সাবধান : শিশুর সামান্য জ্বরেই প্যারাসিটামল বা ইবুপ্রোফেন ?
কলকাতা টাইমস :
জ্বর নিয়ে আমেরিকায় নতুন ধরনের ফোবিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। শিশুদের দেহের সামান্য তাপমাত্রা বৃদ্ধিতেই বাবা-মায়েরা অস্থির হয়ে পড়ছেন। এক দল আমেরিকান পেডিয়াট্রিসিয়ান এ সংক্রান্ত পরামর্শ নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। ভয়ের কারণে অভিভাবকরা অনেক ক্ষেত্রেই ওভারডোজ বা ভুল ওষুধ খাইয়ে দিচ্ছেন।
এক গবেষণায় চিকিৎসকরা বলেন, দেহের তাপমাত্রার বৃদ্ধিতেই অর্ধেক বাবা-মা ভুল ওষুধ ভুল পরিমাণে খাইয়ে থাকেন।
আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিকস জানায়, সংক্রমণ প্রতিরোধে যুদ্ধ করে দেহ। এ কারণেও তাপমাত্রা বাড়তে পারে দেহের। এ ক্ষেত্রে কেবল তাপমাত্রা কমাতে ওষুধ প্রয়োগ করা হলে দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়। এমনকি পারিবারিক চিকিৎসকরাও অনেক সময় এসব ওষধু ব্যবহারে উৎসাহ দেন বলে জানানো হয় গবেষণায়। এ ধরনের ওষুধের নাম ‘অ্যান্টিপাইরেটিকস’।
এসব ওষুধের বিকল্প হিসাবে প্যারাসিটামল এবং ইবুপ্রোফেন ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে করে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ন্যূনতম হবে বলে আশা করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল এক্সেলেন্স (নাইস) এক প্রাতিষ্ঠানিক বার্তায় জানায়, শিশুদের আসলেই জ্বর হয়েছে কিনা তা বুঝতে হবে। জ্বরের লক্ষণ ও বৈশিষ্ট্য বুঝেই ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।
যদিও নাইস উল্লেখিত দুই ধরনের ওষুধ নিয়মিত ব্যবহার করতে মানা করেছে। তা ছাড়া বয়সভেদে এসব ওষুধের ব্যবহারমাত্রাও নির্দিষ্ট। কাজেই এসব না বুঝে করলে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। ক্যালপোল এবং ইবুপ্রোফেন সল্যুশন, যেমন নিউরোফেনের মতো ওষুধ একেক বয়সীদের জন্যে একেক মাত্রার হবে।
ব্রিটিশ ন্যাশনাল ফর্মুলারি থেকে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শিশুরা নির্দিষ্ট পরিমাণ প্যারাসিটামলের ৪টি ডোজের বেশি গ্রহণ করবে না। আবার ইবুপ্রোফেন দিনে ৪ বারের বেশি খেতে পারবে না।
আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্স জানায়, এসব ওষুধের মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে এবং তা এড়িয়ে যাওয়া যাবে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাবা-মাকে জ্বর বিষয়ে জানতে হবে। শিশুর দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি মানেই জ্বর নয়। তা ছাড়া জ্বর কোনো অসুখ নয়। সুস্থ-সবল শিশুর জ্বর আসাটা স্বাভাবিক বিষয়। অথচ অধিকাংশ বাবা-মা শিশুর সামান্য জ্বরেই প্যারাসিটামল বা ইবুপ্রোফেন খাইয়ে থাকেন। এগুলো না খাওয়ালেও চলে।
বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনে এর আগেও বলা হয়েছে, প্যারাসিটাল অ্যাজমার কারণ হতে পারে। আবার ইবুপ্রোফেন পাকস্থলীতে আলসার ও রক্তক্ষরণে দায়ী হতে পারে।