ দুই মাসেই নবজন্ম। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীদের আঙুল সেই ‘সি ফুডের’ দোকানে।

তবে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেভিড রবার্টসনের মতে, সাপ হয়ে মানুষে প্রবেশ এত দ্রুত হতে পারে না। কিন্তু ভাইরাসকে বুঝে ওঠার সমস্যা তো শতাব্দীর শুরুতেই। জীব বিজ্ঞানের প্রতিটি পরিবর্তনের অদৃশ্য সুতা বিবর্তনের নাটাইয়ে বাঁধা। বুঝতে ঘাড় ঘোরাতেই হবে।

২০১৯ সালে জাপানের উষ্ণপ্রস্রবণ থেকে আবিষ্কার হয়েছে এক অজানা ভাইরাস। পরীক্ষাগারে দেখা গেল, বেচারি প্রোটোজোয়া ভাইরাসের ভয়েই পাথর। নেই কোনো নড়ন-চড়ন। বিজ্ঞানীরা সেই ভাইরাসের নাম দিলেন মেডুসা ভাইরাস। পুরনো ডিএনএ কে ছাঁচ হিসেবে ব্যবহার করে নতুন ডিএনএ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উৎসেচকও রয়েছে এদের দেহে। আমাদের দেহেরও অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এই উৎসেচকটি সম্ভবত তাদেরই উপহার।

তবে ভাইরাস কী? জীবনইবা কী? একদল বিজ্ঞানী মনে করেন, কোষের বিবর্তনে ভাইরাস অপরিহার্য। ভাইরাসের হাত ধরেই কোষে ডিএনএর আগমন। কোষের শুরুতে ডিএনএ দিয়ে স্থিরতা আসার আগে আরএনএ-র ওপর নির্ভরশীল ছিল। 

অষ্টাদশ শতাব্দীতে তামাক গাছের পাতায় ভাইরাস আবিষ্কারের সঙ্গেই বিজ্ঞানের নতুন এক শাখার শুরু। একটা সময় পর্যন্ত ধারণা ছিল, সমুদ্র বোধ হয় ভাইরাস মুক্ত। কিন্তু সেটা ভুল।

ভাইরাসের বেঁচেবর্তে থাকাটাই পোষকের কোষকে হাইজ্যাক করে। ভাইরাসের বিবর্তনের অনেক মতবাদ রয়েছে। একদলের মতে, পোষক কোষকে হাইজ্যাক করে এরা নিজেদের প্রয়োজন মতো বদলে ফেলে। কিন্তু সেটা বোধহয় সম্পূর্ণ ব্যাখা নয়। ভাইরাসের ঘাতক হয়ে ওঠার পেছনে তাদের বংশলতিকার জটিল পরিবর্তনটা আবশ্যিক ছিল। 

বেশ কিছু সাংঘাতিক ঝাঁপ, যার ফলে এইচআইভি, বার্ড ফ্লু, ইবোলা জ্বর চূড়ান্ত বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসে। ডেঙ্গুর বানরের দেহ থেকে মরিয়া একটা লাফে আমাদের দেহে মৃত্যুদূত। একটি প্রাণীর দেহ থেকে সম্পর্কহীন নতুন প্রাণীর দেহে ঝাঁপ। ঠিক এই কারণেই ভাইরাসের শুরুটা ঠিক কোথায় বুঝে ফেলা যাবে না। 

প্রাণীকূলের বিবর্তনের ধারা ভাইরাস অনুসরণ করলে তারা এতটা জটিল হয়ে উঠত না। যেমন, আমাদের আর শিম্পাঞ্জির দেহে পাওয়া যাওয়া ‘হেপাটাইসিস বি’ ভাইরাস জিনে বেশ অমিল হলেও শুরুতে একটি ভাইরাসই ছিল। এখন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন বেশভূষা। ২০০৩ সাল থেকে বিশালাকার ভাইরাস সম্পর্কে জানতে শুরু করেন বিজ্ঞানীরা। বেশ বড়সড় জিনোম তাদের রহস্যময় করে তুলেছে। এদের অবস্থান আরো ধূসর, এরা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার মধ্যবর্তী স্থানে।

বিজ্ঞানীদের মতে, বিবর্তনের সূচনাতে এরা হয়তো স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল, সময়ের সঙ্গে স্বাধীন প্রজননের ক্ষমতা হারিয়েছে। বর্তমানে ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলা উষ্ণতা ভাইরাস-সমস্যাকে হাতের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। পার্মাফ্রস্ট গলে যাওয়ার জন্য সুমেরু অঞ্চলে কয়েকশ মিথেন গহ্বর হাঁ করেছে, বেরিয়ে পড়ছে শত শতাব্দী প্রাচীন ভাইরাস। 

শুধু তাই নয়, এখন বনাঞ্চল থেকেও পাওয়া যাচ্ছে বিশালাকার ভাইরাস। জীবনের গঠন কি তবে ত্রিভুজ থেকে চতুর্ভুজ হতে চলেছে? প্রোক্যারিয়োটিক, ইউক্যারিয়োটিক আর আর্কিয়ার সঙ্গে কি ভাইরাসও যোগ দেবে?

Related Posts

Leave a Reply