নিজের শেষকৃত্যের পরই নতুন বছর শুরু করেন এরা !

থাইল্যান্ডের ব্যাংককের কাছেই বসবাস করেন একেবারেই ব্যতিক্রমী কিছু মানুষ, নববর্ষে যাদের বাড়ির আঙিনায় থাকে না কোনো হইহুল্লোড়। আতশবাজি-পটকার ধুমধাম শব্দও থাকে না এখানে। সুনসান নীরবতার মধ্যে চলে শেষকৃত্যের আয়োজন।
জীবিত মানুষগুলোই নানা রকম উপাচারে সেজে কফিনের ভেতরে শুয়ে পড়েন। আর নিজেদের আত্মার শান্তি কামনা করেন কফিনবন্দি অবস্থায়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী এই মানুষগুলো যুগ যুগ ধরে পালন করে আসছেন ঐতিহ্যবাহী এই রীতি। নতুন বছরকে এভাবেই বরণ করে নেন তারা।
ফিতসনু কিয়েংপ্রাদোউক এই অঞ্চলের বাসিন্দা। তিনি ৬৭ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। এ বছর নিজেই নিজের শেষকৃত্য পালন করেছেন তিনি। তিনি জানান, ‘এটা অনেক প্রাচীন রীতি। আমরা বিশ্বাস করি নতুন বছরে আমাদের নবজন্ম হয়। সদ্যজন্ম নেয়া শিশু যেমন নিষ্পাপ হয়, তেমনই নতুন বছর আসার আগে আমরাও আমাদের পাপমুক্ত করি।’
থাইল্যান্ডের এই মানুষগুলো প্রত্যেক বছর ৩১ ডিসেম্বর এ রীতি পালন করেন। ওই দিন সকাল থেকেই বৌদ্ধমন্দিরগুলোতে মানুষের ঢল নামে। পরপর বেশ কয়েকটি কফিনে প্রথমে শোয়ানো হয় জীবিত ব্যক্তিদের। তাদের হাতে দেয়া হয় বিশেষ ফুল। এরপর তাদের কফিনটিকে ঢেকে দেয়া হয় কাপড় দিয়ে। মন্ত্রপাঠ করেন একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী। কোনো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর মৃত্যু হলে শেষকৃত্যে যে মন্ত্র পাঠ করা হয়, ঠিক সেই মন্ত্র এই রীতির সময়ও পাঠ করেন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী।
পরিবারের সঙ্গে এই রীতিতে যোগ দিতে আসা বুসাবা ওকোং নামের এক নারী জানান, অনেকেই তাদের এই প্রথাকে কুসংস্কার ভাবেন। কিন্তু এই প্রাচীন রীতিতে এখনও বিশ্বাস করেন তারা।