November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

সাবধান : ট্যাবলেট ভেঙে খান নাকি?

[kodex_post_like_buttons]

ককলকাতা টাইমস :

নেক সময়েই চিকিৎসকরা রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে কোনও ট্যাবলেটের অর্ধেক, এক-চতুর্থাংশ করে খাওয়ার নির্দেশ দেন। এর প্রধান কারণ, ওইসব ট্যাবলেট শুধু কয়েকটি নির্দিষ্ট মাত্রায় (যেমন ২৫ মিলিগ্রাম বা ৫০০ মিলিগ্রাম) বাজারে পাওয়া যায়। 

ট্যাবলেট ভেঙে খাওয়ার আরেকটি কারণ, কমমাত্রার চেয়ে বেশি মাত্রার ট্যাবলেটগুলো তুলনামূলক সাশ্রয়ী। অর্থাৎ ৫০ মিলিগ্রামের কোনও ট্যাবলেটের ১০টির স্ট্রিপের দাম যদি ১০০ টাকা হয়, সেই একই ট্যাবলেটের ১০০ মিলিগ্রাম মাত্রার ১০টির স্ট্রিপের দাম হয় তো দেখা যায় ১৫০ টাকা। এ অবস্থায় ডাক্তার না বললেও অনেক রোগী বা রোগীর অভিভাবক নিজে থেকেই বেশি মাত্রার ওষুধ কিনে তা ভাগ করে খেয়ে অর্থ সাশ্রয়ের চেষ্ট করে থাকেন। এটা দোষণীয় মোটেই নয়, বরং বলা যায়  যৌক্তিক এবং হিসেবি কায়দা।  
কিন্তু ট্যাবলেট দু ভাগ বা তার বেশি ভাগ করে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দেখা দিতে পারে। যে অসুস্থতা থেকে বাঁচার জন্য আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ মতে বা অর্থ সাশ্রয়ের জন্য নির্দিষ্ট কোনও ট্যাবলেট ভাগ করে খাচ্ছেন, সেই ডোজটিই আপনার জন্য বাড়তি বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে সাবধান করে দিয়েছেন বেলজিয়ামের গোঁত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল সাইন্টিস্ট শার্লো  ভেরু ও তার সহকর্মী গবেষকরা।  
বিশেষ করে সেসব ট্যাবলেট গ্রহণের ক্ষেত্রে এই সমস্যা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে যেগুলোর উপাদানে বিষের ব্যবহার হয় প্রতিষেধক হিসেবে। কার্যত এ ধরনের ওষুধে (ট্যাবলেট)  বিষ এবং ঔষধি গুণের মাঝের সীমানাটা থাকে খুবই সূক্ষ্ম। অ্যাডভান্স নার্সিং সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে লন্ডনের ডেইলি এক্সপ্রেস পত্রিকা এ তথ্য জানিয়েছে।  

একটি ট্যাবলেটকে ভাঙার ফলে যা হয় তা হলো এর টুকরাগুলো প্রায় ক্ষেত্রেই পরস্পর সমান ভাগে ভাগ হয় না বা আপনার ইচ্ছানুযায়ী সাইজে বিভক্ত হয় না। গবেষণায় দেখা গেছে, উন্নত বিশ্বে প্রচলিত ট্যাবলেট বিভাজনকারী হস্তচালিত বিভিন্ন যন্ত্রের মাধ্যমে (এর মধ্যে রয়েছে কাঁচি, রান্নঘরের সবজি কাটার ছুরিও) ভাগ করা ট্যাবলেটের শতকরা ৩১ ভাগই সঠিক মাপে বিভক্ত হয় না। দেখা গেছে, ভাঙা ট্যাবলেট খণ্ডগুলোর ওজন একটার থেকে অন্যটা কমপক্ষে ১৫% কম বা ২৫%এরও বেশি হয়ে থাকে।

আর সরাসরি দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি আর তর্জনির সাহায্যে ট্যাবলেট ভাঙার ক্ষেত্রে বলা যায়, দুই অংশের কম-বেশি হওয়ার মাত্রাটা এতে আরও বেশিই হয়।
ট্যাবলেট ভাঙাবিষয়ক গবেষণাটি চালানো হয়েছে যেসব রোগের ওষুধের ক্ষেত্রে তার মধ্যে অন্যতম হলো : পারকিনসন্স, রক্তচাপজনিত হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া, রক্তনালি বা হৃৎপিণ্ডে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া এবং গ্রন্থিবাত ও গেঁটেবাত।
গবেষণায় জড়িত বিশেষজ্ঞদের হিসাবে নার্সিং হোম-কিনিক-হাসপাতালে ব্যাপকহারে রোগীদের ট্যাবলেট ভেঙে খাওয়ানোর বিষয়টিও ছিল। এসব জায়গায় দেখা গেছে ট্যাবলেট ভাগ করে খাওয়ানো সেখানে নৈমিত্তিক একটি বিষয়।

গবেষণাপত্রে বিশেষজ্ঞরা ট্যাবলেট ভেঙে খাওয়ার ফলে রোগীদের বিপদে পড়া থেকে বাঁচাতে ওষুধ কোম্পানিগুলোকে প্রতিটি ট্যাবলেট একাধিক মাত্রায় বাজারে ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এতে করে রোগী এবং চিকিৎসকদের যার যার পছন্দমতো মাত্রায় ওষুধ প্রেসক্রাইব করা এবং খাওয়ায় আর কোনও ঝামেলা থাকবে না। 

Related Posts

Leave a Reply